ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ থেকে ৫ দফা ঘোষণা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তারা প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রধান বিচারপতি বরাবর এসব দাবি নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করবেন।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন না হলে পুনরায় মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
রোববার (৯ মার্চ) রাজু ভাস্কর্য থেকে তারা এসব দাবি ঘোষণা করেন। পাঁচ দফার প্রথম দুটি দফা ঘোষণা করেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আশরেফা খাতুন এবং বাকি তিনটি দফা ঘোষণা করেছেন জুলাই অভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্মের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।
তাদের ৫ দফার মধ্যে রয়েছে-আছিয়ার মামলার ক্ষেত্রে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে সাতদিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা এবং একমাসের মধ্যে আছিয়ার ধর্ষকের বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ নিশ্চিত করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন আছিয়ার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
-প্রত্যেক ধর্ষণ মামলার বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত মামলার বিচার কার্য সম্পন্ন করে সব ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
-নারী ও শিশুর নিরাপত্তার প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টার ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে জবাবদিহি করতে হবে।
- সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে ‘নারী ও শিশু নিপীড়নবিরোধী সেল’ গঠন ও সেলের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। সারাদেশে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
- ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইবার বুলিং সংক্রান্ত আইনের সংশোধন করে অপরাধের স্পষ্ট ও যথাযথ সংজ্ঞায়ন করতে হবে।
এ ছাড়া উমামা ফাতেমা ৫ দফার বাইরে আরও কিছু দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিটি বিচারের তদন্তকাজে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত, বিচারিক প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধ, দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করার জন্য প্রধান বিচারপতির নির্দেশনায় দেশের সমস্ত বিচারককে তৎপর ভূমিকা পালন করা।
দাবি উত্থাপনের পর উমামা পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে বলেন, আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রধান বিচারপতি বরাবর ৫ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি প্রদান করবেন তারা। এ সময়ে অনলাইন এবং অফলাইনে এ দাবির পক্ষে জনমত গঠন করবেন। এছাড়া তিন কার্যদিবসের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন না হলে সবাইকে নিয়ে পুনরায় মাঠে নামবে তারা।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টা থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা রাত ৮টায় রাজু ভাস্কর্য থেকে মশাল মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বর, হল এলাকা, কেন্দ্রীয় মসজিদ হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে আসে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৫
এফএইচ/আরএ