ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপন্যাস

নীল উড়াল: দ্বাবিংশ পর্ব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
নীল উড়াল: দ্বাবিংশ পর্ব নীল উড়াল

নায়ক ম্যাকগিল ভার্সিটির অধ্যাপক-লেখক-অভিবাসী বাংলাদেশি। ফরাসি সুন্দরী মার্গারেট সিমোনের প্রণোদনায় দেশে মাদকচক্র নিয়ে গবেষণাকালে ঘটনা মোড় নেয় রোমাঞ্চকর বাঁকে। আসে ধুরন্ধর বন্ধু-অসৎ ব্যবসায়ী এনামুল, সুন্দরী স্টাফ রোকসানা, মধুচক্রের জেনিফার-মলি-পরী, ক্লিনিকের অন্তরালের মিসেস খোন্দকার, রমনার শফি মামা ও ফুলি, ‘উড়াল যাত্রা’র সাইফুল, বিড়ালের কুতকুতে চোখের তরুণ সাংবাদিক ফরমানউল্লাহ এবং ছোটখালার রহস্যময় মেয়ে অন্তরা। প্রেম ও বেঁচে থাকার যুগল উড়ালে কাহিনী আবর্তিত হতে থাকে।

২২.
রাতের রমনার অভিজ্ঞতা আর পরদিনের অন্যান্য তথ্যগুলো নোট করে রাখছি। সাইফুলের সঙ্গে ‘উড়াল যাত্রা’ মন্দ হয় নি।

বিচিত্র মানুষের কাছ থেকে পাওয়া বিচিত্র সব তথ্য। শেকড়ে ধরা গেলে পুরো গাছটিই আয়ত্তে আসবে। পুরো অবয়বটিও তখন সঠিক আকারে দেখা যাবে। মাদকচক্রের বৃত্তগুলোকে ভেঙে ফেলা হলে অপরাধের পুরো অবয়বটিই প্রকাশিত হবে। সকাল কেটে গেল রিসার্সের হোম ওয়ার্কে। মামা আর ফুলির কথা মনে পড়ল। আরেক দিন সময় করে ওদের কাছে গিয়ে কাটাতে হবে। পঙ্কে নিমজ্জিত হয়ে ভেতরটা স্বচ্ছ রেখেছে এই অতি প্রান্তিক মানুষগুলো।

নীল উড়াল: একবিংশ পর্ব

দুপুরের মুখে বের হলাম। মহাখালী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. ইমদাদকে পাওয়া গেল না। তিনি এখন লেকচার ট্যুরে অস্ট্রেলিয়ায়। আপাতত তার দেখা পাওয়া যাবে না। অফিস থেকে জানালো, ড. ইমদাদের দু’টি বই আছে মাদক নিয়ে। একটি ইংরেজিতে। আরেকটি বাংলায়। বইগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার লাইব্রেরিতে আছে। আমি ইচ্ছে করলে ওখানে বসে পড়তে পারি। প্রয়োজনীয় নোটও নিতে পারি।

সেমিনার লাইব্রেরিটি অতি সুন্দরভাবে সাজানো। থরে থরে বই, পত্র-পত্রিকা, জার্নাল। দেয়াল থেকে দেয়াল পর্যন্ত বই আর বই। বাংলাদেশে ব্যাঙের ছাতার মতো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গজিয়ে উঠলেও সবগুলোর মান ভালো নয়। কিছু কিছু ভালো করার চেষ্টা করছে।
ড. ইমদাদের বই খুঁজে পেতে দেরি হলো না। এক কোণের একটি টেবিলে বই দু’টি নিয়ে বসেছি। অনেক দিন পর আবার পড়াশোনা করতে ভালোই লাগছে। কানাডার ক্যাম্পাসের কথা মনে হলো। বহু দিন হয়ে গেল বাইরে আছি। স্মৃতি ও সত্ত্বার জায়গাগুলো, প্রিয় ও চেনা মুখগুলো তো মনে পড়বেই।

