ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

বৃষ্টি, বন্যা ও পানিমন্ত্রী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
বৃষ্টি, বন্যা ও পানিমন্ত্রী পানিসম্পদ মন্ত্রীর এলাকাতে বন্যার চিত্র।

বর্ষায়  কদম-কেয়া  ফোটার  দিন আর নেই। নেই ময়ূরের পেখম মেলার দিনও। আকাশ জুড়ে কালো মেঘের  দ্রিমিক দ্রিমিক শব্দ আর অবিরাম বর্ষণেই আজকাল সৃষ্টি হচ্ছে বন্যার মতো চরম পরিস্থিতি। তৈরি হচ্ছে অসহনীয় জলাবদ্ধতা। অলি-গলি-রাজপথ-বাসা-বাড়িতে পানিবন্দি মানুষ ভোগ করছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। ঢাকা, চট্টগ্রামের এই বিপর্যস্ত পরিস্থিতিকে কি নামে ডাকা যায়?

পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার কাজটি স্বপ্রণোদিত হয়ে সেরে ফেলেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রী। সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে পানিসম্পদ মন্ত্রী মারাত্মক একটি মন্তব্য করেছেন।

বলেছেন, দেশে কোথাও বন্যা হয় নি। ’

নদীর পানি ছাড়াও যে বৃষ্টির পানিতেই সব ডুবে যেতে পারে, ভেসে যেতে পারে জনজীবন, তৈরি হতে পারে বন্যা-সদৃশ পরিস্থিতি, সেটা মানতে তিনি নারাজ।   শহরের পানিতে হাবুডুবু লক্ষ লক্ষ মানুষের কথা একবারও না ভেবে মন্ত্রী আরও  বলেছেন, ‘এখন শুধু যমুনার চর ডুবেছে। ’ অথচ বাংলানিউজের সরেজমিন প্রতিবেদনে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে যে, কেবল ঢাকা বা চট্টগ্রামই নয়, খোদ ‘পানিমন্ত্রীর এলাকাতেই পানিবন্দি মানুষ। ’

মানুষের দুর্যোগ, দুর্ভোগে দায়িত্বশীলদের সহনশীল, আশাবাদী, সমবেদনামূলক বক্তব্যের বদলে মন্ত্রীর এহেন উচ্চারণ মোটেও কাংখিত নয়। রাজনীতিবিদ ও দায়িত্বশীলদের অবশ্যই ভেবে-চিন্তে এবং মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝে কথা বলতে হয়। প্রগলভ বা রূঢ় ভাষায় কথা বলা চলে না।

কিছুদিন আগেও ঢাকা উত্তরের মেয়র চিকুনগুনিয়া প্রসঙ্গে একটি বক্তব্য করে সেটা প্রত্যাহার করেছেন। পানিমন্ত্রী অবশ্য মিডিয়া জুড়ে আলোচিত তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেওয়ারও এখন পর্যন্ত প্রয়োজন বোধ করেন নি। মানুষ যে তার কথায় ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হয়েছে, সেটাই সম্ভবত তিনি অনুধাবণ করতে পারেন নি। নিজের এলাকায় পানিবন্দি মানুষ রেখে বন্যা না হওয়ার দাবি করে তিনি যে সত্যের অপলাপ করেছেন, সেটাও তার কাছে কোনও বড় বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।  সিলেটে বন্যা

সন্দেহ নেই, এসব অযাচিত কথায় মানুষের বিরক্তির সঙ্গে সঙ্গে সরকারের ভাবর্মূতিও নষ্ট হচ্ছে। সরকারের নানামুখী উন্নয়ন ও অগ্রগতির কাজ-কর্ম ঢাকা পড়ছে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যে। অন্য একটি দলের সদস্য হলেও তিনি বর্তমান সরকারের অংশ। সমস্যাকে যমুনার চরে পাঠিয়ে না দিয়ে তিনি সমস্যাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতেন। অন্তত তাদের যন্ত্রণার সমব্যথী হতে পারতেন। বৃষ্টির পর পর মেয়ররা যেভাবে মাঠে নেমেছেন, তিনিও সেটা করতে পারতেন। কিন্তু সেটা তিনি করেন নি। এমন কি, নিজের বিপন্ন এলাকাতেও গত এক মাস যান নি। বরং উল্টা  বেফাঁস মন্তব্য করে পরিস্থিতি নাজুক করেছেন।

