ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

যৌক্তিকতা থাকলে বিদ্যুতের বৃদ্ধি মানতে রাজি!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৪
যৌক্তিকতা থাকলে বিদ্যুতের বৃদ্ধি মানতে রাজি!

ঢাকা: দায়মুক্তি আইন-কে রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করে সরকার। এতে করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেশি-বিদেশি কতিপয় গোষ্ঠীর কর্তৃত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে; যার ফলে দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।


 
দেশি-বিদেশি বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের স্বার্থে দেশের মানুষ কেন এই বোঝা বহন করবে?  বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে লুটপাট বন্ধ ও উৎপাদন খরচ কমাতে যথাযথ নীতি গ্রহণ করতে সরকারের কাছে দাবিও জানিয়েছে কমিটি।
 
শনিবার বিকেলে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
 
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবারও বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ‘বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বাড়লে তো বিদ্যুতের বেশি দাম দিতেই হবে। ’ বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় যদি যুক্তিযুক্ত কারণে বৃদ্ধি পায়, তাহলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আমরা মেনে নিতে রাজি।
 
কিন্তু, সরকারের দুর্নীতি ও ভুল নীতির কারণে যদি বিদ্যুতের দাম বাড়ে, তাহলে কেন জনগণ তার দায় বহন করবে?  আমরা সংবাদপত্রের মাধ্যমে জেনেছি, বিভিন্ন ভাড়াভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎপ্ল্যান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও বিল আদায়, অচল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাবদ বিপুল ব্যয়, অতিরিক্ত তেল ব্যবহার বাবদ ব্যয়ের কারণে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, যার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো সম্পর্ক নেই।
 
এসব ব্যয় হিসাব করলে কতিপয় কোম্পানির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম কখনো কখনো ৯০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। স্বল্পমেয়াদে আনার কথা বললেও সরকার এ সব রেন্টাল ও কুইক-রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
 
স্বল্পমেয়াদে বিদ্যুৎ সংকট সমাধানের জন্য রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট মেরামত না করে ১০ গুণ বেশি দামে বিদ্যুৎ পাওয়ার জন্য রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের ফাঁদে দেশকে ফেলে ইতোমধ্যেই দেশের অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ বোঝা তৈরি করেছে সরকার।
 
এর খেসারত হিসেবে গত মেয়াদে পাঁচবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। তারপরও হাজার হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির বোঝা কমেনি। কুইক রেন্টালের মেয়াদ এখন ২০২০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করার অর্থ হলো এই বোঝা আরো বাড়ানো এবং আবারও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির চাপ সৃষ্টি হওয়া।
 
বিবৃতিতে বলা হয়, আমদানি করা তেলের দামও এখন বৃদ্ধি পায়নি। বস্তুত, প্রধানমন্ত্রী জনস্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কতিপয় বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী ও কমিশনভোগীদের স্বার্থে কথা বলছেন।
 
বিদ্যুৎ সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য জাতীয় কমিটি রেন্টাল পাওয়ারের চুক্তি বাতিল করে রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট চালু, মেরামত ও নবায়ন করা, ‘খনিজসম্পদ রফতানি নিষিদ্ধকরণ আইন’ প্রণয়ন, পিএসসি প্রক্রিয়া বাতিলসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।