ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্ধশত রোহিঙ্গার জন্মসনদ দেওয়ার অভিযোগ 

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২৪
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্ধশত রোহিঙ্গার জন্মসনদ দেওয়ার অভিযোগ 

মৌলভীবাজার: আত্মগোপনে থাকা মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজলার হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখসের বিরুদ্ধে অন্তত অর্ধশত রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এমন অভিযোগ এনেছেন পরিষদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল।

সম্প্রতি তিনি এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ বখস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেছেন। চলতি বছরের শুরুতেই তিনি ইউনিয়নের বাসিন্দা নন এমন অনেককেই তার কার্যালয় থেকে জন্মসনদ দিয়েছেন। তাছাড়া তাদের নামে কোনো ধরনের প্রমাণাদি সংযুক্ত কিংবা সংরক্ষণ না করেই তিনি অনলাইন জন্মসনদ রেজিস্টারভুক্ত করেছেন।  

প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, ইউনিয়নের রেজিস্টার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ২০০৮৫৮১৬৫৩৫৫০৪৬৬০৬, জন্ম তারিখ ১৫-০৪-২০০৮ খ্রি., রেজিস্ট্রেশনের তারিখ ০৩-০১-২০২৪, সনদ ইস্যুর তারিখ ০৩-০১-২০২৪ খ্রি., নাম সৌমিক বড়ুয়া, পিতা সন্তোষ বড়ুয়া, মাতা মনজু বড়ুয়া, জন্মস্থান কক্সবাজার নিবন্ধিত করা হয়েছে। তার স্থায়ী ঠিকানা হোল্ডিং নং-২৫, পাতাবাড়ি, উখিয়া কক্সবাজার। অপরজনের জন্ম নিবন্ধন নম্বর ১৯৮৮৫৮১৬৫৩৫০৪৭২৯৩, জন্ম তারিখ ১০-০৭-১৯৮৮ খ্রি, রেজিস্ট্রেশনের তারিখ ০৪-০৩-২০২৪, সনদ ইস্যুর তারিখ ০৪-০৩-২০২৪ খ্রি, নাম ফৌজিয়া লাল মোহাম্মদ, পিতা- লাল মোহাম্মদ, মাতা- হাজেরা খাতুন, জন্মস্থান- কক্সবাজার নামে নিবন্ধন রয়েছে। জন্মসনদ অনুযায়ী তার স্থায়ী ঠিকানা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের হ্নীলা বাজার।  

হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. তাজুল মিয়া বলেন, এরকম সনদে আমার স্বাক্ষর করার প্রশ্নই উঠে না। তাছাড়া সচিব হিসেবে ওই ইউনিয়নে যোগদানের পর চলতি বছরের ১৬ মে নাগাদ কর্তৃপক্ষ থেকে আমি জন্মনিবন্ধনের পাসওয়ার্ড পাই। এর আগে পাসওয়ার্ড ছাড়া কাউকে জন্মনিবন্ধন দেওয়ার সুযোগ নেই।

আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখসের বক্তব্য নিতে তার মোবাইল নম্বরে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।  

বুধবার (২ অক্টোবর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল দাবি করেন, ইউনিয়ন পরিষদের জন্মনিবন্ধন বহি তদন্ত করলে অনেক রোহিঙ্গার তথ্য পাওয়া যাবে।  

ইউনিয়নের উদ্যোক্তার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, প্রায় অর্ধশত রোহিঙ্গার ও ভারতীয় অবৈধ নাগরিকের নাম জন্মনিবন্ধন রেজিস্টারভুক্ত করা হয়েছে। এমনকি লাপাত্তা থাকা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন।  

বিষয়টি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এর দায়ভার তার ওপর পড়তে পারে বলেও তিনি শঙ্কায় রয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।  

এ বিষয়ে একটি অভিযোগে তার কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন। তিনি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২৪
বিবিবি/এসএএইচ                                  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।