সামনেই একটি জটিল নির্বাচনের কথা বিবেচনায় রেখে এমন জনবিচ্ছিন্ন বক্তব্য প্রদান করা কতটুকু সুবিবেচনাপ্রসূত হয়েছে, সেটা সংশ্লিষ্টরাই ভালো বুঝবেন। সরকারের প্রধান হিসাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নিশ্চয় সব কিছু লক্ষ্য করবেন। কারণ, সার্বিক বিবেচনায় তার মন্ত্রিসভার টিমটি কেমন কাজ করছে, সেটা তিনিই মূল্যায়ন করবেন। অতীতেও তিনি কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে কাউকে কাউকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছেন, রেখেছেন বা আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন।

‘ডিম আগে না মুরগি আগে’-এর মতো কুতর্ক তৈরি করা নাগরিক বিপদের সময় কাম্য নয়। করণীয় হলো, বিপদ দূর করার ব্যবস্থা নেওয়া। সেটা না করে বৃষ্টি হয়েছে, বন্যা হয় নি বলায় পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে না। কাজের কাজ করতে পারলেই সমস্যার সমাধান হবে। সবাই ‘কথা’ নয়, ‘কাজ’টিই আশা করেন।

এ কথাও সত্য যে, পরিবেশের বিপর্যয় এবং আমাদের অবিমিষ্যকামিতার জন্য পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। খাল-বিল, নদী-নালা, ড্রেন দখল করায় কিংবা পলিথিন ও অন্যান্য বর্জ্য দিয়ে ভরিয়ে ফেলায় পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা বিনষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার পথ না পেয়ে অলি-গলি এবং বাড়ি-ঘরও তলিয়ে দিয়েছে। সমস্যাটি কতকটা প্রাকৃতিক এবং কতকটা মনুষ্য-সৃষ্ট। উভয়বিধ কারণে নগর জীবন এখন জলাবদ্ধতার সমস্যার সম্মুখীন। সমস্যাটি নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্ট দফতর এবং নাগরিক সমাজের সম্মিলিত ভূমিকা ছাড়া সমস্যাটির সমাধান করাও সম্ভব হয় নি। সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ড্রেন বা নালা বানানো যেমন দরকার, তেমনি নাগরিকদেরও সেসব রক্ষা করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা অপরিহার্য। এমন কার্যকর পদক্ষেপের বদলে উর্ধ্ব পর্যায় থেকে অবিবেচনাপ্রসূত কথার মাধ্যমে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সমস্যাকে আরো জটিল ও উতপ্ত করার কোনও মানে হয় না।  
   
এমনিতেই নগরে বসবাসকারী প্রতি নাগরিকই জানেন যে, আকাশ জুড়ে মেঘের মেলা আর বৃষ্টির নিক্কন এখন সামাজিক জীবনে বিড়ম্বনার সমার্থক হয়েই এসেছে। সাহিত্যের ‘বর্ষাদূত’ হাল আমলে ‘ভীতির দূত’ও বটে। বর্ষা বর্তমানে এন্তার সমস্যার নামান্তর। যদিও আবহমান বাঙালি জীবনে ঋতুচক্রে বর্ষার গুরুত্ব অনেক। বর্ষায় বাংলার প্রকৃতি অবগাহন করবে সজীব বারিধারায়। কাব্য কথায় এসেছে, ‘আষাঢ়স্য’ প্রথম দিনেই নাকি কদম বনে হলদে-সাদা মঞ্জুরীর উচ্ছ্বাস বইতে শুরু করে। বাংলা প্রকৃতিতে দৃশ্যমান হতে থাকে স্নিগ্ধতার অন্যরকম আবেশ। সে আবেশ পর্যবসিত হয়েছে বিড়ম্বনায়। বান্দরবানে বন্যা।

বর্ষা নিয়ে কবিতায় বলা হয়েছে, “মেঘে আঁধার হল দেখে/ ডাকতেছিল শ্যামল দুটি গাই,/ শ্যামা মেয়ে ব্যস্ত ব্যাকুল পদে/ কুটির হতে ত্রস্ত এল তাই। /আকাশ-পানে হানি যুগল ভুরু/শুনলে বারেক মেঘের গুরুগুরু। / কালো? তা সে যতই কালো হোক,/ দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ। ” কবি যে বর্ষাকে মানবীর চিত্রকল্পে ‘কালো হরিণ-চোখ’-এর মায়াময়তায় অংকিত করেছেন, সে বর্ষা এখন চোখ রাঙাচ্ছে নিরাপদ জীবনকে। অতলে তলিয়ে নিয়ে জমা-পানিতে। আমরা সেই পানিকে যথাযথভাবে গ্রহণ ও ব্যবহারের পথ রাখি নি বলেই জীবন নামের পানি হয়েছে কষ্টের কারণ।

