ঢাকা, বুধবার, ০ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অস্ত্র আইনের মামলায় খালাস ও দণ্ড পেলেন যারা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
অস্ত্র আইনের মামলায় খালাস ও দণ্ড পেলেন যারা ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় খালাস পেয়েছেন লুৎফুজ্জামান বাবর | ফাইল ছবি

ঢাকা: চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজন খালাস পেয়েছেন। পাশাপাশি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের সাজা কমানো হয়েছে।

এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এ রায় দেন।

এর আগে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় গত ১৮ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ড থেকে লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ ছয়জন খালাস পান।

মঙ্গলবার অস্ত্র আইনের মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান।

আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী শিশির মনির। সাবেক অতিরিক্ত সচিব নুরুল আমিনের পক্ষে আদালতকে সহায়তা করেন আইনজীবী সাধন কুমার বণিক।

পরে সাংবাদিকদের শিশির মনির বলেন, আদালত বলেছেন আজকেই একটি অ্যাডভান্স অর্ডার সই করে দেবেন। আমি আশা করি আজকেই এই আদেশ পৌঁছানো হবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে তিনি (লুত্ফুজ্জামান বাবর) জেল থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি কেরানীগঞ্জ কারাগারে আছেন। কারাগারে আদেশ যথানিয়মে পৌঁছানোর পর তার আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহীরা যারা আছেন, সবাই আইন-কানুন মেনে বের করে যথাসম্মানে তাকে বাসায় পৌঁছে দেবেন।

শিশির মনির জানান, এই মামলায় ১৪ জনের সাজা হয়েছিল। তার মধ্যে পাঁচজন খালাস পেয়েছেন। পাঁচজনের সাজা কমিয়ে দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুজনিত কারণে চারজনের আপিল বাদ হয়ে গেছে। অর্থাৎ নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

রায়ে খালাস পেলেন যারা
লুৎফুজ্জামান বাবর, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার, তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব নুরুল আমিন খালাস পেয়েছেন।

সাজা কমল যাদের
ভারতীয় নাগরিক পলাতক পরেশ বড়ুয়ার সাজা ১৪ বছর করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার তৎকালীন মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, এনএসআইয়ের সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, তৎকালীন পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ ও হাফিজুর রহমানকে দশ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।

মৃত চারজনের আপিলের পরিসমাপ্তি
ইতোমধ্যে মারা যাওয়ার কারণে চারজনের আপিল অ্যাবেট (বাদ) ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। তারা হলেন, সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিম, শ্রমিক সরবরাহকারী দ্বীন মোহাম্মদ ও ট্রলারমালিক হাজি সোবহান।

২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক সংক্রান্ত দু’টি মামলার মধ্যে চোরাচালান মামলায় (বিশেষ ক্ষমতা আইনে) সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী (ফাঁসির দণ্ড কার্যকর খালাস), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ (যাবজ্জীবন-বর্তমানে ভারতে) ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এসএম মজিবুর রহমানের আদালত।

অস্ত্র আইনে দায়ের করা অন্য মামলাটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন একই আসামিরা। পরে এর বিরুদ্ধে কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।