ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কবিতা

গল্প-আড্ডায় জুয়েল মাজহারের কবিতা পাঠ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৯
গল্প-আড্ডায় জুয়েল মাজহারের কবিতা পাঠ আড্ডার মধ্যমণি কবি জুয়েল মাজহার, মঞ্চে উপবিষ্ট কবিপত্নী শিরীন সুলতানা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ‘আমার বাবার ছবি মুছে দিলো রাতের জঙ্গল/আমার মায়ের মুখ এখনও বেড়াতে আসে পাতাঝরা গাছের মিনারে’ ----বাবা-মায়ের স্মরণে লেখা জন্মাঞ্জলি কবিতার পংক্তিগুলো দিয়ে শুরু হয় কবি জুয়েল মাজহারের কবিতাপাঠ।

তিনটি পর্বে সাজানো কবি ও পাঠকসমাবেশের এই আয়োজনের প্রথম পর্বে নিজ জীবনের নানা অভিজ্ঞতা ও মুহূর্তের কথা তুলে ধরেন কবি।

এসময় কবি বলেন, আমি প্রায় ৪০ বছরের মতো হলো কবিতা লিখছি।

কিন্তু সেগুলো কবিতা হতে পেরেছে কি-না, তা আমি জানি না। কবিতা লেখার মতো পড়াশোনাও আমার করা হয়নি। তবে আমার জীবনের একটা বড় অর্জন আছে। তা হলো অনেক মানুষের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়েছে; খুব সাধারণ সব মানুষ।

কবিতা লেখার অনুপ্রেরণা মানুষ ও প্রকৃতির মাঝে পেয়েছেন উল্লেখ করে কবি বলেন, মানুষ ও প্রকৃতির কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সেখান থেকেই আমি অনুপ্রেরণা পাই। হিমালয়চূড়া এভারেস্টজয়ী তেনজিং নোরগে, অলিম্পিকে খালি পায়ে ম্যারাথন রেসে জেতা ইথিওপিয়ার আবিবি বিকিলা, বাংলার আল মাহমুদ-শামসুর রাহমান থেকে আমার কবিতা অনুপ্রাণিত। আর দক্ষিণ ভারতের ঔপন্যাসিক আর কে নারায়ণ-এর পরোক্ষ প্রেরণা আছে। নিজের জেদের ঘোড়ায় চড়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি।

প্রথম পর্বে মোসাব্বির আহে আলীর সঞ্চালনায় কবি সম্পর্কে কণ্ঠবার্তায় শুভেচ্ছা উপস্থাপন করেন ভারতের কবি জহর সেন মজুমদার, তুষ্টি ভট্টাচার্য, সৌমনা দাশগুপ্ত ও সুদান থেকে রাশিদা সুলতানা। এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কবির উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান কোরিয়া প্রবাসী কবি শাহেদ কায়েস। কবি সম্পর্কে উপস্থিত বক্তব্য রাখেন কবিপত্নী শিরীন সুলতানা। আড্ডার মধ্যমণি কবি জুয়েল মাজহারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন কবিপত্নী শিরীন সুলতানা ও আরেক অতিথি। এরপর কবি জুয়েল মাজহার একে একে পাঠ করেন ‘ক্রমহননের পথ’, ‘দশ পায়ে নাচি’, ‘চান্নিপশর রাইতের লৌড়, ‘শীতের দৈত্য’, ‘রুবিকন’ এবং ‘গোলাপের জন্ম’। এছাড়াও উপস্থিত অতিথিদের অনুরোধে কবি পাঠ করেন ‘দিওয়ানা জিকির’কবিতাটি।

আয়োজনের দ্বিতীয় ধাপে কবি হিজল জোবায়েরের সঞ্চালনায় এক প্রশ্নোত্তর পর্বে কবি বলেন, প্রত্যেক সৃজনশীল মানুষকে নতুন করে শুরু করতে হয়। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই মানুষকে একপর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে ছুড়ে দেয়। কবি এবং শিল্পীর জীবন কোনোভাবেই তৃপ্ত নয়। তাকে ক্রমাগত গন্ধক ও আগুনের নদী সাঁতরে যেতে হয়।
আড্ডার মধ্যমণি কবি জুয়েল মাজহার, মঞ্চে উপবিষ্ট কবিপত্নী শিরীন সুলতানা। কবি-আড্ডায় ঐহিক বাংলাদেশের সম্পাদক মেঘ অদিতি বলেন, প্রতি মাসেই আমরা নিয়মিতভাবে একবার এমন সাহিত্যসমাবেশের আয়োজন করি। এমন আয়োজনে আমরা কবি-সাহিত্যিকদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ আড্ডা ও আলাপচারিতা করতে চাই।  

আশির দশক থেকে কবিতা লিখছেন জুয়েল মাজহার। সেসময় বাংলা কবিতায় যে নতুন মাত্রা যোগ হয়, তাতে জুয়েল মাজহারের নাম গুরুত্বপূর্ণ। এমন অগ্রজদের সঙ্গে নবীন কবিদের এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে ঐহিক বাংলাদেশ।

কবির জীবন, দীর্ঘ সাহচর্য ও কবিতার ওপর আলোচনা করেন  কবি সরকার মাসুদ ও কবি চঞ্চল আশরাফ।

আড্ডায় সাহিত্য-অঙ্গনের অনেকের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ঐহিক বাংলাদেশের সহ সম্পাদক সুমী সিকান্দার, ফরিদা মজিদ, ফাহমিদা মঞ্জু মজিদ, তুষার দাশ, ফরিদ কবির, আশরাফ আহমেদ, শামসেত তাবরেজী, রাজু আলাউদ্দিন, জিল্লুর রহমান, মারুফ রায়হান, সরকার মাসুদ, ব্রাত্য রাইসু, চঞ্চল আশরাফ, ফারুক ওয়াসিফ, তানিম কবির, মিছিল খন্দকার, বিধান সাহা, আলতাফ শাহনেওয়াজ, মামুন খান, সাবেরা তাবাসসুম, সাকিরা পারভিন সোমা, আলম খোরশেদ, মাহিয়া আবরার, নুরেন দূর্দানী, ফারহানা রহমান, নির্ঝর নৈঃশব্দ্য, ফিরোজ আহমেদ বাবু, মাহফুজা শিলু, সানোয়ার মনি, ফাতেমা আবেদিন নাজলা, ড. ফজলুল হক সৈকত, ধ্রুব সাদিক, আফিফি ঈশিতা, রিয়াদ আহমেদ, কবির ছোট বোন হাকিমা আক্তার, কাজী মহম্মদ আশরাফ, ফরিদা মজিদ, পদ্য, মনিকা চক্রবর্তী, ঝর্না ইয়াসমিন, রোজেন হাসান, কাজী লামিয়া এবং তিথি আফরোজ সহ আরো অনেকে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৯
এসএইচএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কবিতা এর সর্বশেষ