ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

তলে তলে আপস-সমঝোতার আর সুযোগ নেই: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২৩
তলে তলে আপস-সমঝোতার আর সুযোগ নেই: ফখরুল

ফেনী: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তলে তলে সমঝোতার সুযোগ নেই। এবার আর কেউ আপস করবে না।

ভালো ভালো নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। আমরা বিএনপির হাতে ক্ষমতা চাই না, জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। কথা না শুনলে ফয়সালা হবে রাজপথে।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপির কুমিল্লা-ফেনী-মিসরাই-চট্টগ্রাম তারুণ্যের রোডমার্চের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি।

ফেনীর মহিপালে সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে এ রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া আজকে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না। চিকিৎসক বললেও এ ফ্যাসিস্ট সরকার বিনা চিকিৎসায় তাকে হত্যা করতে চায়। কারণ, খালেদা জিয়াকে হত্যা করলে তাদের রাস্তা পরিষ্কার।  

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, লন্ডনে বসে তিনি (শেখ হাসিনা) যে বক্তব্য দিয়েছেন, কোনো মানুষ এমন কথা বলতে পারে না। খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেতা নন, এশিয়ার প্রথম মুসলিম নেত্রী। তিনি এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। মানুষের উপকার করেছেন। সেই নেত্রীকে আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছেন। এসব আমরা মেনে নিতে পারি না।

বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সামনে আবার একইভাবে নির্বাচন করতে চায়। এবার আর হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন নয়, সবাইকে এ প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আমাদের একদফা এক দাবি, পদত্যাগ করতে হবে। হাসিনা থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এবার যেতে হবে। এখনও সময় আছে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। কিন্তু তাদের কথা, আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব। কারণ তারা জানে নির্বাচন হলে তারা ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকেও ওবায়দুল কাদেরের বাড়ির সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের বহরের গাড়ি ভাঙচুর করেছে তারা। এ সন্ত্রাস করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এ আন্দোলনে ৬৭৫ জন গুম হয়েছেন, ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের পরিবার এখনও ফেরার অপেক্ষায় বসে আছে।  

সভার প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা এতদিন অহিংস আন্দোলন করেছি। কিন্তু এখন যেটা দেখতে পাচ্ছি তারা খালেদা জিয়াকে বন্দি করে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা করছে। আমরা এখনও সহিংসতার দিকে যাইনি। প্রতিবাদ করছি শান্তিপূর্ণভাবে। কিন্তু আগের মত গ্রেপ্তার, গুম-খুন, বানোয়াট মামলা যদি বন্ধ না করেন প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধ করা হবে।  

কর্মসূচিতে ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে পথসভায় সঞ্চালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক এম এ খালেক, গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক এবং আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্ল্যাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঞা, জয়নুল আবেদীন ফারুক, জয়নাল আবেদীন ভিপি, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ কেন্দ্রীয় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।  

বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, ১৫০ কিলোমিটারের এ রোডমার্চ কুমিল্লা থেকে শুরু হয়ে ফেনী, মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম নগরে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে। এতে মোট চারটি পথসভা করা হবে। সকাল ১০টায় প্রথম সভাটি হবে কুমিল্লায়। এই সভা শেষে রোডমার্চ রওনা হয় ফেনীর পথে।

ফেনীর মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণাংশে দ্বিতীয় জনসভা শেষে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা সদরে তৃতীয় পথসভা হবে। এরপর চট্টগ্রাম নগর বিএনপি’র কার্যালয় নাসিমন ভবন সংলগ্ন কাজীর দেউড়ি মোড়ে সমাবেশের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শেষ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২৩
এসএইচডি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।