ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আবার ক্ষমতায় যেতে আ. লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
আবার ক্ষমতায় যেতে আ. লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গ্রুপছবিতে অংশ নেন

ঢাকা: আগামীতে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে, আওয়ামী লীগকে তৃণমূল থেকে সুসংগঠিত করতে হবে।

সোমবার (১২ জুন) দুপুরে গণভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার গণমাধ্যমকে এ কথা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ বাদে অন্য কেউ ক্ষমতা এলে উন্নয়ন এবং দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশবিরোধী, খুনি, মৌলবাদী চক্র, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ প্রধান তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দলকে আরও শক্তিশালী, সুসংগঠিত করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।

দুঃসময়ের নেতাকর্মীরা যেন অবহেলিত না হয়, সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দুঃসময়ের নেতাকর্মীরাই দলের দুঃসময়ে এবং যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার একমাত্র শক্তি আমার সংগঠন। সাংগঠনিক শক্তি না থাকলে বড় কোনো অর্জন সম্ভব হয় না। তাই দলকে সুসংগঠিত করতে হবে তৃণমূল পর্যায়ে থেকে।

বাংলাদেশকে নিয়ে নানা চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই চায় না আমাদের দেশটি এগিয়ে যাক।

এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্রান্তের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের উস্কানিতে বিএনপি আজ লাফাচ্ছে, তারা কিন্তু তাদের ক্ষমতায় বসাবে না। তারা শুধু তাদের ব্যবহার করবে।

টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়, জনগণের জীবনমান উন্নত হয়, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশে এগিয়ে যাচ্ছে, বিদেশে বাংলাদেশের সম্মান মর্যাদা বেড়েছে অনেক।

তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যে পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হয়েছে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতা আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মানুষের মন জয় করেই ক্ষমতায় এসেছি। আর ক্ষমতায় এসে ধারাবাহিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ’৭৫ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যে অন্যায় অত্যাচার করা হয়েছে, আমরা তার প্রতিশোধ নেই নাই। আমরা অন্যায়ের জবাব দিচ্ছি উন্নয়ন করে।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের সরকার প্রতিটি জেলায় পরিকল্পিত উন্নয়ন করেছে। ফলে আজ গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা একেবারে নাই বললেই চলে।

তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারলে গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে আমরা যে উন্নয়ন করেছি, তার সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে।

আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়ন করেছে সেগুলো বেশি করে প্রচার করতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, উন্নয়ন যেন অব্যাহত থাকে এবং আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনা দরকার, সেটাও মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। উন্নয়নের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি মানুষের আস্থা, বিশ্বাসও অর্জন করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে বারবার ধ্বংস করার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সে চেষ্টা কখনোই সফল হয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ মানুষের মন জয় করে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করা দরকার মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা মা ভাই সবাইকে হারানোর পর আওয়ামী লীগই আমার পরিবার। বাংলাদেশের জনগণ আমার সমস্ত শক্তি। তারাই আমার একমাত্র ভরসা। তাদের জীবনমান উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। করোনা মহামারির মধ্যে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যারা সবচেয়ে বেশি মানুষের পাশে থেকে অবদান রেখেছে।

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরাফাতকে আপনাদের হাতে তুলে দিলাম নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে সকলে মিলে কাজ করবেন।

বিএনপির নির্বাচন মানে দশটা হোন্ডা ২০ টা গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো ভোটারবিহীন নির্বাচন করেনি। ভোটার বিহীন নির্বাচন করেছে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল ফারুখ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি,  সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রলীগের সভাপতিসহ বিভিন্ন থানা ওয়ার্ড এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।