ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে বহিরাগত নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ 

জাবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে বহিরাগত নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে বহিরাগত নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা ও বহিরাগত এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন জঙ্গলে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও বহিরাগত মামুন (৪৫)। তাদের মধ্যে মোস্তাফিজ মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক‌ এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী।

জানা যায়, ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন অভিযুক্ত মামুন। তার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসেন তিনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে তাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের 'এ' ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন অভিযুক্তরা। এরপর তার স্ত্রীকে দিয়ে নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। তার কথামতো মামুনের জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন ভুক্তভোগী নারী। পরে জিনিসপত্র নিয়ে মামুন হলের ভেতরের ওই কক্ষে রেখে আসেন। এরপর তার স্বামী অন্যদিক থেকে আসবেন বলে ওই নারীকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে যান অভিযুক্তরা। পরে সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী।

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, 'মামুন ভাই আমাদের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি আমার স্বামীর মাধ্যমে ফোন দিয়ে আমাকে তার রেখে যাওয়া জিনিসপত্র নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলেন। আমি তার জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যাই। তখন তিনি আমাদের বাসায় থাকবেন না বলে জানান। এছাড়া তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের মোস্তাফিজ ভাইয়ের কাছে থাকবে বলেও জানান। '

ওই নারী আরও বলেন, 'এরপর মামুন আমার কাছ থেকে তার জিনিসপত্রগুলো নিয়ে হলে রেখে আসেন। পরে আমার স্বামী অন্যদিক থেকে আসবেন বলে আমাকে হলের সামনে থেকে পাশের জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যান। সেসময় তার সঙ্গে মোস্তাফিজ ভাইও ছিলেন। তখন তারা আমাকে ধর্ষণ করেছেন। '

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোস্তাফিজের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। ’

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে। ’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, আমরা রাষ্ট্রীয় আইনে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তাঁদের শাস্তির ব্যবস্থা করব। ’

এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আব্দুর রাসিক বলেন, ‘ভুক্তভোগী থানায় উপস্থিত হয়ে ঘটনা জানিয়েছেন। আমরা প্রাথমিক তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।