প্রচলিত একটি বাংলা জারি গানে আছে: “আইলোরে আষাঢ় মাস /লাগাইলো চারা গাছ/গাছে গাছে ঝগড়া করে/মূল্য বেশি কার?” বর্ষণসিক্ত পরিবেশ বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময় হিসেবেই বিবেচ্য স্মরণাতীতকাল থেকেই। সারাদেশে বৃক্ষমেলার আয়োজন হয়ে থাকে এ মাসেই। কিন্তু এ কাজটিও আমরা ঠিক ঠিক করছি না। পাহাড়ের গাছ এবং খোদ পাহাড়টিকেই কেটে ফেলছি। ভূমিধস আর পাহাড়ধসে মরছে তাই অসংখ্য মানুষ।

বঙ্গাব্দের অন্যান্য মাসের মতো বর্ষার দুইটি মাস আষাঢ় ও শ্রাবণের নামকরণও হয়েছে তারার নামে। সে তারার নামে মাসগুলো, অথৈ পানি তাদের বৈভব। যে নবধারা জলে-স্রোতে ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’সহ নিসর্গ চেতনা প্রতিটি প্রকৃতি প্রেমিক মনকেই আলোড়িত করার কথা থাকলেও পরিস্থিতিকে আমরা উপভোগের জায়গা থেকে নিয়ে গিয়েছি বিপদের জায়গায়। ‘কালো হরিণ-চোখ’ কিংবা কদম, শাপলা, পদ্ম, চালতা, কেতকী ফুল ফোটার বর্ষার দেখার উপায় নেই জমে আবদ্ধ বিপন্ন নাগরিকের।

অথচ একমাত্র ‘কবি শেখর’ কালিদাসই বর্ষা ঋতুকে নিয়ে কমপক্ষে ত্রিশটি কবিতা লিখেছেন। ‘ছন্দের জাদুকর’ খ্যাত কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের বর্ষাকেন্দ্রিক কবিতাগুলো হলো ‘বর্ষা’, ‘ইলশে গুঁড়ি’ ও ‘বর্ষা নিমন্ত্রণ’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বর্ষাপ্রীতি তা রীতিমতো প্রবাদতুল্য। এছাড়া আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লী কবি জসীমউদদীন, শক্তিমান কবি মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা প্রমুখ বর্ষাকে তাদের সাহিত্যকর্মে উপস্থাপন করেছেন বিভিন্ন আঙ্গিকে।

চিত্রশিল্পীরাও বর্ষাকে ক্যানভাসে আঁকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। পটুয়া কামরুল হাসানের ‘বৃষ্টির দিনে খেয়া ঘাট’ শীর্ষক চিত্রকর্মটি আজো অনন্য হিসেবে স্বীকৃত। ফলের সমাহার এ মাসে এসেও লক্ষণীয়। আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, লুকলুকি, জামরুল, লিচু, লটকন -আরও কতো দেশীয় ফল! বিপন্ন নগর জীবনের আক্রান্ত নাগরিকদের পক্ষে বর্ষার নান্দনিক রূপের মতো ফুল-ফলে আমোদিত হওয়াও সম্ভব হয় না। কারণ আমরা প্রকৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বন্ধুতুল্য-প্রকৃতিকেই শত্রুতে রূপান্তরিত করেছি।  

কিভাবে সম্ভব হবে বর্ষার নানা উৎসব উপভোগ করা? যখন জীবনকেই বর্ষার ছন্দময় সময়ে আমরা আক্রান্ত ও বিপদগ্রন্ত দেখতে পাচ্ছি। অথচ বর্ষার আরেক পরিচয় উৎসবের জন্য সুবিদিত। বিশেষ করে ‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’, পালনকারীদের কাছে বড়ই আরাধ্য এ ঋতু। কে না জানে এ মাসে রথযাত্রা উৎসব হয়। হিন্দু শাস্ত্র মতে, পুরীর জগন্নাথের স্মরণে এই উৎসব টেনে নিয়ে যায় এবং স্নান করিয়ে ফিরিয়ে আনে। এই প্রত্যাবর্তনই ‘উল্টো-রথযাত্রা’ নামে পরিচিত। এ উপলক্ষে বসে মেলা। গ্রামবাংলায় তো মেলা মানে সার্বজনীন আনন্দ জোয়ার। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক) সর্বশেষ ১৩৯০ বঙ্গাব্দে প্রণীত ‘বাংলাদেশের মেলা’ গ্রন্থে ৬৮টি বর্ষাকালীন মেলার কথা বর্ণিত হয়েছে। এগুলোর মাত্র ১৬টি ছাড়া বাকি ৫২টিই রথযাত্রা কেন্দ্রিক। রথযাত্রা কিংবা উল্টো-রথযাত্রা মেলা সর্বাধিক সংখ্যক বসে ময়মনসিংহ জেলায়, যার সংখ্যা ১৫টি। এছাড়া বসে জামালপুর, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, পাবনা, যশোর, রাজশাহী, ফরিদপুর জেলায়। তবে ঢাকার ধামরাই ও মানিকগঞ্জের রথযাত্রা উৎসবের খ্যাতি দেশজোড়া। বন্যার দুর্ভোগ

