ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন ও তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা ১৫ ডিসেম্বর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০১৬
খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন ও তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা ১৫ ডিসেম্বর ছবি: সুমন শেখ- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য পড়েননি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার আবেদনে আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।

ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য পড়েননি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার আবেদনে আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।

একইদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদকে অসমাপ্ত জেরাও করবেন আসামিপক্ষ।

রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে চলছে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম।  

৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনে গত ০১ ডিসেম্বর লিখিত বক্তব্য পড়তে শুরু করেন খালেদা। বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) অসমাপ্ত বক্তব্য পাঠের দিন ধার্য ছিল। তবে তার আইনজীবীরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে করা আবেদন শুনানির অপেক্ষায় থাকার কথা উল্লেখ করে সময়ের আবেদন জানান। এক সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পুনর্নির্ধারণ করেন আদালত।
 
খালেদা আসার আগে চ্যারিটেবল মামলায় ফের আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান। নিজেদেরকে নির্দোষ বলে দাবি করে সাফাই সাক্ষী দেবেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

জামিনে থাকা ওই দুই আসামি এর আগেও ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছিলেন। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তার ফের জেরা হওয়ায় ফের লিখিত বক্তব্য জমা দেন তারা।  

এরপর অরফানেজ মামলায় হারুন-অর রশিদকে আসামি শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে জেরা করেন রেজাউল করিম সরকার। অসমাপ্ত জেরার দিনও ১৫ ডিসেম্বর ধার্য করেন আদালত।

সকাল দশটা ৪০ মিনিটে গুলশানের বাসা থেকে রওনা হয়ে বেলা পৌনে বারটায় আদালতে পৌঁছান মামলা দু’টির প্রধান আসামি খালেদা জিয়া। আদালতের কার্যক্রম শেষে বাসায় ফেরেন তিনি।  

খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে দলের সিনিয়র নেতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো।

আসামিপক্ষে আব্দুর রেজ্জাক খান, সানাউল্লাহ মিয়া, মোহসীন মিয়া, বোরহান উদ্দিন, নূরুজ্জামান তপন ও রেজাউল করিম সরকার মামলার বিভিন্ন ধাপ পরিচালনা করেন।

দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।

আর বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

চ্যারিটেবল মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী।

অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন।

জামিনে থাকা দুই মামলার আসামিরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তারেক রহমানের পক্ষে হাজিরা দেন তার আইনজীবী।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬
এমআই/ এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।