ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিদেশ যাওয়া কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে ৩০ শতাংশ

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
বিদেশ যাওয়া কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে ৩০ শতাংশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: চলতি বছর ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত  বিদেশ গিয়েছেন পাঁচ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছর  প্রায় ৩০ শতাংশ অভিবাসন বেড়েছে।



একইসঙ্গে গতবছরের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিমাণও বেড়েছে ১.৮ শতাংশ। এ তথ্য জানিয়েছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)।

রোববার (২৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আন্তর্জাতিক শ্রম অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি ২০১৫: সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. তাসনিম সিদ্দিকী।

রামরু’র বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার ছয়শ’ ৬৭ জন বাংলাদেশি বিদেশ গিয়েছেন। যা ২০১৩ সালের প্রবৃদ্ধির তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি। ২০১৪ সালে বিদেশ যান চার লাখ ২৫ হাজার ছয়শ’ ৮৪ জন।

আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন নীতি ও কর্মপরিকল্পনার সীমাবদ্ধতা বিগত বছরগুলোতে অভিবাসন বৃদ্ধি না পাওয়ার কারণ হিসেবে গবেষণায় চিহ্নিত করেছে রামরু।

সংস্থাটি জানায়, এ বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১৪ দশমিক ০৪ বিলিয়ন (এক হাজার চারশ’ চার কোটি) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বাংলাদেশে এসেছে। ডিসেম্বরেও এ ধারা অব্যাহত থাকলে গত বছরের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা ১৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। তবে এ বছর শ্রমিকদের বৈদেশিক বিনিময়ের হারে বাংলাদেশি মুদ্রার দরপতনের কারণে রেমিট্যান্সের পরিমাণ যেমন কমেছে, অন্যদিকে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোকে অনুৎসাহিত করেছে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ও মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে মুদ্রা বিনিময় হার।

এমন অবস্থায় শুধুমাত্র অভিবাসী কর্মীর পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে একটি  বিশেষ বিনিময় হার নির্ধারণ জরুরি। এছাড়াও রেমিট্যান্সভিত্তিক সঞ্চয় ও বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে বিনিময় হার প্রদানে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করার সুপারিশ জানিয়েছে রামরু।

রামরু আরো জানায়, গত বছরের মতো এবারও সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ (২১.৪৯ শতাংশ) রেমিট্যান্স আসলেও প্রতিবছরই তার পরিমাণ কমে আসছে। বিগত বছরগুলোতে মোট রেমিট্যান্সের ৫০ ভাগ সৌদি আরব থেকে এসেছে, অথচ তা ২১ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে মালয়েশিয়া থেকে আসা রেমিট্যান্স গত বছরের তুলনায় এ বছর বেড়েছে।

রামরু’র দেওয়া তথ্য মতে, এ বছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১৮ দশমিক ১৪ শতাংশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৬ দশমিক ১১ শতাংশ, মালয়েশিয়া থেকে ৯ দশমিক ১ শতাংশ, ওমান থেকে ৬ শতাংশ এসেছে। এছাড়া কুয়েত থেকে এসেছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ; যা গত বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।

রামরু চেয়ারম্যান আরো জানান, এ বছর মোট অভিবাসীর প্রায় ৮০ শতাংশ আরব উপসাগরীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অভিবাসন করেছেন। চলতি বছর ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মী গেছেন ওমানে। যা এবছর মোট পাঠানো কর্মীর প্রায় ২৩ শতাংশ।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কাতার। ২০১৫ সালে দেশটিতে গেছেন এক লাখ ২০ হাজার পাঁচশ ৭৯ জন কর্মী। যা মোট অভিবাসনের ২২ দশমিক ৪ শতাংশ। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশি কর্মী গ্রহণের ক্ষেত্রে গত বছর তৃতীয় অবস্থানে থাকা সিঙ্গাপুরকে এবার পেছনে ফেলেছে সৌদি আরব। দেশটিতে এ বছর ৫৫ হাজার চারশ’ ২৮ জন বাংলাদেশি কর্মী প্রবেশ করেছেন। যা এবছর মোট অভিবাসনের ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। আর সিঙ্গাপুরে গেছেন ৫৪ হাজার ৬৩ জন বাংলাদেশি কর্মী। যা গত বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ কম।

মালয়েশিয়ার সঙ্গে সরকার জিটুজি’র পদ্ধতি পরিবর্তনের চেষ্টা করছে উল্লেখ করে রামরু জানায়, এ বছরের ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়া গেছেন ২৮ হাজার ছয়শ’ ২৬ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। গত সাত বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত পুরুষ বাংলাদেশি কর্মীর উপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখায় এবছর দেশটিতে গেছেন মাত্র ২৪ হাজার আটশ’ ৯৮ জন নারী কর্মী।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রামরু’র সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. সি আর আবরার, গবেষক আনসারউদ্দিন আনাস, আবুল বাসার প্রমখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫
জেপি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।