ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

তেলের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপর্যয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
তেলের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপর্যয়

ঢাকা: নৌযান ধর্মঘটের কারণে বিদ্যু‍ৎ উৎপাদনে ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। দ্রুতই ফুরিয়ে যাচ্ছে জ্বালানির মজুদ।

এরই মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ উৎপাদন কমে গেছে। বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিদ্যুতের উৎপাদন।

খোদ বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন বাংলানিউজকে।

প্রতিমন্ত্রী জান‍ান, নৌযান ধর্মঘটের কারণে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদন কমে গেছে। কাল-পরশুর নতুন করে তেল সরবরাহ করা না গেলে রিজার্ভ শেষ হয়ে যাবে। তখন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

এখানেই বিপদের শেষ নয়। তেল বোঝাই করে বসে আছে ৭০টি জাহাজ। তপ্ত রোদের কারণে ভেতরে উত্তপ্ত হচ্ছে ট্যাংকারে থাকা তেল। যে কোনো সময় ভয়াবহ বিপর্যয় শঙ্কা করছেন প্রতিমন্ত্রী।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে প্রায় তিন হাজার চারশো মেগাওয়াট। পিক আওয়ারে (সন্ধ্যায়) প্রায় দুই হাজার আটশো মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

কিন্তু সোমবার (২৫ এপ্রিল) জ্বালানি তেলের ঘাটতির কারণে সামিট গ্রুপের মেঘনাঘাট পাওয়ার প্ল্যান্টে ৩শ মেগাওয়াটের স্থলে উৎপাদিত হয়েছে ২শ মেগাওয়াট, হরিপুর ১১০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্টে উৎপাদন করা হয়েছে ২৬ মেগাওয়াট। এ রকম আরও বেশ কয়েকটি পাওয়ার প্ল্যান্টের উৎপাদন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
 
পিডিবি সূত্র জানিয়েছে, সোমবার প্রায় ৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হয়েছে। মঙ্গলবার এই পরিমাণ বেড়ে হাজারে গিয়ে ঠেকেছে।   রিজার্ভে যা রয়েছে সর্বোচ্চ তিনদিন চলবে। এরমধ্যে ধর্মঘট বন্ধ না হলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উ‍ৎপাদন।
বিদ্যুৎকেন্দ্রে সর্বোচ্চ পনেরো দিনের রিজার্ভ রাখার সক্ষমতা থাকে। যা একটি চলমান প্রক্রিয়া। অনেক পাওয়ার প্ল্যান্টে আগে থেকেই রিজার্ভ অর্ধেকে নেমে এসেছিলো। রোববার তাদের নতুন চালান আসার কথা ছিলো।

বিদ্যুতের উৎপাদন ঘাটতির কারণে রোববার থেকেই লোডশেডিং শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সারা দেশে ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে।

বিদ্যুতের পাশাপাশি প্লেনের জ্বালানি ও অন্য জ্বালানি সরবরাহে সংকট দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় যে কোনো মূল্যে এখনই সুরাহা করার দাবি জানিয়েছেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।

এদিকে মঙ্গলবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে দিনব্যাপী দফায় দফায় বৈঠক করেও মধ্যরাত পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। বৈঠকে শ্রমিক নেতারা দেড়শে শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা দাবি করেছে। সেখানে মালিকপক্ষ সম্মত হয়েছে বিশ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পঁচিশ শতাংশ করতে। কিন্তু এতে নারাজ শ্রমিক নেতারা।

বেতন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে ২০ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশন ও নৌযান শ্রমিক ইউনিয়ন। চারদিনের মাথায় যাত্রীবাহী যান চলাচলের উপর থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও চলমান রয়েছে পণ্যবাহী নৌযান চলাচল ধর্মঘট।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
এসআই/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।