ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বালিয়াডাঙ্গীতে প্রতিমা ভাঙচুরের নিরপেক্ষ তদন্ত চান ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩
বালিয়াডাঙ্গীতে প্রতিমা ভাঙচুরের নিরপেক্ষ তদন্ত চান ফখরুল

ঢাকা: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাশাপাশি এ গটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও জড়িতদের অবিলম্বে খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, এই ঘটনা শুধু ন্যাক্কারজনকই নয়, রহস্যজনক; পূর্ব পরিকল্পিত এবং কলঙ্কজনক। এর নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জল দৃষ্টান্ত। হিন্দু ধর্মালম্বীদের মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুর করে যারা সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় তারা নরকের কীট। বালিয়ডাঙ্গির ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, নিরপেক্ষ তদন্ত করে তা খুঁজে বের করতে হবে। আমি অবিলম্বে বালিয়াডাঙ্গীর মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

একই সঙ্গে এ ঘটনায় ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত নিরীহ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয় সেদিকে প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান তিনি।

গত শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর রাত পর্যন্ত জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১৪টি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় সমগ্র এলাকায় হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে, যা সামাজিক সম্প্রীতির অন্তরায়। যেসব মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে, তার বেশিরভাগই সড়কের পাশে ছিল। রাতে সাধারণত টহল পুলিশ থাকে। কিন্তু সেখানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিও রহস্যজনক। তাদের গাফিলতিতে দুর্বৃত্তরা অনায়াসে এত বিপুল সংখ্যক মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটাতে পেরেছে বলে সাধারণের ধারণা। সরকার এর দায় এড়াতে পারে না।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশে চলমান দুঃশাসনে এমন এক অস্বাভাবিক ও নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যেখানে অপরাধ করলেও দলীয় বিবেচনায় প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। ফলে অপরাধীরা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে নতুন নতুন অপরাধ করতেই থাকে। দেশ আজ যেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।

জনগণ আজ চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডতো বটেই, সামাজিক ও ধর্মীয় কাজও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এর আগেও মসজিদ-মন্দির-গির্জা-প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও হামলা হয়েছে। সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠভাবে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে পারেনি।

ফখরুল অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় যখনই হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি-সম্পদ, বাড়ি, ব্যবসা দখল, মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এর আগেও বালিয়াডাঙ্গীতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও তার পরিবারের সদস্য এবং তার অনুগত লোকজন শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল নয়, তাদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। তখনো তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে সরকারি খরচে প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলো পুণঃনির্মাণে দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩
এমএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।