ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘বিএনপির এক দফা মানা ছাড়া সরকারের কোনো উপায় নেই’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩
‘বিএনপির এক দফা মানা ছাড়া সরকারের কোনো উপায় নেই’

ঢাকা: বিএনপির এক দফা মানা ছাড়া সরকারের কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয়তাবাদী নবীন দলের প্রধান উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।  

তিনি বলেন, সময় আর বেশি দূরে নেই।

সংকট সৃষ্টি করছেন আপনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা)। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করছেন আপনি। দেশে স্বৈরতন্ত্র সৃষ্টি করেছেন আপনি। বেশি লুটপাটের অধিকার আপনি দিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ করেছেন আপনি। সাইবার আইন পাস করেছেন আপনি। অতএব আপনাকেই পদত্যাগ করতে হবে এবং সংসদ ভেঙে দিতে হবে। আর বিএনপির এক দফা দাবি আপনাকে মানতেই হবে। এর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা আপনার হাতে নেই। যতই বাহানা করেন বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করবেন এত সহজ না।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর)  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী নবীন দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে’ এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষজন আমাদের এ আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন আছে এবং থাকবেই। তাই আপনারা সময় থাকতে পদত্যাগ করুন।  

তিনি বলেন, সরকারের কাছে একটি জবাব চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনি বলেছিলেন বাংলাদেশে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে। কিন্তু সে কথা আপনি আজকে আর মানছেন না। প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেছিলেন দেশের লুটেরাদের বিরুদ্ধে আপনার বাবা সংগ্রাম করেছেন, আপনিও সংগ্রাম করবেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবেন, কিন্তু সেটিও আপনি ভুলে গেছেন। পত্রিকায় দেখতে পেলাম ২৫২ জন পুলিশ এবং সরকারি কর্মকর্তার আমেরিকায় বাড়ি আছে। এর মধ্যে কয়েকজন সম্মানিত ওসি সাহেবও আছেন। একজন ডিআইজি সাহেব নাকি তিন কোটি টাকা দিয়ে তিন হাজার স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট কিনেন, তাহলে এটি কি লুট না। এটি কি সন্ত্রাসী কায়দায় লুটের টাকা ভাগ করা না। তাহলে আপনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) এগুলোকে মেনে নিচ্ছেন কেন তা আমি জানি না।

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল না এমন মন্তব্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আপনারা যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক হন তাহলে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের মধ্যে হিসাব দেন আপনাদের কয়জন আছে। ১১ জন সেক্টর কমান্ডারের মধ্যে আপনাদের কয়জন আছে। ৬৮ জন বীর উত্তমের মধ্যে আপনাদের কয়জন আছে। ৩০ লাখ লোক মারা গেছে তাদের মধ্যে আপনাদের উল্লেখ্য কোনো নেতা আছে কিনা তাদের নাম দেন। আমি বলতে চাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি।  

ডিএমপি কমিশনারের উদ্দেশে বলতে চাই, প্রশাসন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে কীভাবে একটি পারিবার দ্বন্দ্বে মারামারির ঘটনা যারা আহত হয়েছেন এবং দাঁত পড়ে গেছেন তাদের দেখতে যান। তাহলে কই আমাদের তো বহু নেতাকর্মীকে পিটিয়ে রাজপথে পা ভেঙে দিয়েছেন, কোমর ভেঙে দিয়েছেন, মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন। বহু নেতাকর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, কই তাদের তো ডিএমপির পক্ষ থেকে একটিবারও কেউ দেখতে যাননি। ট্যাক্স আমরাও দেই, আমরা এই দেশের স্বাধীনতার যোদ্ধা। এটিই কি তাহলে গণতন্ত্রের নমুনা।  

স্বৈরাচার ক্ষমতায় থাকার জন্য অস্ত্র ব্যবহার করে এবং প্রশাসনকে ব্যবহার করে, কিন্তু টিকতে পারে না এমন মন্তব্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, তার প্রমাণ হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ। প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলতে চাই, বহু অনুনয় বিনয় করেও সোজা পথে আপনি থাকতে চাচ্ছেন না। আপনি একবার বলেন ২৪ ঘণ্টা পাড়ি দিয়ে আমেরিকা যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আবার সেলফিও তোলেন। এ ধরনের রাজনীতির আগা মাথা কিছুই আমার বোঝা হচ্ছে না। পায়ের নিচে যখন মাটি থাকে না, ঠিক তেমনি আপনার এবং আপনার নেতাদেরও একই অবস্থা চলছে।

অবস্থান কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী নবীন দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ তালুকদার।

সঞ্চালনা করেন জাতীয়তাবাদী নবীন দলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল রানা।

এ সময় জাতীয়তাবাদী নবীন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩
ইএসএস/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।