ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আওয়ামী লীগ জামানত হারানোর যুগে প্রবেশ করেছে: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
আওয়ামী লীগ জামানত হারানোর যুগে প্রবেশ করেছে: সাকি

ঢাকা: আওয়ামী লীগ জামানত হারানোর যুগে প্রবেশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে দেশে দুটি ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশ মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করেছে আর আওয়ামী লীগ জামানত হারানোর যুগে প্রবেশ করেছে। রংপুরে তারা জামানত হারিয়েছে।

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করে সাতটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।

সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক দিন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সব রাজনৈক দলের সঙ্গে সংলাপ করে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তার উপরে ভরসা ভরসা রাখতে। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন। দেশের ইতিহাসে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে এমন কলঙ্কজনক নির্বাচন আর ঘটেনি। মধ্যরাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী, প্রশাসন ও দলীয় গুন্ডা বাহিনী দিয়ে তারা ব্যালট বাক্সে ভরেছে।

তিনি আরও বলেন, তারা (সরকার) বলছেন, উন্নয়ন করে দেশকে নাকি তারা ভাসিয়ে দিচ্ছেন। আর আর্ন্তজাতিক ও দেশীয় সংস্থা বলছে, এ সরকার গত ১৪ বছরে অন্তত ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এগুলো সব ব্যাংকিং হিসাব। আর হুন্ডিসহ অন্যান্য মাধ্যমে তারা কত কোটি টাকা পাচার করেছে তা আমরা জানি না। দেশকে তারা ফোকলা বানিয়ে দিয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলনে এ নেতা আরও বলেন, আজকে আমাদের রিকশা চালক, সিএনজি চালক, বাস ড্রাইভার, হেলপার, হকার, দেশের সব মেহনতি-শ্রমজীবী মানুষের জীবনে আহাজারি। দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বগতির কারণে তাদের আজকে নাভিশ্বাস উঠছে। আর বর্তমান সরকার উন্নয়নের ডামাডোল করে।

তিনি আরও বলেন, একদিকে তারা (সরকার) মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, আর অন্যদিকে দেশের মানুষকে বিভাজিত করে, নানাভাবে বিভক্ত করে আজকে এমন একটা গৃহযুদ্ধ তৈরি করতে চাইছে, যাতে দেশটাই বেহাত হয়ে পড়ে। একটা দেশের মানুষ যদি বিভক্ত হয়ে পড়ে, রাষ্ট্র যদি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হযে পড়ে, সেই দেশ সার্বভৌমত্ব রাখতে পারে না।  

বর্তমান সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ফেলছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে তাদের গদি আঁকড়ে ধরে রাখতে হবে। তারা কি আর পারবে? এরই মধ্যে তাদের পতনের ঘণ্টা বেজে উঠেছে।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে জবাবদিহিতার বাংলাদেশ। মানুষ ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচন করবে। সে সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করে দেশ পরিচালনা করবে। তার জন্য এ সরকারের পদত্যাগ দরকার, অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন দরকার, শাসন ব্যবস্থাকে বদলানো দরকার।

সমাবেশে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেক ধরনের ভোট ডাকাতি হয়েছে। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ রাতের আঁধারে যে ভোট ডাকাতি করেছে এটা অভিনব। এর আগে ২০১৪ সালে যে ভোট ডাকাতি হয়েছে সেটাও অভিনব।  

তিনি আরও বলেন, আমরা শুরু থেকেই সরকার পরিবর্তন চেয়েছি, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার চেয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত এ সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতে না পারবো, সংবিধানে জবাবদিহিতার আইন প্রতিষ্ঠা করতে না পারব ততক্ষণ পর্যন্ত কেবল সরকার পরিবর্তন করে, দল পরিবর্তন করে, নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের অধিকার আদায় হবে না।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, আজকে সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ এমন কোনো নির্বাচন দেবে না যে নির্বাচনে তারা হেরে যাবে। তাই এদেরকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, আইয়ুব খান যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমরা স্লোগান দিয়েছি রাজ বন্দিদের মুক্তি চাই। এখনো আমরা একই স্লোগান দিচ্ছি। মানুষ জেগে উঠেছে, পাকিস্তানকে যেভাবে রুখে দিয়েছে এ সরকারকেও সেভাবে রুখে দেবে।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্ব সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।  

সমাবেশ থেকে গণতন্ত্র মঞ্চের যুগপৎ আন্দোলের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১১ জানুয়ারি বিভাগীয় গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে জোটটি। ঢাকায় ওইদিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন নেতাকর্মীরা।

সমাবেশ শেষে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণমিছিল বের করা হয়। মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে পুরানা পল্টন, বিজয় নগর, নয়াপল্টন হয়ে কাকরাইল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
এসসি/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।