বইগুলো গভীর গবেষণাপ্রসূত। পিএইচডি পর্যায়ের অভিসন্দর্ভ। ভদ্রলোক যথেষ্ট পরিশ্রম করে লিখেছেন। বেশ বুঝা যায়। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ড্রাগসের আদিম ও আধুনিক ব্যবহার, মানুষের শরীরে ও স্নায়ুতন্ত্রে মাদকের নানামুখী প্রভাব ইত্যাদি বিষয় তিনি অতি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। ক্ষমতা কাঠামো থেকে ব্যক্তি মানুষ পর্যন্ত প্রলম্বিত মাদক ব্যবসার জটিল জালটিকে উন্মোচনের চেষ্টা করেছেন তিনি। তবে তার ফোকাস উপনিবেশিক শাসন ও শোষণের সঙ্গে মাদকের ব্যবসায়িক সংযোগ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার মডেলটিকে স্থাপন করে অগ্রসর হওয়া গেলে চমৎকার ফল পাওয়া যাবে। আজকের নব্য-সাম্রাজ্যবাদ বিশ্বায়নের নামে যেভাবে বিশ্বকে দখল করছে, তাতে মাদক, অস্ত্র অন্যতম হাতিয়ার। ড. ইমদাদের বইয়ে চিন্তার প্রচুর খোরাক পাওয়া গেল। বেশ কিছু অংশ নোট করে নিলাম। অনেকগুলো পাতা ফটোকপিও করা হলো। ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হলে ভালো হতো। কথা বলে আরও অনেক কিছু জানতে পারতাম। সেটা আপাতত সম্ভব নয়।

শেষ বিকেলে লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে দেখি পথ-ভর্তি অফিস ফেরত মানুষের স্রোত। ঢাকার এই অভিজাত অংশের সংস্কৃতি নগরের অন্যান্য অংশ থেকে আলাদা। প্রচুর বিদেশির দেখাও পাওয়া যাচ্ছে। ভবন ও অফিসগুলোর মতোই লোকগুলো কেতা-দুস্তর। দেখে কে বলবে, বাংলাদেশ একটি দরিদ্র্য দেশ! এখনকার ছেলেমেয়েদের পোশাক ও জীবন ধারণেও পশ্চিমের আধুনিকতার কড়া ছাপ। থার্টি ফাস্ট নাইটসহ বিভিন্ন পশ্চিমা উৎসবের শেষে এসব রাস্তা উপচে পড়ে খালি বোতলে। রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। বেপরোয়া তরুণদের সামলাতে মাঠে নামতে হয় পুলিশ বাহিনীকে। নির্ঘাৎ এখানেও রয়েছে বেশ ক’ জন আধুনিক মামা। রমনার অন্ধকারের মতোই এই আলোকোজ্জ্বল আয়োজনের নীচে জমে আছে চাপ চাপ অন্ধকার, পাপ, স্খলন, পতন ও বিকার।

পাশ থেকে কে যেন আমাকে ডাকছে। চেয়ে দেখি অন্তরা। সে আবার ডাকলো:
-ভাইয়া!
ঝড়ের বেগে পাশে এসে একটি গাড়ি কড়া ব্রেক করলো। সজোরে গাড়ি থামার শব্দ আর ‘ভাইয়া’ ডাকে চমকে উঠলাম। গাড়ির ভিতর থেকে অন্তরা হাত নাড়ছে:
-উঠে এসো।
উঠতে উঠতে আমি বলি:
-তুই এখানে কি করিস।
হাসছে অন্তরা:
-নাথিং। জাস্ট ড্রাইভিং।
আমিও মজা করে বললাম:
-মনে হচ্ছে আমাকে ফলো করছিস।
অন্তরা কপট রাগত স্বরে বললো:
-একদম না। তোমাকে যারা ফলো করার, তারা ঠিকই করছে। আমার ফলো করার দরকার নেই।
আমি সংক্ষেপে বললাম:
-হুম। হবে হয়তো!
অন্তরা প্রসঙ্গান্তরে গিয়ে বললো:
-তা এখানে কি করছ?
আমি সব কথা না বলে শুধু বলি:
-একটা কাজে এসেছিলাম। কাজ শেষ। চলে যাচ্ছি।
অন্তরা জানতে চাইলো:
-কোথায় যাবে? তোমাকে নামিয়ে দিই?
আমি বলি:
-সামনেই। ফাহিম মিউজিকে। বেগম আখতার বা শিপ্রা বসুর গানের সিডি পাই কি না দেখি।
অন্তরা শব্দ করে হেসে বললো:
-অহ হো! সেই ওল্ড ফ্যাশন। বদলাও বদলাও। বদলে দাও। বদলে যাও। শ্লোগান শুনছ না আজকাল? আমেরিকায় চলছে। এখানেও। পরিবর্তন। চেঞ্জ। তুমি তো ওসব শুনবে না। আদিম পাথরের মতো শরীরে শ্যাওলা জমিয়ে বসে থাকবে।    

