সাতক্ষীরা: অপহরণের পর দস্যুদের দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করেছে পরিবার। ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে পাঁচদিন।
গত সপ্তাহে মাছ ধরতে গিয়ে সুন্দরবনের ফিরিঙ্গি ও ডিঙিমারী এলাকা থেকে অপহরণের শিকার হন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর গ্রামের মৃত নেছার শেখের ছেলে মফিজুর রহমান (৪৫) ও আশরাফ আলী গাজীর ছেলে ও আব্দুর রহিম (২৮)।
এদিকে সুন্দরবনের আগুনজ্বালা নামীয় এলাকা থেকে একই বাহিনীর হাতে অপহরণের শিকার রবিউল ইসলাম তিনদিন পর রোববার বাড়িতে ফিরেছে বলে জানা গেছে।
দস্যুদের হাতে জিম্মি দুই জেলের স্বজনসহ তাদের সহযোগী জেলেরা জানান, গত সপ্তাহে মাছ শিকারে যাওয়ার পর দুলাভাই বাহিনীর পরিচয়ে একদল দস্যু মফিজুর ও আব্দুর রহিমকে অপহরণ করে। পরবর্তীতে উভয়ের মুক্তিপণ বাবদ ৭৫ হাজার (একজনের ৩৫ হাজার, অন্য জনের ৪০ হাজার) টাকা দাবি করা হয়। একপর্যায়ে দাবিকৃত টাকা বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধের পরও জিম্মি দুই জেলেকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
ফিরে আসা জেলেরা আরও জানান, নয় সদস্যের দস্যু দলটি নিজেদের ‘দুলাভাই’ বাহিনী হিসেবে দাবি করে। তবে ইতোপূর্বে গাজী বাহিনী পরিচয়দানকারী দস্যুদের দুলাভাই বাহিনীতে দেখা গেছে।
ফিরে আসা জেলেদের দাবি, কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর এলাকার আবজাল ও তার শ্যালক একই উপজেলার রবিউল এই বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছে। এসব দস্যুরা বিগত ২০১৮ সালে র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও আবারও তারা সুন্দরবনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। উক্ত বাহিনীর নয় সদস্যের প্রত্যেকে একটি করে অস্ত্র বহন করছে বলেও জানা গেছে।
এসব বিষয়ে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মশিউর রহমান জানান, অপহরণের শিকার জেলেদের স্বজনরা এসব বিষয় তাদের কাছে গোপন করে। বরং কাউকে কিছু না জানিয়ে দস্যুদের সঙ্গে আপস করে টাকার বিনিময়ে স্বজনদের ফিরে পাওয়ার চেষ্টা চালায়।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর মোল্যা জানান, অপরাপর বাহিনীর সহায়তা ছাড়া সুন্দরবনের ভেতরে অভিযান চালানো দুরূহ ব্যাপার। অপহরণের শিকার জেলেদের স্বজনরা তাদের কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ করেনি। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে তারা গোপন সমঝোতায় স্বজনদের মুক্তির চেষ্টা চালায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৫
আরএ