ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সংবিধান থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা স্তম্ভটি বাতিলযোগ্য নয়: সনাতন একতা মঞ্চ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
সংবিধান থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা স্তম্ভটি বাতিলযোগ্য নয়: সনাতন একতা মঞ্চ

ঢাকা: ধর্ম নিরপেক্ষতা ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানের চারটি মূল ভিত্তির একটি। তাই সংবিধান থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা স্তম্ভটি কখনোই বাতিলযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছে ‘সনাতন একতা মঞ্চ’ নামের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও অরাজনৈতিক সংগঠন ।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সনাতন একতা মঞ্চ আয়োজিত ‘সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল এবং সনাতন নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে’ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সুস্মিতা কর। তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষবাদ বলতে সাধারণত রাষ্ট্র আর ধর্মকে পৃথকরূপে প্রকাশ করাকে বোঝায়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে ধর্ম বা ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে থেকে পরিচালনা করাকে বোঝানো হয়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইন কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর নির্ভরশীল থাকে না। সব ‘ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো, তথ্য এবং প্রমাণের ওপর নির্ভর করবে, কোনও ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর নয়। অর্থাৎ বলা যায়, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। ’

তিনি বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী বিলটি তৎকালীন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ সংসদে এনেছিলেন ২০১১ সালের জুন মাসে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭২ সালের সংবিধানের মৌলিক কিছু বিষয়ও ফিরিয়ে আনা হয়। রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়। সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয়। তবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখা হয়।

তিনি আরও বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানের চারটি মূল ভিত্তির একটি। আমাদের এই সংগঠন তথা আমারা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীরা কখনোই এই ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল হোক চাই না ও আগামীতেও চাইবো না। এটা আমাদের একটা বড় শক্তি ও সাহস মনোবলের স্থান।   সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে, এটা আমাদের জন্মগত অধিকার। কারণ, আমরা এই দেশের ভূমিতে যুগ যুগ ধরে জন্মগ্রহণ করে বসবাস করে আসছি, পৈত্রিক ভূমির বসতবাড়িতে। এককথায় এটাই আমাদের একমাত্র অবলম্বন, এটাই আমাদের সর্বেসর্বা। তাই সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা স্তম্ভটি কখনোই বাতিলযোগ্য নয়। বাতিল হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের এবং সংবিধান প্রণেতাদের প্রখর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

লিখিত বক্তব্যে সুস্মিতা কর আরও বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে— আমাদের সনাতনী নেতাদের বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। যার কোনও রকম যুক্তিসঙ্গত কারণ নাই বললেই চলে। অনতিবিলম্বে তাদের মামলা প্রত্যাহার করতে মুক্তি প্রদানের সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।

৮ দফা দাবি কার্যকর করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমারা সনাতনীরা জোটবদ্ধ হয়ে আমাদের অধিকার আন্দোলনের জন্য ৮ দফা দাবি ইতোমধ্যে বর্তমান সরকারকে দিয়েছি। কিন্তু কোনো রকম অগ্রগতি না হওয়ায় আমাদের সেই ৮ দফার জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখা হয়েছে। আমারদের অধিকার আন্দোলন এই ৮ দফা দ্রুত কার্যকর করার ব্যবস্থা নিতে সরকারকে অনুরোধ করছি।

সংগঠনের সভাপতি মিথুন ভট্টাচার্য (শুভ) বলেন, চিন্ময় প্রভুকে নিয়ে যা ঘটেছে সেটা থেকে বোঝা যায় আমাদের মধ্যে দুষ্কৃতকারী রয়েছে। এটার দায় সম্পূর্ণ দুষ্কৃতকারীদের। এর দায় সনাতনীদের না। সংগঠনের সদস্যরা দুষ্কৃতকারীদের বিচারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী মহেশ্বনান্দ পুরি মহারাজ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।