আমি ভাবছি, চেঞ্জ, পরিবর্তন! বেশ মজার শব্দ এসে জুটেছে। কি পরিবর্তন, কতটুকু পরিবর্তন, কার জন্য পরিবর্তন, সেটা জানার আগেই বদলে ফেলার চিৎকার! পরিবর্তন মানেই উন্নয়ন নয়। একটি ইটকে ডান থেকে বামে সরালে পরিবর্তন হবে নিশ্চয়। উন্নয়ন হবে কি? ইটটিকে দালালে বা দেয়ালে পরিকল্পনার সঙ্গে গেঁথে দিতে পারলে যে পরিবর্তন হবে, তাতে উন্নয়ন হবে। এমন ইতিবাচক পরিবর্তন দরকার। মানুষ-জনকে কেবলই পোশাকে, খাবারে, জীবন-যাপনে, ভোগে-বিলাসে পরিবর্তন করে দিলে হলো? হলো না। ওর মন ও মগজের অন্ধকার আলো দিয়ে পরিবর্তন করা না হলে বাইরের পরিবর্তনে কিছুই হবে না।
অন্তরার কথায় আমার ভাবালুতা কেটে গেল। সে বললো:
-কি ভাবছো ভাইয়া?
আমি সম্বিত ফিরে পেয়ে বলি:
-নাহ! কিছু না।
হঠাৎ সে প্রস্তাব করলো:
-চল, কোথাও বসি। কতদিন পর তোমাকে কাছাকাছি পেলাম। চল, কিছুক্ষণ এক সঙ্গে কাঁটাই।
অন্তরা বোধ হয় সে দিনের কথা মনে রাখে নি। কিংবা ইচ্ছে করেই তুলছে না। ব্যক্তিগত বিষয় যখন সে আড়াল করে রাখতে চায়, আমার আর তুলে কাজ কি? কিন্তু তার মধ্যে কিসের হতাশা, অপ্রাপ্তি? কেন তাকে ঘিরে নেশার জগত? ওর প্রতি আমার কি কোনও দায়বোধ নেই? বেশ। কিছুটা সময় না হয় বসি ওর সঙ্গে। কথা বলে দেখি, ওকে কিছুটা সাহায্য করা যায় কি না।

অন্তরা তাড়া দিল:
-কি হলো ভাইয়া! কোথায় গাড়ি থামাবে? চা-কফি, না হার্ড কিছু?
আমি মৃদু হেসে বলি:
-তুই ভালোই জানিস। আমি কোথায় বসবো। কি খাবো?
অন্তরা কপট দুঃখিত হওয়ার ভান করে বললো:
-সরি, সরি। বুঝতে পেরেছি।

অন্তরা একটি কফি শপের সামনে গাড়ি দাঁড় করালো। এমন আড্ডাখানা এখন ঢাকায় অনেক। তরুণ-তরুণীরা ভিড় করে আছে। ফাস্ট ফুড, কুইক ফুড, জাঙ্ক ফুডের যুগ চলছে এখন।
কফি শপটি মনোরমভাবে সাজানো। মোহনীয় আলো-আঁধারীর খেলা। অনেকগুলো সোফা নান্দনিক ভঙ্গিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। বেশ প্রগাঢ়ভাবে অনেক জুটি বসে আসে। মত বিনিময় না মন বিনিময় করছে, বুঝা মুশকিল। কাউন্টারে ক্লাব স্যান্ডুয়েচ আর কফির কথা বলে অন্তরা আমার হাত টানতে টানতে কোণের একটি সোফায় মুখোমুখি বসলো। আজ তাকে বেশ উচ্ছ্বল, প্রাণবন্ত, সতেজ আর মন-ভালো লাগছে। যদিও ওর চোখের নীচের চাপা কালচে দাগ আমার দৃষ্টি এড়ালো না। বসতে বসতে আমি বলি:
-বল, কেমন আছিস? কাজ-কর্ম কেমন চলছে? আসলে লাইফ প্ল্যান কি তোর?
অন্তরা মুখ বাঁকিয়ে আদুরে গলায় বললো:
-আজ এসব নিয়ে কথা বলবো না।
আমি জিজ্ঞেস করি:
-তবে কি নিয়ে কথা বলবি?
আচানক সে বলে বসলো:
-আজ তোমার হাত ধরে বসে থাকবো।

বলে সত্যি সত্যিই আমার হাত ধরে নিশ্চুপ বসে রইল। ওর অপলক চোখ আমার চোখে। মৌন ধ্যানের মধ্যে দিয়ে সে যেন মোম শিখার মতো আস্তে আস্তে গলে গলে পড়ছে। বেয়ারা খাবার রাখতে না এলে অন্তরা বোধ হয় হাত ছেড়ে স্বাভাবিক হতোই না। আমি কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে ওকে জিজ্ঞেস করি: -বল না, আসলে তোর কি হয়েছে?
একটি সম্পূর্ণ দীর্ঘশ্বাস সময় নিয়ে ছেড়ে সে ম্লান কণ্ঠে বললো:
-আমার কিচ্ছু হয় নি। হবেও না। তোমার হয়েছে।

