ঢাকা: ‘আফা, ভাইজান, স্যার দিমু এখন মালা...লন না একখান গুলাপ, ভাইয়া আফারে কিইন্না দেন না একখান ফুল...’ গাড়ির গ্লাসে টোকা দিয়ে অথবা রিকশায় বসা অবস্থায় পাশ থেকে কাপড় এঁটে ধরে এমন আবদার ঢাকা শহরে নতুন নয়। আবদারকারীর বয়স চার থেকে ১২-১৩।

যানজটে রিকশা, অটোরিকশা, প্রাইভেট কারসহ যে কোনো বাহন থামলেই জানালার পাশে চলে আসে এসব পথশিশু।

যানবাহনের জানালার পাশে গিয়ে যাত্রীদের কাছে এসব শিশুদের থাকে মানবিক আবেদন, ‘স্যার একটা ফুল ন্যান স্যার’ অথবা ‘আফা একটা মালা ন্যান’। তাদের এই আবেদনে সাড়া দিয়ে কেউ হয়ত ফুল নেয়, কেউ নেয় না।

পহেলা বৈশাখ, ভালোবাসা দিবস কিংবা অন্য অনুষ্ঠানে সড়কগুলোতে বেড়ে যায় এসব ফুলশিশুদের ভিড়। যখন সবাই মেতে উঠছে আনন্দ উৎসবে, তখন এই শিশুরা ব্যস্ত পরিবারের ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে।

কখনও কখনও একটা ফুল বিক্রির জন্য তারা হয়ে ওঠে নাছোড়বান্দা। ফুল না নেওয়া পর্যন্ত পাশ থেকে সরতেই চায় না।

প্রচণ্ড রোদে বা তীব্র শীতে অন্যরা যখন যানবাহনের গ্লাস বন্ধ করে আরামে বসে আছেন, তখন ফুল হাতে জীবন যুদ্ধ করছে এই শিশুরা।

কখনো আবার প্রাইভেটকারের কালো গ্লাস ভেদ করে দৃষ্টি পৌঁছানো না গেলে গ্লাসে চোখ লাগিয়ে বিশেষ কায়দায় গাড়ির ভিতরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তারা।

শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এসব দরিদ্র শিশু ফুল বিক্রি করে পরিবারে অর্থকড়ি যোগান দেয়। কখনও কী ফুলের মতো কিংবা ফুল হয়ে ফুটবে এই শিশুরা!
বাংলাদেশ সময়: ০১০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৬
এইচআর/এএ