ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বন্যা পরবর্তী দুর্যোগের নাম ‘খানাখন্দ’    

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৪
বন্যা পরবর্তী দুর্যোগের নাম ‘খানাখন্দ’    

মৌলভীবাজার: বন্যা পরবর্তী দুর্যোগগুলোতেই হয়রানি বেশি। এ সময় যতগুলো দুর্যোগ দৃশ্যমান হয় এগুলোর অন্যতম সড়ক পথের খানাখন্দ।

যা ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী প্রতিটি মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় মৌলভীবাজার জেলায় প্রায় দুইশ কিলোমিটারের সড়ক বড়-ছোট গর্তে ভরে উঠে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলার অভ্যন্তরীণ পাকাসড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। হাওরাঞ্চলের কিছু কিছু সড়কে এখনো রয়েছে পানি।

এলজিইডি সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার ৭৩টি পাকা সড়কের ২শ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে আটটি সেতু ও কালভার্ট। এসব সড়ক ও সেতু মেরামত এবং পুনঃনির্মাণে ১৪৭ কোটি টাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায়। ১৪টি সড়কের ৪৯ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরই রয়েছে কমলগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলার ১১টি পাকা সড়কের ৪৭ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তবে সম্পূর্ণভাবে পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলজিইডি কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ২৮ মে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চৈত্রঘাটে ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। নদের পানি কমলে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই ১৯ জুন ওই ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে রহিমপুর ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। সড়কে পানি ওঠায় জেলা শহরের সঙ্গে কমলগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়।
এছাড়া হাকালুকি হাওরে পানি বেড়ে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। ডুবে যায় গ্রামীণ সড়ক ও ফসলি জমি। বন্যার পানির স্রোতে পাকা সড়কের ইটের খোয়া বের হয়ে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। অনেক স্থানে ইট ও খোয়া ক্ষয়ে কয়েক ফুট পর্যন্ত দেবে গেছে সড়ক।

এছাড়া কুলাউড়া উপজেলার ১২টি সড়কের ৩০ কিলোমিটার, রাজনগর উপজেলার ৭টি সড়কের ৬ কিলোমিটার, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১১টি সড়কের ৩০ কিলোমিটার, বড়লেখা উপজেলার ৬টি সড়কের ১৮ কিলোমিটার এবং জুড়ী উপজেলার ১২টি পাকা সড়কের ১৯ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ আব্দুল্লা বাংলানিউজকে বলেন, মৌলভীবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর ওপর আমরা অ্যসেসম্যান্ট (মূল্যায়ন) করতে শুরু করেছি। আশা করি, কিছু দিনের মধ্যেই কাজটি শেষ হবে। তবে এখনো কিন্তু পাহাড়ি ঢল বা জলাবদ্ধতার প্রভাব পুরোপুরি শেষ হয়নি। কিছু সড়কের ওপর পানি রয়েছে।

চলতি অর্থ বছরের মধ্যেই মৌলভীবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামত করতে পারবেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২৪
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।