ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যথাসময়েই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যথাসময়েই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: যথা সময়েই বাস্তবায়ন হবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প।এরই মধ্যে প্রকল্পের ২৭ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৪ সাল নাগাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি (প্রথম ও দ্বিতীয়) ইউনিটের কাজ শেষ হবে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের উপস্থিতিতে রাশান রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘রাশিয়ান নিউক্লিয়ার ফুয়েল সাপ্লাই কোম্পানির (টিভিইল) সঙ্গে ফুয়েল সাপ্লাইয়ের প্রাথমিক চুক্তি করেছে সরকার।

পরে তার নিজ কার্যালয়ে ইয়াফেস ওসমান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।



তিনি জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন অগ্রগতিতে আমরা কিছুটা এগিয়ে রয়েছি। আমরা চাই নির্ধারিত সময়েই যেন এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারি। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। আশাকরি এ প্রকল্পটা নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারবো।

বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন পরমাণু শক্তি কমিশনের সদস্য ইমতিয়াজ কামাল এবং রাশান ফেডারেশনের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রোসাটম ওভারসিজ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকিতা মাজিন।

এ সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব আনোয়ার হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তির বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আমরা রাশান ফেডারেশনের সঙ্গে একটি জেনারেল চুক্তি করেছি। তারপরও এটা একটা বিরাট প্রকল্প, তাই ছোট ছোট অনেক চুক্তিও করতে হয়। এরই অংশ হিসেবেই আজ ফুয়েল তথা ইউরেনিয়াম সরবরাহের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে একটি চুক্তি হলো। ছয় মাস স্টাডির পর চূড়ান্ত চুক্তি হবে।

তিনি বলেন, এটা (রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র) কেবলমাত্র আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এ প্রকল্পের সঙ্গে অর্থমন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, নৌপথ মন্ত্রণালয় এমনকি রেলপথ মন্ত্রণালয়ও আছে। তবে আশা করছি ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট আমরা বুঝে পাবো। এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয়টা পাবো। আমি আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ে মাধ্যেই পাওয়ারপ্লান্ট চালু করতে পারবো।

মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের কাজ ২৬ থেকে ২৭ শতাংশ হয়েছে। দুর্ঘটনা থেকে নিরাপত্তার জন্য ‘কোর ক্যাচার’ বা ‘মেল্ট ট্র্যাপ’ স্থাপন করা হয়েছে। আল্লাহ না করুক, পুরো রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বার্ন হয়ে উপরে গ্যাস বেরিয়ে গেলেও ‘কোর ক্যাচার’ বা ‘মেল্ট ট্র্যাপ’ মাধ্যমে জনগণকে নিরাপত্ত দিতে সক্ষম হবো। আশেপাশের জনবসতি বা পরিবেশেরও কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না। এটা বসানোর সময় রাশান ফেডারেশন বলেছে কোনো কালেই এটা ব্যবহৃত হবে না। তারপরও এদেশের মানুষের স্বার্থে এটা বাসানো হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয়ের বিষয়ে ইয়াফেস ওসমান বলেন, আমরা যে ব্যয় নির্ধারণ করেছি সেটাই থাকবে। যে ব্যয় ধরা হয়েছে সেটা অন্যান্য দেশের তুলনায় কমই রয়েছে। আর এ ফুয়েল নদী পথে আসবে বলেও জানান মন্ত্রী।  

বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য রাশিয়া থেকে যেসব কাঁচামাল আনা হচ্ছে সেগুলো ঠিক আছে কি না- সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমাদের এক্সপার্টরা এগুলো যাচাই-বাচাই করার পরই নিয়ে আসবে। তাছাড়া ভারতের জন্য যে প্রতিষ্ঠান যন্ত্রাংশ বানায় একই প্রতিষ্ঠানই আমাদের জন্যও তৈরি করে। সুতরাং মানের দিক দিয়ে খারাপ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে গত বছরের ৩০ নভেম্বর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুল্লির জন্য কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন প্রথম ইউনিট ২০২২ সালে এবং একই ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সালে চালু হবে। সরকার ২০২৩ সালে প্রথম ও ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট বুঝে নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৯
আরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।