ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

খাল পরিচ্ছন্নতা কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে স্কুল শিক্ষার্থীরা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫
খাল পরিচ্ছন্নতা কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে স্কুল শিক্ষার্থীরা

আমরা নিজেরাই খাল পরিষ্কার করবো, খালগুলো পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদেরই দায়িত্ব- এমন ঘোষণা দিয়েছে খাল পরিষ্কার কর্মসূচির প্রধান অতিথি হযরত আয়েশা (রা) একাডেমির চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী নীহা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার কল্যাণপুর খালে রেড অরেঞ্জ কমিউনিকেশন আয়োজিত খাল পরিচ্ছন্নতা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলে সে।

তার এই বার্তা রাজধানীর জলাশয়ে প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে তরুণ ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগের দৃঢ় সংকল্পকেই তুলে ধরে;  একাজে শিক্ষক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) তাদেরকে সমর্থন যুগিয়েছেন।

মোহাম্মদপুরের আদাবরে প্রতিষ্ঠিত হযরত আয়েশা (রা) একাডেমির শিক্ষকরা প্রথমে ‘খাল বাঁচলে, বাঁচবে নগর’ প্রচারণা সম্পর্কে জানে। পরে তারা কল্যাণপুরের নবদিগন্ত আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে প্লিজ প্রকল্পের অধীনে অনুষ্ঠিত একই ধরনের অনুষ্ঠান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে উদ্যোগতাদের নিজেদের স্কুলে নিয়ে আসে।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রেড অরেঞ্জের একটি দল হযরত আয়েশা (রা) একাডেমিতে একটি প্রচারণা চালু করে। সেখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা হয়। পরে তথ্যপত্র বিতরণ ও সমস্যা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। রেড অরেঞ্জের পক্ষ থেকে খাল পরিষ্কার কর্মসূচি চলাকালীন শিক্ষার্থীদের পরিবারকে সম্পৃক্ত করার জন্য উৎসাহিত করা হয়।

তাদের উদ্দেশ্য বলা হয়, তোমাদের বাবা-মা কীভাবে প্লাস্টিক ব্যবহার করেন জিজ্ঞাসা করো; এই আবর্জনা গুলো কোথায় যায়? শিক্ষার্থীরা সচেতনতার উদ্দেশ্য এ বার্তা গ্রহণ করে এবং বাড়িতে প্লিজ প্রকল্পের উপকরণ শেয়ার করে এবং প্লাস্টিকের দায়িত্বশীল ব্যবহার নিয়ে আলোচনা শুরু করে। শিক্ষকরা এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এটি খুবই চমৎকার। আমাদের ছাত্রদের এ ধরনের কার্যক্রমে আরও অংশগ্রহণ করা উচিত।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) তত্ত্বাবধানে হযরত আয়েশা (রা.) একাডেমির শিক্ষার্থীরা প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেয়, আর শিক্ষকরা ছিলেন বিশেষ অতিথি।

দূষিত জলাশয় পরিষ্কারের সময় শিক্ষার্থীরা বলে, আসুন পরিষ্কার করি এবং সবাইকে দেখাই কীভাবে এটি করা যায়।

ডিএনসিসির প্রতিনিধিরা তাদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, আমরা গর্বিত, তোমরা নিজেরাই পদক্ষেপ নিয়েছ। খাল বাঁচানো মানে শহর বাঁচানো কিন্তু এটি শুধু আমাদের একার কাজ নয়। তোমাদের বাবা-মাকে বলো; সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে; যার যার ভূমিকা পালন করতে হবে।

শিক্ষকরা বলেন, আমাদের শিশুরা দায়িত্বশীল এবং ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েছে। এই ধরণের ছোটছোট পদক্ষেপ বড় পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যায়। এটি চালিয়ে যেতে হবে।

এই প্রচারণার প্রভাব আর ও সুস্পষ্ট ভাবে তুলে ধরতে ধারাবাহিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীদের হোম ওয়ার্ক, ছবি এবং প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য দিকসমূহ প্রদর্শনী, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনলাইন টক শো এবং আরও অনেক কমিউনিটি-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ। নানা অংশীজন এবং মিডিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হবে এই কার্যক্রমে অংশ নিতে এবং দেখতে যে কীভাবে ছোট পদক্ষেপ বড় পরিবর্তনের সূচনা করছে।

রেড অরেঞ্জ কমিউনিকেশন ডেপুটি ডিরেক্টর, অপারেশন সামিউল ইসলাম বলেন, আমরা যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি সেটি মূলত জন সচেতনামূলক একটি কাজ। কারণ আমরা বিশ্বাস করি সচেতনতা না সৃষ্টি করা গেলে খাল বাচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে খাল বাঁচলে বাঁচবে রাজধানী।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।