ঢাকা: দেশ গঠনে সবাইকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলব। সবাই এই কথাটা বলছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মরহুম সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মরণোত্তর একুশে পদক প্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকালকের অনেক সাংবাদিকই নিজেদের আখের গোছানোর জন্য দালালি করে। তবে এটা সবার ক্ষেত্রে বলি না। এ কথা বলাটা ভালো হলো না। তারপরও বলতে হলো। কারণ, তারা বাড়ি-ঘর, ফ্ল্যাট-প্লট সব জোগাড় করে। অথচ মাহফুজ উল্লাহর কিছুই ছিল না। তার চিকিৎসার জন্য পরিবারকে বন্ধুদের কাছে হাত পাততে হয়েছিল।
মরহুম সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘২০১৪-এর নির্বাচনের পরে, ২০১৮ নির্বাচনের আগের সময়টাই তিনি অনেক কাজ করেছেন। তখন সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য মাহফুজ উল্লাহ, মাহবুব উল্লাহ ও জাফরউল্লাহ ভাইয়ের অসাধারণ প্রচেষ্টা ছিল। তারা ছিলেন বলেই ডান, বাম সবাই মিলে একটা জায়গায় আসা সম্ভব হয়েছিল। একেবারেই গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন মানুষ ছিলেন, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করেছেন। ’
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যারা জীবনে বেশিরভাগই বিপ্লবী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম, আমরা সেদিন শ্রেণি শত্রু খতম করার স্লোগানও দিয়েছি। এরপরে রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনার যে পরিবর্তন এসেছে, সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজও শুরু করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা আশাবাদী, ফ্যাসিবাদের পরিবর্তন হয়েছে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পালিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে চেষ্টা করেছে, লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে, সর্বশেষে ছাত্র-জনতার সমবেত প্রচেষ্টায় সেটা সম্ভব হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের অনেক বয়স হয়েছে। নবীন-তরুণরা আছেন, যারা দেশকে নতুন করে চিন্তা করছেন। সেই চিন্তার মধ্যেই কিন্তু আগের যাদের এ দেশকে সুন্দর করার জন্য অবদান, সেই অবদানগুলোকে যেন আমরা কখনোই ভুলে না যাই। কারণ, এদের কাজের ওপরই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, সত্যিকার অর্থেই একজন গুণী, অসাধারণ মেধাবী এবং একজন দেশপ্রেমিক মানুষকে সরকার একুশে পদকের মাধ্যমে সম্মানিত করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মাহফুজ উল্লাহ তার বড় ভাইয়ের (মাহবুব উল্লাহ) মতোই মেধাবী ছিলেন। তখনকার দিনে বোর্ড স্ট্যান্ড করেছিলেন, কিছুটা পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণেও বাম রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন। তার মূল উদ্দেশ্যটাই ছিল সমাজে পরিবর্তন নিয়ে আসা। মানুষের কল্যাণের জন্য, মানুষের পাওনা পাইয়ে দেওয়ার রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাইতেন।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ, মরহুম মাহফুজ উল্লাহর ভাই মাহবুব উল্লাহ, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম, সাবেক সচিব ইসামাইল জবিউল্লাহ, সাংবাদিক গোলাম মর্তুজা, চিত্রশিল্পী রোকেয়া সুলতানা ও দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৫
টিএ/জেএইচ