ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

হাতিয়ায় ৩ জেলেকে গাছে বেঁধে ডাকাত সাজানোর চেষ্টা প্রতিপক্ষের 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
হাতিয়ায় ৩ জেলেকে গাছে বেঁধে ডাকাত সাজানোর চেষ্টা প্রতিপক্ষের 

নোয়াখালী: নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় তিন জেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার পর ডাকাত সাজিয়ে পুলিশে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ সময় তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়।

 
মোবাইল ফোনে সেই ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় আটক জেলেদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার বিকেলে প্রতিপক্ষরা থানা ঘেরাও করে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ও নৌ বাহিনীর সদস্যরা লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের পূর্ব বিরবিরি গ্রামে সরকারি আবাসন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী তিন জেলে হলেন- জাহাজমারা ইউনিয়নের পূর্ব বিরবিরি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে ফখরুউদ্দিন (২৫), মো. দিলুর ছেলে মো. শাহারাজ উদ্দিন (২৭) ও কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. কাউসার (২৭)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাসান মাঝি দীর্ঘদিন কারাভোগের পর মঙ্গলবার মুক্তি পেয়ে বাড়িতে ফিরলে তাকে দেখতে যান ফখরুউদ্দিন, শাহারাজ ও কাউসার। এতে ক্ষিপ্ত হন হাসান মাঝির প্রতিপক্ষ সাবেক ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন। এদিন রাত ১০টার দিকে জসিম উদ্দিনের লোকজন তিন জেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে তারা তিন জেলের সামনে জাহাজের ছয়টি সিগন্যাল রটেক দিয়ে সেগুলোকে রকেট লাঞ্চার বলে তাদের ডাকাত সাজিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করে। পরে ডাকাত ধরা হয়েছে বলে থানায় খবর দিয়ে তাদের পুলিশে সোপর্দ করে। মোবাইল ফোনে সেই ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জেলে কাউসারের মা জাহেরা খাতুন জানান, তার সন্তানসহ আটক তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত কিংবা মৌখিক কোনো অভিযোগ নেই। তারা সব সময় নদীতে থাকে। রাতে তাদের ঘর থেকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এসময় বার বার অনেকের পায়ে ধরেও নিজের ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি বলে জানান জাহেরা।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা হাসান মাঝি বলেন, এখানে সরকারি ব্যারাকের অনেক মানুষ আমাকে দেখতে এসেছে। এরমধ্যে ব্যারাকে বসবাস করা তিন জেলেকে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনার জন্য হাসান মাঝি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জসিম উদ্দিনকে দায়ী করেন।

হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা জানান, তিন জেলের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তারা ডাকাতি বা অন্য কোন অপরাধে সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়নি। তাদের কাছ থেকে জাহাজের সিগন্যালে ব্যবহৃত ছয়টি রেড প্যারাসুট, সিগন্যাল রকেটকে রকেট লাঞ্চার বলে প্রচার করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে ভুক্তভোগী জেলে মো. কউসার বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। খবর পেয়ে জসিম মেম্বারের লোকজন ৫০/৬০ জন নারী নিয়ে সন্ধ্যার দিকে থানা ঘেরাও করে ভাঙচুরের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও নৌবাহিনীর যৌথ টিম তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে রাহাত (২৩) ও সোহেল (২৫) নামে দুই যুবককে আটক করে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।