ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নরসিংদীতে মশার ওষুধের বিষক্রিয়ায় ১১ স্কুলছাত্রী অসুস্থ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২৩
নরসিংদীতে মশার ওষুধের বিষক্রিয়ায় ১১ স্কুলছাত্রী অসুস্থ

নরসিংদী: নরসিংদীতে পৌরসভার মশার ওষুধের বিষক্রিয়ায় ১১ স্কুলছাত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে শহরের নরসিংদী বালিকা উচ্চ বিদ্যানিকেতন স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাদের দ্রুত হাসপাতালেও নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অসুস্থ ছাত্রীরা। তাদের অভিযোগ অসুস্থ হওয়ার পর তাদের ক্লাসরুমে আটকে রাখা হয়। হইচই শুরু করলে পরে তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে অক্সিজেন দেওয়া হয়।

অসুস্থ ছাত্রীরা হলো-জান্নাত. আয়েশা. তুবা,  আলতা. তামান্না. সোহানা. হামিদা. সাইদা. নুসরাত. মুক্তা ও তুলি। তারা সবাই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নরসিংদীতে বাড়লে নরসিংদী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে শহরে বিভিন্ন স্থানে ওষুধ ছিটানোর কর্মসূচি শুরু করে। এ কর্মসূচির অধীনে বুধবার দুপুরে নরসিংদী বালিকা উচ্চ বিদ্যানিকেতন, নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ ও শিউলিবাগ স্কুল প্রাঙ্গণে মশা মারার ওষুধ ছিটানো হয়। ওই সময় নরসিংদী বালিকা উচ্চ বিদ্যানিকেতন এ ক্লাস চলছিল। ওষুধ ছিটানোর কিছুক্ষণ পর স্কুলের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাদের ক্লাসের বাইরে বের হতে নিষেধ করেন। পরে ছাত্রীরা হইচই শুরু করেন। এরই মধ্যে কয়েকজন ছাত্রীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

অসুস্থ হয়ে পড়া সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী তুবা জানান, স্কুল চলার সময়ে স্কুলের ভেতর মশা মারার ওষুধ দেওয়া হয়। ওষুধ দেওয়ার পর পরই আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তখন স্যার আমাদের স্কুলের জানালা খুলে দিতে বলেন। আমরা বাইরে বের হতে চাইলে আমাদের ক্লাস থেকে বের হতে দিচ্ছিল না। পরে চিৎকার শুরু করলে অসুস্থ ছাত্রীদের হাসপাতালে আনা হয়।

অসুস্থ নাহিদার বাবা খোকন মিয়া বলেন, আমরা চাই মশক নিধন হোক, কিন্তু আমাদের সন্তানদের ক্ষতি করে নয়। স্কুলে ছাত্রীদের পাঠিয়েছি লেখাপড়া করার জন্য। কিন্তু তারা যদি স্কুলে গিয়ে অসুস্থ হয়, তাহলে এর দায়ভার কে নেবে?’ আমার মেয়ে বলেছে, স্প্রে করলে দম বন্ধ অবস্থায় তারা ক্লাসরুমে আবদ্ধ ছিল। কেউ তাদের দরজা খুলে দেয়নি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি ঘোষ বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে স্কুলে মশা মারার ওষুধ দেওয়া হয়। এতে কয়েকজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মশা মারার ওষুধ দেওয়ার বিষয়ে স্কুল কতৃপক্ষ কিংবা আমাদেরকে পৌর সভা থেকে অবহিত করা হয়নি। তবে এখন সব শিক্ষার্থী ভালো এবং সুস্থ আছে। সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছে। অসুস্থ হয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আটকে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, ছাত্রীদের আটকে রাখা হয়নি। মশার ওষুধ ছিটানোর কারণে তাদের যেন তীব্র শ্বাস কষ্ট না হয় সে জন্য ক্লাস রুমের ভেতরে থাকতে বলা হয়েছে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. বিপাশা মাসুদ ছাত্রীদের অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মশার ওষুধের বিষক্রিয়ার ফলেই শ্রেণিকক্ষে থাকা ছাত্রীরা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে নরসিংদী পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু বলেন, শহরে এডিস মশার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মশা নিধনে আমরা শহরের বিভিন্ন স্থানে ওষুধ ছিটানো কাজ শুরু করি। তবে এ ওষুধে বিষ ক্রিয়া হওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। কেন বিষক্রিয়া হচ্ছে সেটি চিকিৎসকরা ভালো বলতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।