ওর উত্তরে অবাক হলাম আমি:
-আমার?
অন্তরা জোরের সঙ্গে বললো:
-হ্যাঁ, তোমার। তোমার ভিতরের যন্ত্রটা আরও জঘন্য হয়েছে। আসলে তুমি কি? মানুষ? না যন্ত্র?
আমি আস্তে আস্তে জানতে চাই:
-কেন এমন করে বলছিস? তোর সমস্যা কি?
অন্তরার আদুরে, আহ্লাদি গলা থেমে গেল। স্থির ও স্বাভাবিক স্বরে সে বলল:
-আসলে তোমাকে আমি একদম বুঝতে পারি না। পৃথিবীতে কেউ পারবে বলেও মনে করি না। আবেগ, ভালোবাসা, প্রেম-এসব তোমার কাছে নেই। ইনফ্যাক্ট, হিউম্যান ইমোশন বলেই তোমার কিছু নেই।
আমি স্পষ্ট করে জানতে চাই:
-কি করে তোর এমন মনে হলো?
উত্তর দিতে দেরি করলো না সে:
-তোমার জীবন দেখে, জীবন-যাপন দেখে।

আমি অপার বিস্ময়ে অন্তরার দিকে চেয়ে রইলাম। আমার জিজ্ঞাসু চোখের দিকে তাকিয়ে সে বললো:
-মানবিক আবেগ থাকলে তুমি এভাবে নিজেকে, নিজের জীবনকে কষ্ট দিতে পারতে না। শেলী আপা তোমার প্রেমকে অস্বীকার করে ইংল্যান্ড চলে গেলেন। তুমি একটি কথাও বললে না। শেলী আপা পরে আমাকে বলেছেন, তিনি চেয়েছিলেন, তুমি তাকে অপেক্ষা করতে বলবে। ধরে রাখবে। যেতে দেবে না। তুমি নির্লিপ্তের মতো কিছুই করলে না। কেউ জানতে চাইলে শুধু বলতে, ‘আমি কারও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করি না। ’ প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা দূরে থাকুক, কালবিলম্ব না করে তুমি বাবা-মায়ের পছন্দের মেয়েকে একবারও না দেখে, না কথা বলে বিয়ে করে ফেললে! চারপাশে তাকিয়ে দেখলে না, আর কেউ তোমাকে ভীষণভাবে প্রত্যাশা করছে কি না। বরং একদিনের নোটিশে দেশত্যাগ করে স্থায়ীভাবে বিদেশে চলে গেলে। সেখানে পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে খুবই আলগাভাবে তাদের সঙ্গে বসবাস করছ। আমরা সব খবরই পাই। তুমি একজন পরাজিত মানুষ। ব্যর্থ প্রেমিক। বিবাগী পুরুষ। নিজের কষ্টকে লুকানোর জন্য নিজেকে যন্ত্রের মতো করে রেখেছ।

অনেক কথা বলে অন্তরা থামল। এতক্ষণ আমার চোখে চোখ রেখেছিল সে। এখন মাথা নীচু করে মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি স্থান-কাল ভুলে ওর মাথায় হাত রেখে কিছুটা কাছে টেনে নিলাম। তড়িৎ প্রবাহের মতো অন্তরার পুরো শরীর কেঁপে উঠার স্পন্দন আমাকেও নাড়িয়ে দিল। আমি ভরা গলায় বললাম:
-তুই যা ভাবছিস আমার সম্পর্কে, সেটা একদম ভুল। কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। কিছু কিছু ভুল আছে, যেগুলো শুধরে দেওয়া যায় না। একদিন হয়ত তুই নিজেই সেটা বুঝতে পারবি।
অন্তরা ধীরে ধীরে মুখ তুলে কম্পিত কণ্ঠে বলল:
-তা-ই যেন হয়।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলাম। কফি শপের কোলাহল ও  গানের উচ্চ শব্দে শুনতে পেলাম না অন্তরা বিড় বিড় করে বলছে: ‘যে দিন তোমাকে ঠিক ঠিক বুঝতে পারবো আর তখন তোমাকে যদি আবার আগের মতো একেলা পাই, তাহলে আমি ছাড়া তুমি আর কারও হতে পারবে না। ’

মানুষের জীবন আসলে বড়ই বিচিত্র। অদ্ভুত এই মানব জীবন! এখানে সেখানে কত অপ্রয়োজনীয় কথা শোনার ইচ্ছা না থাকলেও শুনতে হয়। অথচ কত দরকারি কথা সময় মতো শোনা হয় না।

আমি ঘুর্ণাক্ষরেও জানতে পারি নি যে, অস্ফুটে বলা অন্তরার শেষ কথাগুলো শোনা আমার জন্য কত জরুরি ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

উপন্যাস এর সর্বশেষ