ঢাকা, শুক্রবার, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বে সহপাঠীদের মারধর, লঞ্চঘাটে আইএইচটির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বে সহপাঠীদের মারধর, লঞ্চঘাটে আইএইচটির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ লঞ্চঘাটে আইএইচটির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।

বরিশাল: মেয়ে সহপাঠীদের মারধরের প্রতিবাদে বরিশাল নদী বন্দরে বিক্ষোভ করেছেন ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা। তাদের বিক্ষোভের মুখে স্টাফরা ঘাটে এমভি শুভরাজ-৯ লঞ্চ বেঁধে রেখে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌ পুলিশ ও আইএইচটি অধ্যক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

আইএইচটি বরিশালের শিক্ষার্থী বৈশাখি ও রনি জানান, ১৬ ফেব্রুয়ারি তারা ৮ জন বরিশাল থেকে এমভি শুভরাজ-৯ লঞ্চে চেপে ঢাকা যান। ওইসময় চুক্তির থেকে চারটি টিকিট বেশি টিকিট লঞ্চের স্টাফরা তাদের দেয়। যা পরেরদিন লঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার পর শুভরাজ-৯ লঞ্চের স্টাফরা জানতে পারেন। এরপর তারা সেই চার টিকিটের টাকা চেয়ে সারাদিন অনবরত ফোন দেন এবং মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দেন।

রনি বলেন, তাদের কাজ শেষে সবাই আবার ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা সদরঘাটে আসে বরিশালে আসার জন্য। কিন্তু এমভি মানামী লঞ্চে ওঠার পরপর শুভরাজ-৯ লঞ্চের একাধিক স্টাফ তাদের ৮ জনের ওপর হামলা চালায়। এসময় মেয়ে সহপাঠী বৈশাখি, পূজাসহ আমরা ৪/৫ জন তাদের হামলার শিকার হয়। পরে কোনোভাবে রক্ষা পেয়ে বরিশালে চলে আসি। এরপর ক্যাম্পাসে গেলে বিষয়টি সহপাঠীরা জানতে পেরে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

আইএইচটি, বরিশালের শিক্ষার্থীরা বলেন, ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই সহপাঠীরা মেনে নিতে পারিনি। আমরা এর বিচার চাইতে আজ দুপুরে বরিশাল নদী বন্দরে নোঙর করা এমভি শুভরাজ-৯ লঞ্চে আসি। প্রথমে লঞ্চ স্টাফদের সাথে কথা বলি এবং তাদের কাছে ঘটনার বিচার দাবি করি। কিন্তু বিচার চাইতেই তারা লঞ্চ থেকে সটকে পড়েন। স্টাফরা পালিয়ে যাওয়ায় গোটা লঞ্চ বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আইএইচটির শিক্ষার্থীরা পাহারা দেয়।

ঘাটের স্টাফ ও প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান, অনেক শিক্ষার্থীকে একত্রে দেখে শুভরাজ-৯ লঞ্চের স্টাফরা হঠাৎ করেই পালিয়ে যায়, পরে ছাত্ররা ঘাটের পন্টুনে লঞ্চটির বিভিন্ন তলায় অবস্থান নিয়ে বিচার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। এর মাঝে একাধিকবার নৌপুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললেও শিক্ষার্থীরা বিচার না করা হলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করবে না বলে জানিয়ে দেয়। সন্ধ্যার পরে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি), বরিশালের অধ্যক্ষ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এসে প্রশাসনের উপস্থিতিতে ছাত্রদের সাথে কথা বলে। এরপর শিক্ষার্থীরা লঞ্চ ও ঘাট ত্যাগ করে বন্দর ভবনে যায়। এরপর পরই লঞ্চের স্টাফরা ঘাটে আসে এবং যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়।  শিক্ষার্থীদের দাবি না মানা হলে লঞ্চটি বরিশাল ঘাট ত্যাগ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।  

এ বিষয়ে বরিশাল সদর নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার জানান, আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে বারবার কথা বলেছি, তারা বিচার দাবি করেছেন। কিন্তু ঘটনাটি ঢাকা সদরঘাটে হওয়ায় আইনি ব্যবস্থা সেখানে নিতে হবে, আবার তাদের আমরা কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি। পরবর্তীতে তাদের কর্তৃপক্ষ ও নদী বন্দর কর্মকর্তা এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন। তাদের ঘাট থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে রাত ৯টায় বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানিয়েছেন, আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর সমাধানের চেষ্টা করেছি, তবে বর্তমানে পরিস্থিতি ভিন্ন রকম সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের লোকজন রয়েছেন তারা এখন বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।