ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ত্রিশালের ট্রিপল মার্ডারের রহস্যভেদ: স্বামীর স্বীকারোক্তি 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৪
ত্রিশালের ট্রিপল মার্ডারের রহস্যভেদ: স্বামীর স্বীকারোক্তি 

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ত্রিশালে চাঞ্চল্যকর নারী ও দুই শিশু সন্তান হত্যাকাণ্ডের রহস্যভেদ করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।  

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া নিহত নারীর স্বামী আলী হোসেন (২৫) লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

 

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামীম হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঘাতক আলী হোসেন ২০১২ সালে দায়ের হওয়া আরও একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় তিনি টানা পাঁচ বছর কারাভোগ করে ২০১৭ সালের আগস্টে জামিনে মুক্তি লাভ করেন। এরপর তিনি ২০১৯ সালে তার আপন মামাতো বোন আমেনা খাতুনকে বিয়ে করে দিন মজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। এরই মধ্যে তাদের দাম্পত্য জীবনে আবু বক্কর সিদ্দিক ও আনাছ নামে দুটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। ফলে তার চার সদস্যের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। এ কারণে সম্প্রতি তিনি একটি এনজিও থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ওই ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় প্রায়ই তাদের অপমান করা হতো। এতে হতাশ হয়ে আলী হোসেন তার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে গত ১৬ মে রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন আলী। এরপর মৃত স্ত্রীর ওড়না দিয়ে ঘুমন্ত দুই সন্তানকে হত্যা করে বাড়ির পাশের নির্জন স্থানে গর্ত করে মাটিতে পুঁতে রেখে পালিয়ে যায় তিনি।    

এ ঘটনায় নিহত আমেনা খাতুনের মা হাসিনা খাতুন গত ২২ মে ত্রিশাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল বুধবার (২২ মে) বিকেলে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর বাজার এলাকা থেকে আলীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) মোহাইমেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফাল্গুনী নন্দী, সহকারী পুলিশ সুপার তাহমিনা, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেনসহ এই গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া ডিবি পুলিশের সদস্যরা।    

এর আগে গত ২১ মে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের কাকচর নয়াপাড়া গ্রামে একটি নির্জন স্থানে শিয়ালের টানা-হেঁচড়ায় এক নারী ও দুই শিশুকে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখার ঘটনার সন্ধান পায় এলাকাবাসী। এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে।  

নিহতরা হলেন- ঘাতক আলীর স্ত্রী আমেনা খাতুন (৩০), তার শিশুপুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক (৪) ও আনাছ (২)।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।