বরিশাল: নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মেরিন অ্যাকাডেমির জন্য যেটা ভালো এবং আমাদের দেশের জন্য যেটা ভালো সেটা করা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের মেরিন অ্যাকাডেমিতে ক্যাডেট পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করা হচ্ছে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমি বরিশালের ক্যাডেটদের পাসিং আউট প্যারেড ২০২৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, সর্বতোভাবে মেরিন অ্যাকাডেমি আরও উন্নত হোক, তাদের সিলেবাস ও নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও উন্নত হোক। যাতে আমরা চৌকস মেরিনার এদেশ থেকে তৈরি করতে পারি। পাঁচটি মেরিন অ্যাকাডেমির সবগুলোতে উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। বিশ্বমানের মেরিনার গড়তে চায় সরকার। অবকাঠামো প্রয়োজনে পরিবর্তন করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের করতে সিলেবাসে কিছু পরিবর্তন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, নিজেদের জাহাজ বাড়াতে। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন প্রায় ১০টি জাহাজ সংযুক্ত করার চেষ্টা করছে। কিছুটা নিজেদের পয়সায় আর কিছুটা লোন প্রক্রিয়ায়। এর আগে দেশের গানের সুরে সুরে মেরিন ক্যাডেটদের কাছ থেকে অভিবাদন গ্রহণ করেন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন।
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, বরিশালের কমান্ড্যান্ট ক্যাপ্টেন এস এম আতিকুর রহমান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের ডেপুটি হাই কমিশনার মোহাম্মদ ওয়াসিফ, ভারতের নৌবাহিনীর ক্যাম্পেটন বিক্রম চৌহানসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা, অভিভাবকরা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতি তার বক্তব্যে জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে দক্ষ মেরিন প্রফেশনালদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা রয়েছে। যে কারণে বাংলাদেশে মেরিন অ্যাকাডেমির সংখ্যা বাড়ানো অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আমাদের একাডেমিগুলোর মেরিনাররা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাহাজে কর্মরত রয়েছেন এবং উল্লেখযোগ্য হারে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন, যা দেশের উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখছে।
এদিকে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত এ অ্যাকাডেমির গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ চলাকালীন প্রধান অতিথি কৃতি ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। কুচকাওয়াজ শেষে প্রধান অতিথিসহ উপস্থিতি শিক্ষা সমাপনী ক্লাস কর্তৃক ‘পাসিং আউট কেক' কাটা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।
জানা গেছে, এ বছর অ্যাকাডেমির নটিক্যাল বিভাগে ২৭ জন এবং মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২৬ জন ক্যাডেটসহ সর্বমোট ৫৩ জন ক্যাডেট প্রি-সি কোর্স সম্পন্ন করে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেছে। প্রধান অতিথি সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্যাডেটদের মাঝে পদক বিতরণ করেন। সব বিষয়ে সর্বোচ্চমান অর্জনকারী ক্যাডেট হিসেবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্যাডেট সুদীপ্ত বোস কমান্ড্যান্ট স্বর্ণ পদক, নটিক্যাল বিভাগ থেকে ক্যাডেট শাহরিয়ার তানভীর এবং মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ক্যাডেট মো. মুহাইমিনুল ইসলাম সবুজ কমান্ড্যান্ট রৌপ্য পদক প্রাপ্ত হন।
প্রি-সি প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী ক্যাডেটরা মেরিন প্রফেশনকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে ব্যক্তি, পরিবার ও দেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সাধন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২৪
এমএস/এএটি