ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলন জামায়াতকে টিকিয়ে রাখার প্রকল্প: ইনু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলন জামায়াতকে টিকিয়ে রাখার প্রকল্প: ইনু বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল) আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলন কার্যত রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াতকে রাজনীতিতে টিকিয়ে রাখার, ফিরিয়ে আনার, পুনর্বাসন করার প্রকল্প ছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রের দোহায় দিয়ে রাজাকারদের হালাল করার অপরাজনীতি বন্ধ না করা পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনের মহিমা সর্বস্তরে আমরা ধারণ করতে পারবো না।

বিএনপির গণতন্ত্রের টুপির ভেতর রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াত আছে। বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলন কার্যত রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াতকে রাজনীতিতে টিকিয়ে রাখার, ফিরিয়ে আনার, পুনঃর্বাসন করার প্রকল্প ছাড়া আর কিছু নয়।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মহান ভাষা আন্দোলনে কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহা'র অনবদ্য ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল)।

হাসানুল হক ইনু বলেন, এই ভুখণ্ডে বাঙালি জাতীয়তাবাদের জাগরণ সেভাবে প্রকাশ পায়নি। কিন্তু বাঙালির সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা টিকিয়ে রেখেছে এবং বিকাশ ঘটিয়েছে জনসাধারণ। সেই ধারায় ১৯৫২ সালে পাকিস্তান আমলে প্রথম বাঙালিদের জাতীয়তাবোধের ঐক্যবদ্ধ জাগরণ শুরু হয়।

তিনি আরও বলেন, ভাষা আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা এটিকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে দেখেছিলেন। কিন্তু জনগণ এটিকে বাঙালি জাতীয়তা হিসেবে দেখেছিল এবং জাগ্রত হয়েছিল। সুতরাং ভাষা আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে, বাঙালির সুপ্ত জাতীয়তাবোধকে জাগ্রত করা।

জাসদ সভাপতি আরও বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান ও উপনিবেশিক শাসনকে বর্জন করার এবং নিজের ঐতিহ্যকে রক্ষা করার আন্দোলন। আপনি বাঙালি জাতীয়তাবোধে জাগ্রত থাকবেন এবং সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে হাত মেলাবেন- এটা একসঙ্গে যায় না। সুতরাং সাম্প্রদায়িকতাকে বর্জন করতে হবে। তা করতে হলে, ৫২, ৬৯, ৭১, ৭৫ এবং ২১ আগস্টের খুনিদের আপোষহীনভাবে বর্জন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ৭৫ এর পরে সামরিক শাসনের হাত ধরে মুক্তিযুদ্ধের খুনি এবং তাদের দোসররা রাজনীতিতে ফিরে এসেছে, পুর্নবাসিত হয়েছে। যা জাতির জন্য দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। আমরা যখন দেখি বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে ৫২, ৬৯, ৭১, ৭৫ ও ২১ আগস্টের খুনি ও তাদের দোসরদের বগলের তলে নিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে, তা হচ্ছে জাতির সঙ্গে ঠাট্টা-মশকরা। এই ঠাট্টা-মশকরা সহ্য করা যায় না।

হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পর এসে বিএনপির প্রকাশ্যে রাজাকারদের পক্ষে ওকালতি, তাদের নিয়ে ঐক্য সরকার গঠনের প্রস্তাব ভাষা শহীদ ও ৭১ এর শহীদদের প্রতি অপমান। সুতরাং ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা এখনো রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াত নিয়ে রাজনীতির মাঠে ঘোরাফেরা করছে, তাদের সর্বাত্মকভাবে বর্জন করার প্রতিজ্ঞা করি।

এম-এল এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন এম-এল এর পলিট ব্যুরোর সদস্য কমরেড লুৎফর রহমান, সাইফুল হক মাস্টার, কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য সাইমুম হক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
এসসি/এসএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।