ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২০৪১ সালের মধ্যে উদ্ভাবনীমূলক স্মার্ট বাংলাদেশ হবে: পলক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
২০৪১ সালের মধ্যে উদ্ভাবনীমূলক স্মার্ট বাংলাদেশ হবে: পলক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক

ঢাকা: ২০৪১ সালের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক ও উদ্ভাবনীমূলক স্মার্ট বাংলাদেশ হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক।  

তিনি বলেন, সেজন্য সব অংশীজনের কার্যকর অংশগ্রহণ প্রয়োজন।

সরকারের পাশাপাশি অংশীজনদের বিশ্বাস করতে হবে যে এ স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব।

রোববার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে অন্তর্ভুক্তিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক ও উদ্ভাবনীমূলক স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের পরামর্শ, সুপারিশ ও প্রস্তাব গ্রহণের লক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান৷

এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।  

এ সময় দেশের উদ্যোক্তা, প্রযুক্তি-ভিত্তিক ব্যবসায় সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষক, ফ্রিল্যান্সার, ইনফ্লুয়েন্সার, নারী, প্রতিবন্ধী ও গণমাধ্যমকর্মীদের অংশগ্রহণে অংশীজনরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে পরামর্শ, সুপারিশ ও প্রস্তাব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৪ বছর আগে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা হয়েছিল তখন সবাই ঠাট্টা করেছিল, কিন্তু আজ এ স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। অনুন্নত দেশ থেকে এখন আমরা উন্নয়নশীল দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে এবার স্মার্ট বাংলাদেশের নতুন স্বপ্ন দেখছি। ২০১০ সালের ৩রা আগস্ট প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স সভা থেকে শুরু করে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে স্মার্ট বাংলাদেশ মাস্টারপ্ল্যানের পরিকল্পনা গ্রহণের টাইমলাইন ও তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের প্রস্তাবিত রূপরেখা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের আওতায় কেউ বাদ যাবে না। মাদ্রাসার ছাত্র হোক বা সুদূর পাহাড়ে থাকা কেউই পিছিয়ে থাকবে না। সকলের নেতৃত্বের মাধ্যমে আমরা প্রগতিশীল ও উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এরই মধ্যে আইসিটি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মিনহাজ এখন তরুণদের আইকন হয়ে উঠেছে। এভাবেই স্মার্ট বাংলাদেশের সুযোগ থেকে কেউ বাদ পড়বে না।

স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী জানান, স্মার্ট নাগরিক গড়ে তুলতে ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ শতাংশের ডিজিটাল দক্ষতা, ৬০ শতাংশের ওপর স্মার্ট ডিভাইস ও ৩০ শতাংশের ওপর সেবা গ্রহণে স্মার্ট আইডির বাস্তবায়ন করা হবে। স্মার্ট অর্থনীতি গড়তে এগ্রোটেক, ফিনটেক, হেলথটেক, স্মার্ট গ্রিড, এডুটেক প্রাধান্য পাবে। এসময় প্রযুক্তির মানবিক ব্যবহারের মাধ্যমে স্মার্ট মানবিক বিশ্ব গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

সভায় স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, সুপারিশ ও প্রস্তাব প্রদান করেন অংশীজনরা। তারা জানান, আমাদের দেশ প্রযুক্তিগতভাবে অনেক এগিয়েছে। তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, এগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে করতে হবে। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পেমেন্ট গেটওয়ে। এর কারণে অনেক বড় বড় কাজের ক্ষেত্রে পেমেন্ট একটি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

এছাড়া সেক্টর-ভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত নির্ভর ডিজিটাল সিস্টেম তৈরির পাশাপাশি এটিকে ইন্টারঅপারেবল সিস্টেম তৈরি করা প্রয়োজন। এর ফলে সরকারি-বেসরকারি খাতের আন্তঃসেক্টর-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরি হবে এবং নাগরিকবান্ধব সেবা তৈরির ক্ষেত্রে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। শিক্ষা কারিকুলামে পরিবর্তন এনে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার পাশাপাশি দক্ষতাভিত্তিক কারিকুলামের দিকে জোর দেয়া প্রয়োজন। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে বহির্বিশ্বের প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়নে তরুণদের আরও সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। তাহলেই স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিকরা বোঝা হবে না, হবে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড।

এ সময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক, ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, বেসিস পরিচালক আহমেদুল হক বাবু, বিআইজেএফ সভাপতি নাজনীন নাহার, টিএমজিবি সভাপতি মো. কাউছার উদ্দীনসহ আইসিটি বিভাগ, এটুআই, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯,২০২৩
জিসিজি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।