ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘শেখ হাসিনা দয়া বর্ষণ করলেই আমরা নেতা’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
‘শেখ হাসিনা দয়া বর্ষণ করলেই আমরা নেতা’

ঢাকা: আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে ঘোষিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। 

তিনি বলেছেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) আমাদের প্রতি দয়া বর্ষণ করলেই আমরা নেতা, আমরা কিছুটা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হই। ’

রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের গত কমিটিতেও তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো- ‘গতকাল আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে আবার প্রমাণ হল, উন্নয়নমাতা শেখ হাসিনাই একক এবং একমাত্র নেতা। তিনি আমাদের প্রতি দয়া বর্ষণ করলেই আমরা নেতা, আমরা কিছুটা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হই। তাঁর অপরিসীম আলোয় আমরা আলোকিত। ’

‘আমাদের নিজস্ব কোন আলোকচ্ছ্বটা নেই। কেবলমাত্র তাঁর আলো বর্ষিত হলে সেই আলো আমাদের শরীর থেকে প্রতিফলিত হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমগ্র নেতাকর্মী এবং দেশের জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা কেবলমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর। আমাদের ওপর নয়। তিনি না চাইলে আমার বর্তমান পদ অব্যাহত থাকতো না। তাঁর এই দানকে আমার যোগ্যতার প্রাপ্তি বলে অহঙ্কারে মাটিতে পা না পড়লে সর্বনাশ হবে আমার, ধ্বংস হবো আমি। সম যোগ্যতা বা কাছাকাছি যোগ্যতার অসংখ্য নেতাকর্মী আছেন এই বিশাল দলে। ’

স্বপন বলেন, তাহলে আমাদের কিসের এতো অহঙ্কার ! কিসের এতো দম্ভ ! চারিদিকে আমাদের ছবি প্রদর্শনের কেন এতো অসুস্থ প্রতিযোগিতা! কেন আমরা অসুস্থ প্রতিযোগিতা করে জনমনে বিরক্তির উদ্রেক করে দল ও সরকারকে বিব্রত করি ?

কেন জাতির পিতার ছবি মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখতে হয়! কেন নেত্রীর ছোট একটি ছবি সংযোজন করে আমাদের ঢাউস সাইজের নানান ভঙ্গির ছবি টাঙ্গাই বা টাঙ্গাতে অনুমোদন দিই, উৎসাহিত করি! কেন কোন জেলা, উপজেলায় বা নিজ আসনে আমাদের ছবির বাহারি প্রদর্শন না করলে আমরা উষ্মা প্রকাশ করি?

‘কেন জাতির পিতা ও মুজিবকন্যার মাইক্রোস্কপিক ছবির সাথে আমাদের ঢাউস সাইজের ছবির নীচে সৌজন্যে একজন সমাজবিরোধী ভুমি দস্যু/ মাদক ব্যবসায়ী/ মাদকসেবী/ চাঁদাবাজ/ ক্ষমতা প্রদর্শনকারী/ হাইব্রিডকে তার ছবি প্রদর্শন করতে অনূমোদন দিই? যাদের ছবি আমাদের ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়, তাতে আমাদের ব্যক্তিগত ইমেজ বৃদ্ধি পায় অথবা দলের কষ্টার্জিত ভাবমূর্তি অম্লান থাকে!’

ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘কেন বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস বা জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতা, মুজিব কন্যা, বীরশ্রেষ্ঠ বা মহান শহীদদের ছবির পরিবর্তে আমাদের ছবির প্রদর্শনকারী ব্যক্তিদের নিরুৎসাহিত করি না? আমরা কি নিজ ছবি প্রদর্শনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বের হতে পারি না? আমরা কি কেবলমাত্র জাতির পিতা এবং বাঙালীর অমূল্য সম্পদ, উন্নয়ন, মানবতা ও কল্যাণের অসীম কারিগর শেখ হাসিনার ছবি প্রদর্শনে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখতে পারি না। ’

‘পিতা, কন্যার অপরিসীম জনপ্রিয়তার পাশে আমাদের ছবি প্রদর্শন কি জনমনে আওয়ামী লীগের ইতিবাচক ইমেজ সৃষ্টি করে, না কি দল ও আমাদের নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি করে? আসুন, সবাই একটু মানুষের মন-মানসিকতা অনুধাবণ করি। দল ও নেত্রীর সম্মান রক্ষা করি। নেত্রীর দেওয়া সম্মান ও ক্ষমতা মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত করে জনতার মানসপটে নিজেদের ছবি আঁকি। সেই ছবি অমর হবে, অম্লান হবে। বিলবোর্ড রাজনীতিবিদকে জনপ্রিয় করে না, মহৎ কর্ম ও জনসম্পৃক্ততা রাজনীতির দীর্ঘজীবন দেয়। ’

আওয়ামী লীগের ৮ টি সাংগঠনিক পদ রয়েছে। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে দলটির ২১তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে ৫ জন সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।

সদ্য গঠিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকরা হলেন- আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন এবং মির্জা আজম।  

এই ৫ জনের মধ্যে এসএম কামাল হোসেন এবং মির্জা আজম নতুন করে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আসেন।

গত কমিটিতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন।

এছাড়া গত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল) এখন পর্যন্ত ঘোষিত কমিটিতে কোনো পদ পাননি।

সাংগঠনিক পদ ছাড়াও সদ্য ঘোষিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটিতে বেশ কিছু পদে রদবদল হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
এমইউএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।