ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ক্ষমতায় টিকে থাকতে র‍্যাবকে ব্যবহার করছে আ.লীগ: এ্যানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
ক্ষমতায় টিকে থাকতে র‍্যাবকে ব্যবহার করছে আ.লীগ: এ্যানি

লক্ষ্মীপুর: ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগ র‍্যাবকে ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য আয়নাঘরে নিয়ে মানুষকে জিম্মি করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

এটা সরকারের নির্দেশ ছাড়া হয়নি। সরকারের লোকজন এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। জার্মানভিত্তিক নিউজ এজেন্সি ডয়চে ভেলেতে দেখানো হয়েছে- র‍্যাব কীভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করছে। যারা এ অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের দুইজন সাক্ষাৎকার দিয়েছে। প্রকৃত তথ্যচিত্র তারা তুলে ধরেছে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য র‍্যাব কাজ করে যাচ্ছে।

শনিবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় হারিছ ভিলা প্রাঙ্গণে খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি লক্ষ্যে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

এ্যানি বলেন, লক্ষ্মীপুরে ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে র‍্যাবের ভূমিকা কি ছিল? জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শাহাবুদ্দিন সাবুর বাড়িতে হামলা করে তার পায়ে গুলি করেছে। সেদিন আমাদের নেতাকর্মীরা রাস্তায় মিছিল নিয়ে বের হলে তাদের ওপরও গুলিবর্ষণ করা হয়। যুবদল নেতা জুয়েলের লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফয়েজ ডাক্তারকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য র‍্যাব কাজ করে যাচ্ছে।

র‍্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে- এরা বিচারবহির্ভূত হত্যার সঙ্গে জড়িত। এরা বাংলাদেশে গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত। এরপরেও এদেরকে দিয়েই ক্ষমতা চালিয়ে নিচ্ছে (আ.লীগ)। তাই মানুষ এ সরকারের সঙ্গে নেই। এদের দরকার প্রশাসন, যারা বিচারবহির্ভূত হত্যা করে এ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে চায়। অন্য মানুষকে এরা (আওয়ামী লীগ) বিশ্বাস করে না। এরা জনগণকে জিম্মি করে আবার ক্ষমতায় আসার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এ ধরনের ক্ষমতা কখনো চিরস্থায়ী হয় না। অনেক দৃষ্টান্ত আছে।  

কঠোর আন্দোলনের কথা জানিয়ে এ্যানি বলেন, আমরা সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে চাই। যদি রক্ষা পেতে হয় আন্দোলন করতে হবে। তারেক রহমান বিদেশে বসে আমাদের গাইডলাইন দিচ্ছেন। রোজার মাসেও আমরা কর্মসূচি দিয়েছি, কিন্তু রোজার মাসে কর্মসূচি দেওয়ার কথা ছিল না। আমাদেরকে আরও কঠোর এবং কঠিন আন্দোলন করতে হবে। কোনো অন্যায়-অত্যাচারের কাছে বিএনপি মাথা নত করেনি, করবেও না। খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের কাছ থেকে যে নির্দেশনা আসবে সে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আন্দোলন করব।  

আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি সৃষ্টি করছে মন্তব্য করে এ্যানি বলেন, দেশের মানুষ তাদের রাজনীতি পছন্দ করে না। এটা অপরাজনীতি, এটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি থাকতো তাহলে বিএনপির মিটিং বিএনপি করতো, আওয়ামী লীগের মিটিং আওয়ামী লীগ করতো। অসুবিধা ছিলো না। কিন্তু এরা দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দেশে একটা অবৈধ, অনির্বাচিত সরকার চলছে। ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে নাই। হয় পুলিশ প্রশাসন, না হয় সিভিল প্রশাসন, না হয় অন্যান্য কর্তাব্যক্তিরাই তাদের প্রয়োজনে ক্ষমতায় বসিয়ে রেখেছে।  

এ্যানি বলেন,  ২০১৪ সালে তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমার ওপর আস্থা রাখুন, একটি নিরপেক্ষ ভোট করিয়ে দেব। ' কিন্তু ভোটের অবস্থা তো আমরা দেখেছি, তিনি দিনের ভোট রাতে করিয়েছেন। জালিয়াতি করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছেন।

বক্তব্যের মাঝে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান এ্যানি।  

সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু।  

চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাচ্চু ও সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান হারুনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, হাফিজুর রহমান, মাহবুবুর রহমান লিটন, অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন, এম বেলাল হোসেন, গোলাম সারোয়ার ও শাহ মোহাম্মদ এমরান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।