ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সোনাগাজীতে যুবলীগকর্মীর স্ত্রীর মামলায় দুই আ. লীগ নেতার জামিন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
সোনাগাজীতে যুবলীগকর্মীর স্ত্রীর মামলায় দুই আ. লীগ নেতার জামিন যুবলীগকর্মী মোখসুদ আলম বিপ্লব

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে যুবলীগকর্মী মোখসুদ আলম বিপ্লবের স্ত্রীর দায়ের করা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় দুই আওয়ামী লীগ নেতা হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন। অপর দুজন জামিনের জন্য ঢাকায় অবস্থানকালে সোমবার (২০ মার্চ) রাতেই র‍্যাবের হাতে আটক হয়েছেন।

 

জামিনপ্রাপ্তরা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. রফিক ও যুবলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ছাড়াইতকান্দি হোছাইনিয়া দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি, আওয়ামী লীগ নেতা আলী মর্তুজা ও যুবলীগ কর্মী মোহাম্মদ করিম। তাদের ঢাকার শাহবাগ এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।  

পুলিশ ও আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মার্চ দুপুরে নিজ ঘর থেকে সোনাগাজী সদর ইউনিয়ন যুবলীগের কর্মী মোখসুদ আলম বিপ্লবের (৩৬) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একইদিন নিহতের মামা আবুল হাশেম বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দুদিন পর ১০ মার্চ নিহত বিপ্লবের স্ত্রী আকলিমা আক্তার বাদী হয়ে চার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতার নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনার ধারায় সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।  

মামলা দায়েরের পর আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। মামলার আসামিরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ রফিক, চরচান্দিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি নাজিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা ও ছাড়াইতকান্দি হোছাইনিয়া মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলী মর্তুজা ও চরচান্দিয়ার যুবলীগ কর্মী মোহাম্মদ করিম এবং অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জন।  

মঙ্গলবার হাইকোর্টে হাজির হয়ে মোহাম্মদ রফিক ও নাজিম উদ্দিন জামিনের আবেদন করলে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের বেঞ্চ তাদের ছয় সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন। ছয় সপ্তাহের মধ্য নিন্ম আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মো. জুলফিকার।

নিহত বিপ্লব সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের পশ্চিম সুজাপুর গ্রামের চুনি মাঝি বাড়ির সৌদি আরব প্রবাসী নূরুল হক খোকা মিয়ার ছেলে ও তিন পুত্র সন্তানের জনক।

৯ মার্চ ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বিপ্লবের স্ত্রী মামলায় উল্লেখ করেন আসামিদের সঙ্গে তার স্বামী বিপ্লবের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। পুর্ব বিরোধের জেরে আসামিরা তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। তার স্বামী তার ব্যবহৃত ফেইসবুক লাইভে এসে এর প্রতিকারও চেয়েছিলেন। তার কাছেও সবসময় দোয়া চাইতেন। গত কয়েকদিন যাবৎ তিনি তিন সন্তান নিয়ে তার বাবার বাড়িতে ছিলেন। ৮ মার্চ স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সোনাগাজী থানায় গেলে থানায় স্বামীর মরদেহ দেখতে পান। ঘটনার দিন তার শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম ঢাকার একটি হাসপাতালে ছিলেন।  

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান দুই আসামি গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার দুপুরে কারাগারে পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।  

পুলিশ আরও জানায়, মোখসুদ আলম বিপ্লবের বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় চারটি ডাকাতি ও চারটি মাদক আইনের মামলাসহ মোট ৮টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো মাথায় নিয়ে সে একাধিকবার জেলও খেটেছেন।  

২০২২ সালের আগস্ট মাসে চরচান্দিয়া ইউনিয়নে ইয়াবা উদ্ধারের একটি ঘটনায় অন্য একজনের সঙ্গে মোখসুদ আলম বিপ্লবকে আসামি করে মামলা রুজু এবং ঘটনায় জড়িত যুবলীগ নেতা নাজিম উদ্দিনের নাম বাদ পড়ায় বিপ্লব আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ রফিক ও থানা পুলিশকে দায়ী করেন। তৎকালীন সময়ে নিজের ফেইসবুকে লাইভে এসে মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে প্রতিকার চাইতেন।  

এছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ রফিকের নাম বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিতেন। সর্বশেষ মৃত্যুর আগের দিনও ওই নেতার নাম উল্লেখ করে মিথ্যা মামলায় পুনরায় জামিন নিয়েছেন মর্মে তার ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তার মৃত্যুর পর প্রায় সাত মাস আগে ফেইবুক লাইভে চার নেতার বিরুদ্ধে দেওয়া তার বক্তব্যটি ভাইরাল হয়।

>>আরও পড়ুন: যুবলীগকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আ.লীগের ৪ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
এসএইচডি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।