ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উদ্বোধন

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২৩
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উদ্বোধন

কক্সবাজার: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে নির্মিত এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ইউনিটটি উদ্বোধন করেন তিনি।

জাপানি অর্থায়নে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। চলতি বছরের ২৯ জুলাই কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু হয়। এটি ১৫০-২০০ মেগাওয়াট পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। উদ্বোধনের প্রথম দিনেও দেড়শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিকে এ কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারে। একই বছর এপ্রিল থেকে প্ল্যান্টটি পুরো মাত্রায় উৎপাদনে যাবে বলেও জানা গেছে।

মাতারবাড়ীতে নির্মিত এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি আনুষ্ঠানিকভাবে আরও কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন শেখ হাসিনা।

তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র একটি। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পটি উদ্বোধনের পর আগামী ডিসেম্বর মাসে প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা রয়েছে।

মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশের অন্যতম সম্পদ। এটিসহ কয়েকটি বড় প্রকল্প মহেশখালীতে করায় আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।

এক নজরে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র
এ প্রকল্পের প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট। ফলে বার্ষিক প্রায় ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

বঙ্গোপসাগর তীরঘেঁষে মাতারবাড়ীর ১ হাজার ৬০০ একরের পরিত্যক্ত লবণ মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের বৃহৎ ১২০০ মেগাওয়াট ধারণক্ষমতার এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ৫১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা দিচ্ছে প্রায় ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ও কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) নিজস্ব তহবিল থেকে অবশিষ্ট ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

২০১৪ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ সরকার ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (জাইকা) মধ্যে একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই প্রকল্পে আমদানি করা কয়লা লোড-আনলোড জেটি, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, টাউনশিপ, স্থানীয় এলাকার বিদ্যুতায়ন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংযোগ সড়ক নির্মাণের মতো অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্য থাকবে।

কোল পাওয়ার সূত্র জানায়, জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুমিতমো করপোরেশন, তোশিবা করপোরেশন ও আইএইচআই এই প্রকল্পে নির্মাণকাজে ১ হাজার ১৫০ জন বিদেশি নাগরিকসহ ৮ হাজার মানুষ প্রতিদিন কাজ করছেন। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ প্ল্যান্টে কয়লা পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য জেটি ও সাইলোও নির্মাণ করেছে। সাইলোর ৬০ দিনের জন্য কয়লা সঞ্চয় করার ক্ষমতা রয়েছে। ৮০ হাজার টন কয়লা ধারণক্ষমতার মাদার ভেসেল সহজেই জেটিতে নোঙর করতে পারবে। আর মাদার ভেসেল থেকে কয়লা আনলোড করতে মাত্র এক থেকে দুই দিন সময় লাগবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ১১ নভেম্বর ২০২৩
এসবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।