ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আ. লীগে কোনো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নেই: মোশাররফ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
আ. লীগে কোনো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নেই: মোশাররফ

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল দাবি করা আওয়ামী লীগে কোনো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৮৭ তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে ক্ষমতাসীনরা নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বলে দাবি করে। অন্যদিকে বিএনপি হলো মুক্তিযোদ্ধাদের দল। আওয়ামী লীগে কোনো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নেই। আমাদের দলে এখনো শাহজাহান ওমরের মতো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা জীবিত আছেন। এগুলোতো জীবন্ত ইতিহাস।

বিএনপি ঘোষিত ১০ দফার প্রথম দফাই হচ্ছে বর্তমান সরকারকে বিদায় করা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেভাবে দেশ চলছে সেভাবে চলতে পারে না। তারা (সরকার) চাপাবাজি করে জনগণকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে চাই। এজন্য ২৭ দফা প্রণয়ন করা হয়েছে। শহীদ জিয়াউর রহমান যে লক্ষ্যে বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন, সেগুলো বর্তমান সরকার ধ্বংস করেছে।

কোনো স্বৈরাচার আপোসে ক্ষমতা ছাড়ে না মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর বিকল্প নেই। অতীতে যেমন ছাত্র জনতা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার এরশাদকে হটিয়েছে, তেমনই যে কোনো মুহূর্তে এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিদায় নেবে।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে প্রথমে বিদ্রোহ করেন উল্লেখ করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তার নেতৃত্বে দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। কিন্তু আজকের হাইব্রিড সরকার তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানের চর হিসেবে পরিচিত করাতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ বিদেশি গণমাধ্যমে এবং বিভিন্ন লেখক তাদের বইয়ে জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটাকে বিকৃত করছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ভুল ইতিহাস শেখাচ্ছে।

সত্য কিন্তু কখনো চাপা থাকেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের দুটি ক্রান্তিকালে জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। একটি ২৫ মার্চের পর, আরেকটি ৭ নভেম্বর। এই ইতিহাস একদিন প্রতিষ্ঠিত হবেই। তাই আওয়ামী লীগের এই ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে সোচ্চার ও প্রতিবাদ করতে হবে।

একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী স্বনির্ভর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জিয়াউর রহমান নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, তিনি (জিয়াউর রহমান) মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেছিলেন। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে বিদেশে শ্রমিক পাঠানো শুরু করেছিলেন। গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠা করেছেন। খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়ে বিদেশে চাল রপ্তানি করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছর তিনি শাসন করেছেন। এমন কোনো খাত নেই যেখানে জিয়াউর রহমানের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। তিনি বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীকে নিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রণয়ন করেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। বিএনপির ৬০০ বেশি লোক গুম, এক হাজারের বেশি মানুষ খুন হয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন সরকার খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রাখছে। জনগণের প্রতি তাদের (সরকার) দায়বদ্ধতা নেই।

বর্তমান সরকার ১১ লাখ কোটি টাকা লুটে বিদেশে পাচার করেছে দাবি করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংসের মুখে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানির দাম বেড়েছে। দেশের বিচারব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। তারা দলীয়করণের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। এমতাবস্থায় জনগণ আওয়াজ তুলেছে যে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো সংকটের সমাধান হবে না। যারা অর্থনীতি ধ্বংস করেছে তারা এর পুনর্গঠন করতে পারবে না। তাদেরকে বিদায় না দিলে দেশকে মেরামত করা যাবে  না।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ড্যাবের সহ-সভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. মো. ফখরুজ্জামান ফখরুল, ডা. মেহেদী হাসান, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

>>> আরও পড়ুন: জনগণ রাস্তায় নামলে সরকার টিকতে পারবে না: গয়েশ্বর

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।