অতএব অফুরন্ত আনন্দ ও উৎসবের বর্ষা উপকারী হলেও ক্রমে ক্রমে আমাদের ব্যবহারিক জীবনের ভুল পদক্ষেপ ও প্রকৃতিবিরোধী অনাচারের কারণে বর্ষার অপকারী নানা দিকও আমাদেরকে অক্টোপাসের মতো চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে। সজল বর্ষা প্রকৃতিতে ফুরফুরে আমেজ আনলেও নদীগুলোতে পানি প্রবাহ বেড়ে, শহরে-নগরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে জনজীবনকে বিপন্ন করে তুলছে। এর দায় বর্ষার না আমাদের? এই পরিস্থিরি জন্য দায়ি কে? প্রকৃতি? নাকি প্রকৃতি বিনাশী মানুষ?

বিদিত যে, বর্ষা পানির সাথে পলি বয়ে এনে সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা হিসাবে বাংলাদেশকে বিনির্মিত করেছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। বর্ষা ঋতুই প্রাণপ্রবাহ জাগিয়েছে সবুজাভ বাংলাদেশের। তাই প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ বর্ষাকে বলেছেন- ‘ধ্যানমগ্ন বাউল, সুখের বাঁশি’। বিদায়ী গ্রীষ্মের পুরোটা জুড়েই যখন ছিল দাবদাহের দাপট, তখন বর্ষাই আনে ‘বরিষ ধারা মাঝে শান্তিরও বারি। ’ মানুষের প্রাণ জুড়ায়। প্রকৃতি আবার জেগে উঠে।

কিন্তু জলবায়ুগত পরিবর্তনের প্রভাবে এবং আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশ বিরুদ্ধ নানা (অপ)পদক্ষেপের কারণে  বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্র্য চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে; ঋতুর ইতিবাচক দিকের চেয়ে নেতিবাচক ও ক্ষতিকর দিকগুলোই বড় হয়ে উঠছে। বর্ষা হয়েছে ‘কারো জন্য পৌষ মাস, কারো জন্য সর্বনাশ’। বিশেষ করে ছুতোর সম্প্রদায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাতদিন কাজ করছে। কাঠের তক্তা ‘রান্দা’ দিচ্ছে, ‘পাতাম’ ঠুকে নৌকা বানাচ্ছে। গলুইওয়ালা নৌকা, কোষা, ডিঙ্গি নৌকা। পানিতে নয়, জলমগ্ন রাস্তাতেও চলছে সেই নৌকা। বর্ষার নতুন পানি পেয়ে সোনা ব্যাঙের দল সমস্বরে গেয়ে উঠছে ‘গ্যাঁকো-গ্যাঁকো’, মাছ শিকারে নামছে পেশাজীবী, সৌখিন মানুষ। উৎফুল্ল ময়ূরের মতোই চিন্তাশীল-ভাবুকেরা মনের পেখম তুলে অনির্বচনীয় অভিব্যক্তি প্রকাশ করছে। অনেকেই আনুষ্ঠানিকতায় বর্ষাকে বরণ করছে। সর্ব-সাধারণ নগরজীবনে বর্ষার কুপ্রভাব, প্রকোপ ও পানিবন্দিত্ব কাটাতে লড়াই করছে।

এমনই একটি ভালো-মন্দ মেশানো পরিস্থিতিতে পানিমন্ত্রীর তরফে অযাচিত ও অনাকাক্ষিত  বক্তব্যটি না দিলে কি ক্ষতি হতো!

ড. মাহফুজ পারভেজ, অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।