ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার আরেকটি ১/১১ তৈরি করতে চায়: ভিপি নুর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
সরকার আরেকটি ১/১১ তৈরি করতে চায়: ভিপি নুর

ঢাকা: বর্তমান সরকার অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজির নাটক সাজিয়ে আরেকটি ১/১১ করতে চায় মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। বলেছেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায় না, তারা ১/১১ ঘটাতে চায়।

তিনি বলেন, আমরা ১/১১ চাই না। আমাদের স্পষ্ট দাবি, বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ।

বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক নুর বলেন, ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করার জন্য যে বইমেলা হয়, সেখানে সরকার আদর্শ প্রকাশনী, গার্ডিয়ান প্রকাশনীর মতো জনপ্রিয় প্রকাশনীকে বই প্রকাশের অনুমতি দেয় না। এই সরকার কতটা নিচে নেমেছে, কতটা গণবিরোধী, কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদী মানসিকতার সরকারে পরিণত হয়েছে তা এ থেকেই প্রমাণ হয়।

আদর্শ ও গার্ডিয়ানকে স্টল বরাদ্দ না দিলে বইমেলা বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে চাই, বইমেলাকে সার্বজনীন করতে চাই। কিন্তু আদর্শ ও গার্ডিয়ানকে যদি স্টল বরাদ্দ না দেওয়া হয়, তাহলে কেউ বইমেলায় যাবেন না, একটি বইও কিনবেন না।

পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বিরোধী দলের ওপর যেভাবে কারণ-অকারণে হামলা, মামলা, অত্যাচার-নির্যাতন করছেন, এটা অমানবিক, বেআইনি। যারা এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের ক্ষমা হবে না।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাদের নেতাকর্মীদের উন্নয়ন হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা লন্ডন, দুবাইয়ে বাড়ি কিনেছে, সিঙ্গাপুরে শীর্ষ ধনী হয়েছে। আওয়ামী লুটেরারা এভাবে দেশের টাকা বাইরে পাচার করে অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ফেলেছে, সংকটের মুখে ফেলেছে। এখন সরকার ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আইএমএফের কাছে ঘুরে এবং আইএমএফের কথায় বারবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণের ওপর দুর্ভোগ চাপিয়ে দিচ্ছে।

ডাকসুর এই সাবেক ভিপি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে চায়, দেশকে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চায়। যে কারণে বিরোধী দল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিলে, একই দিনে আওয়ামী লীগ গুণ্ডা-পাণ্ডা ও মাদকাসক্তদের দিয়ে পাড়া-মহল্লায় শো-ডাউনের নামে সন্ত্রাসী কর্যক্রম চালাচ্ছে।

বর্তমান সরকার আর বেশিদিন ক্ষমতায় নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই বছরের মধ্যেই তাদের পতন হবে। সুতরাং  যারা এখন এই সরকারের গোলামি করছেন, জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা, মামলা করছেন তাদেরকে আমরা চিনে রাখছি।

গণঅধিকার পরিষদ প্রতিহিংসা, সংঘাত, সহিংসতার রাজনীতি চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা জনগণকে সম্প্রীতি, সহনশীল, উদার, গণতান্ত্রিক নতুন ধারার রাজনীতি উপহার দিতে চাই। যে রাজনীতির মধ্য দিয়ে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। মানুষের মানবিক ও সামজিক মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।

গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক ফরাজীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, মাহফুজুর রহমান, ফারুক হাসান, যুব অধিকার পরিষদ সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।