ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেঘনায় ১০ ঘণ্টা ভেসে থাকা জোহরা মারা গেছেন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৩
মেঘনায় ১০ ঘণ্টা ভেসে থাকা জোহরা মারা গেছেন ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে চলন্ত লঞ্চ থেকে মেঘনা নদীতে পড়ে যাওয়ার ১০ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হওয়া সেই জোহরা বেগম (৩৮) মারা গেছেন।  

সোমবার (৮ মে) দুপুরে তার মা নার্গিস বেগম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এরআগে সকালে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই নারী।

জোহরা বেগমের মা নার্গিস বেগম জানান, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের পশ্চিম বিষকাটালি গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলামের স্ত্রী জোহরা বেগম। স্বামী সন্তানের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে থাকেন। ঈদে গ্রামে বেড়াতে আসেন। বুধবার রাতে ঈগল-৩ লঞ্চে করে গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা মাইঝাড়া ঘাট থেকে লঞ্চে ওঠেন।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে লঞ্চটি ঠান্ডার বাজার এলাকায় পৌঁছালে অসাবধানতাবসত তিনি লঞ্চের দ্বিতীয় তলা থেকে মেঘনা নদীতে পড়ে যান। সেখানে লঞ্চ থামিয়ে লঞ্চের সার্চলাইট দিয়ে তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। না পাওয়া গেলে তার সঙ্গে থাকা স্বামী ও ছেলেকে একটি জেলে নৌকায় নামিয়ে দেওয়া হয়। রাতভর তারা জোহরাকে মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন। ওই দুর্ঘটনার পর জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে নিখোঁজ হওয়ার তথ্য জানান। এরপর রাতে পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা ওই গৃহবধূকে উদ্ধারে অভিযান চালান।  
নদীতে পরে যাওয়ার পর জীবন বাঁচাতে ভেসে ছিলেন জোহরা। ১০ ঘণ্টা পর জেলেরা তাকে উদ্ধার করেন একটি চর থেকে। উদ্ধার করার পর তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। লঞ্চ থেকে পরে যাওয়ার সময় তার বাম পা ভেঙে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের পরামর্শে স্বজনরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তার বাম পায়ে অস্ত্রপোচার করা হয়। ওই হাসপাতালের পুরাতন ভবনের চার তলায় নারী রোগীদের জিএইচও ওয়ার্ডের ২৬ নম্বর শয্যায় চিকিৎসা চলছিল তার। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ঢাকা থেকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি কুচাইপট্টি আনার প্রক্রিয়া চলছে।

এ ব্যাপারে নার্গিস বেগম বলেন, আমরা জোহরাকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু বাঁচাতে পারলাম না। ওর দুই ছেলে ও এক মেয়ে মা হারা হলো। ওদের এখন কি হবে। কি বলে শান্তনা দেব ওদের।  

এ ব্যাপারে কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন বলেন, জোহরা জীবন বাঁচাতে সাহসিকতার সঙ্গে ১০ ঘণ্টা মেঘনা নদীতে ভেসেছিলেন। সবার সহযোগিতায় তার উন্নত চিকিৎসা চলছিল। সেই জোহরা এভাবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাবেন বুঝতে পারিনি। তাকে দাফন করার জন্য গ্রামে আনা হবে। আমরা তার পরিবারের পাশে থাকবো।

** লঞ্চ থেকে পড়ে নিখোঁজ নারীকে পাওয়া গেল ১০ ঘণ্টা পর

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।