ঢাকা, শনিবার, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

জাতিকে অনিশ্চয়তায় না রেখে দ্রুত নির্বাচন দিন: মির্জা ফখরুল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
জাতিকে অনিশ্চয়তায় না রেখে দ্রুত নির্বাচন দিন: মির্জা ফখরুল বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

কুমিল্লা: বিলম্ব না করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ভোট তাড়াতাড়ি দিলে একটা সরকার আসবে, যার পেছনে জনগণ থাকবে।

তাই কালবিলম্ব না করে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিন। যত বড় বড় লোক দিয়েই সরকার চলুক, পেছনে জনগণ থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুমিল্লার লাকসাম স্টেডিয়ামে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল এ কথা বলেন।  

রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে দলের লাকসাম উপজেলা ও পৌরসভা এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলা শাখার আয়োজনে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।  

বিএনপির মহাসচিব বলেন, যতটুকু পরিবর্তন-সংস্কার করা দরকার তা করে নির্বাচন দিন। এরপর দেশ কিছুটা শান্ত ও স্থিতিশীল হবে।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করব, জাতিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে না রেখে দ্রুত নির্বাচন দিন। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কাছে অনুরোধ করব, এমন কোনো কথা বলবেন না যাতে রাজনৈতিক ঐক্য বিনষ্ট হয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্বশীলদের মতো কাজ করতে চাই। অতীতে সরকারে ছিলাম, আবারও জনগণের ভোটে সরকারে যাব -ইনশাআল্লাহ। তাই নির্বাচনের পদ্ধতিতে একটি স্থিতিশীল অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন।  

মির্জা ফখরুল বলেন, লাকসাম সেই এলাকা, যেখানে মানুষ সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে আওয়ামী লীগের হাতে। আপনাদের একজন মন্ত্রী ছিলেন, তাজুল ইসলাম -তাই না! তার অত্যাচার-নির্যাতনে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। সেটা এখন কোথায়? কোথায় পালিয়েছে? কোথায় পালিয়েছে তাও জানেন না আপনারা। কোথায় লুকিয়ে গেছে, নাকি ভারতে গেছে -তাও জানেন না। যারা অত্যাচার-নির্যাতন, অবিচার করে তাদের পরিণতি এরকমই হয়। তাদের হাসিনা ও তাজুলের মতো পালিয়ে যেতে হয়।

১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমান দেশ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৭১ সালে স্বাধীনতার পর যে ক্ষমতায় বসে ছিল তা দুঃখজনক। এরপর তার মেয়ে এদেশের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, প্রশাসন সব ধ্বংস করেছে। বিগত বছরগুলোতে তারা এসব কাজ করে গেছে। গত তিনটা নির্বাচনে কেউ ভোট দিতে পারেনি। চেয়ারম্যান, উপজেলার কোনো নির্বাচনেও কেউ ভোট দিতে পারেনি। কেননা, ভোটের কোনো দরকারই ছিল না। আগের রাতেই সিল মারা হয়ে যেত। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে সরকার গঠন করেছিল। সবশেষ ২০২৪ সালের ০৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছিল, সেটি ডামি নির্বাচন। আওয়ামী লীগের ক্যান্ডিডেট, প্রতিপক্ষও আওয়ামী লীগ। সুতরাং আমার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে ফিরে পাওয়ার জন্য তারেক রহমান একটি স্লোগান দিয়েছিলেন- ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ’।  



লাকসামে প্রায় ১১ বছর আগে গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম হিরু ও হুমায়ুন কবির পারভেজের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, হিরু-হুমায়ুন গুম হওয়ার পর তার ছেলেরা যখন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, সেই দৃশ্য বলার মতো নয়। তাদের চেহারা এখনও মনে পড়লে বুক ফেটে যায়। হিরু-হুমায়ুনের ছেলেরা এখনও মনে করেন, তাদের বাবা ফিরবেন, মাথায় হাত রাখবেন। ওরা (আওয়ামী লীগ) আমাদের ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে, গুম করেছে। এখানে এমন কোনো লোক নাই যার বিরুদ্ধে মামলা নাই, সবার বিরুদ্ধে মামলা আছে।

কুমিল্লার লাকসাম স্টেডিয়াম মাঠে কেন্দ্রীয় শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালামের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম‌্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি কর্নেল অব. এম আনোরুল আজিম, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূইঁয়া, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক হাজি আমিনুর রশিদ ইয়াছিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি জাকারিয়া তাহের সুমন, কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ বিষয় সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ‌্যামল, প্রবাসীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, জেলা বিএনপির সদস‌্য সচিব ভিপি আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।