ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বুড়িঘাটে বিদ্যুৎ সেবা বঞ্চিত সহস্র পরিবার 

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২০
বুড়িঘাটে বিদ্যুৎ সেবা বঞ্চিত সহস্র পরিবার  বুড়িঘাট ইউনিয়ন। ছবি: বাংলানিউজ

রাঙামাটি: রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার দুর্গম এবং প্রাচীন উপজেলার নাম ‘বুড়িঘাট ইউনিয়ন’। ৯টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে এই ইউনিয়টি গঠিত হয়েছে।

ইউনিয়নটি এক সময় বাণিজ্যিক এবং সমৃদ্ধশালী এলাকা হিসেবে জেলা ও জেলার বাইরে বেশ পরিচিত  হলেও পার্বত্যাঞ্চলের নানা জটিল সমস্যায় জর্জরিত হয়ে অনুন্নত এলাকা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে দিনদিন।

বর্তমানে এই এলাকার অনেক সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো বিদ্যুৎ সমস্যা। ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার দীর্ঘ বছর ধরে বিদ্যুৎ সেবা বঞ্চিত।

অথচ পার্শ্ববর্তী সড়ক দিয়ে খাগড়াছড়ি জেলার বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা এবং গাফিলতির কারণে এ এলাকার বাসিন্দারা বিদ্যুৎ সেবা পাচ্ছে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বুড়িঘাট ইউনিয়নের মূল বাজারটি অন্ধকারাছন্ন। পাশাপাশি ৪, ৫, ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং প্রাইমারি এবং হাইস্কুল রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের কার্যক্রম চালাতে চরম বেগ পেতে হচ্ছে।

নানিয়ারচর উপজেলার বগাছড়ি পুনর্বাসন কেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বুড়িঘাট ইউনিয়নের ১৮ নম্বর টিলার স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিদ্যুৎ সেবা পাই না দীর্ঘ বছর ধরে। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ সেবা জরুরি বলে যোগ করেন তিনি।

নানিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বুড়িঘাট ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহাব হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দীর্ঘ বছর ধরে বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত। দীর্ঘ বছর ধরে আন্দোলন করেছি। স্থানীয় এমপিকে বারবার অবগত করা হয়েছে এ ব্যাপারে। তিনি আমাদের আশ্বাসও দিয়েছেন।

...তিনি আরও বলেন, এই বছরে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। শুনেছি চলতি বছরে টেন্ডার হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু পরবর্তীতে আর কিছুই হয়নি।

আব্দুল ওয়াহাব হাওলাদার জানান, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিলো ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেওয়া। তাই এখন স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের কাছে জোর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সেবার ব্যবস্থা করে দেওয়া।

নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, এলাকার সন্তান হিসেবে আমি আমার এলাকার উন্নয়ন চাই। ডিজিটাল যুগে আমার এলাকা পিছিয়ে থাকা চলবে না।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, বঞ্চিত এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে এই এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে যাবে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, নানিয়ারচর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ইরাতোষ চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। পুরো এলাকা আমি চিনি না। অফিসিয়াল ডকুমেন্ট দেখতে হবে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ, রাঙামাটি অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রকল্প পরিচালক মোজাম্মেল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বুড়িঘাট ইউনিয়নের ৪, ৫ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দিতে। এজন্য টেন্ডার দিয়েছি। ওয়ার্ক অর্ডার পেলে আশাকরি এই বছরের মধ্যে বঞ্চিত ওইসব এলাকাগুলোতে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।