ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সুগন্ধা নদীতে বিলীন বিধবা আকলিমার শেষ সম্বল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৩
সুগন্ধা নদীতে বিলীন বিধবা আকলিমার শেষ সম্বল

ঝালকাঠি: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের বিধবা আকলিমা বেগমের (৬০) শেষ সম্বল বসতঘর সুগন্ধার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।  

গত বুধবার (৪ অক্টোবর) রাতে প্রবল স্রোতে বসতবাড়িসহ তার বাগান নদীতে ভেসে যায়।

বর্তমানে এক মেয়ে ও দুই নাতি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন তিনি। বর্তমানে আকলিমা বেগম প্যারালাইসিস হয়ে শয্যাশায়ী। তার স্বামী বহরমপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীন মৃধা।  

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় বিশাল এলাকাজুড়ে নদীতে বিলীন হয়ে যায়। আকলিমা বেগম তার বসতঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে পারলেও বসতঘর ও বাগানবাড়ির গাছপালাগুলো নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তারা গৃহহীন অবস্থায় আছেন। এক টুকরা জমি কিনে নতুন বাড়ি করবেন সে সামর্থ্য তাদের নেই।

আকলিমা বেগম জানান, আমার জমিজমা সবই সুগন্ধায় বিলীন হয়েছে। এখন সর্বশেষ বাড়িটাও নদী গর্ভে চলে গেল। অনেক আগে থেকেই নদীর ভাঙনের মুখে ছিল আমার বসতঘর। কিন্তু এখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় এতদিন এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করেছি। এখন সেটুকুও নাই।  

তিনি আরও জানান, মেয়েকে বিয়ে দিলেও তার স্বামী খোঁজখবর না নেওয়ায় তার দুই সন্তানসহ আমার কাছেই থাকে। এখন তাদের নিয়ে কোথায় দাঁড়াবো জানি না। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। টুকটুাক যা আসবাবপত্র ছিল তা প্রতিবেশী একজনের বাড়িতে রেখে এসেছি। বর্ষার ভেতর এভাবে কতদিন থাকতে পারবো তা আল্লাহ ভালো জানেন।  

আমার দুই ছেলে তাদের পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন, তারা যা আয় করেন সেটা দিয়েই তাদের সংসার চালাতেই অনেক কষ্ট হয়। তারপরও আমার খোঁজখবর রাখে। তবে নতুন জমি কিনে ঘর তৈরি করে দেওয়ার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। সরকারিভাবে সহায়তা পেলে একটু মাথা গোজার ঠাঁই হতো।

ইউপি সদস্য হেলেনা আক্তার বলেন, বর্ষায় সুগন্ধা নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি আর জোয়ারের পানির কারণে তীরবর্তী এলাকার মানুষ ভাঙন আতঙ্কে আছেন। আকলিমার বেগমের বিষয়টি জানতে পেরে খোঁজখবর নিয়েছি। তার ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যতটুকু সহায়তা করা যায় সেটা অবশ্যই করা হবে। এছাড়া তাকে একটি সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।  

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা তার বিষয়টি জানতে পেরেছি। খুব শিগগিরই তার সঙ্গে আমরা দেখা করবো। তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।