ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আমাকেও গুম করা হয়েছিল, বিটিআরসিতে এসে বললেন নাহিদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪
আমাকেও গুম করা হয়েছিল, বিটিআরসিতে এসে বললেন নাহিদ বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

ঢাকা: আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে গণহত্যা ও গুম করা হয়েছে জানিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাকেও গুম করা হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস আজ আমি সেই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এমন অভিযোগ করেন।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যে সংস্কার করলে দেশের মানুষ দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাবে আমরা তা করতে চাই।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূল নায়ক এদেশের জনগণ এবং সাধারণ শিক্ষার্থী। তাদের আন্দোলনের ফলেই আমি বেঁচে আছি। সাধারণ মানুষরাই মূলত রাজপথে নেমে এসে আমাদের নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমি আজকে সেই জনগণ এবং আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে আমরা এটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় ছিলাম, যার হাত থেকে সমাজের কোনো স্তর বা অংশ রেহাই পায়নি। বিটিআরসিতে গত ১৬ বছর নানা সমস্যা ছিল যা সমাধান হয়নি, অনেক দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে। বিটিআরসি নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই, কারণ গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সে জায়গা থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই।

বিটিআরসি সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে গণহত্যা চালানো হয়েছে, গুম করা হয়েছে যার সঠিক তথ্য আমরা এখনো পাচ্ছি না। আমাকেও গুম করা হয়েছিল, কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস আজ আমি সেই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা এবং সেখানেই দাঁড়িয়ে কথা বলছি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা বলেন, এ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি এতে সারা দেশের মানুষের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। সবার মধ্যে একটি ধারণা জন্মেছে যে আমরা এখনই পারবো নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের মূল সমস্যা হচ্ছে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সিস্টেম ডেভেলপ হয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো গড়ে উঠলে কোনো ব্যক্তি চাইলেও তার ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব হতো না। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দেশে এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক ক্ষমতার চর্চা হয়েছে। এখানে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ব্যক্তির ক্ষমতা প্রয়োগের চর্চা করা হয়েছে। এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক এ কাঠামোর নীতি এবং আইন যদি আমরা সংস্কার করতে না পারি তাহলে আমূল পরিবর্তন বলতে আমরা যা বুঝি তা কখনোই আসবে না।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা যাতে পেছনে ফিরে না যাই এবং আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরবে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি তরুণ প্রজন্ম যে নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায় বা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় তারা যে পরিবর্তন চায় তা অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। তাই মানসিকতা পরিবর্তন করে সবাইকে মানুষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করতে আহ্বান জানান উপদেষ্টা।  

মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে যে কেউ চাইলেই আর সে আকাঙ্ক্ষার বাইরে যেতে পারবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

মতবিনিময়কালে বিটিআরসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০১১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪
এমআইএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।