ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

নন্দন-এ শিশুদের কল্পনার জগত

ফারুক আহমেদ, ফিচার এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৪
নন্দন-এ শিশুদের কল্পনার জগত

নন্দন শব্দটা কানে এলে নান্দনিকতা নামক একটি অনুষঙ্গ মাথার ভেতর ঢুকে পড়ে। অবশ্য পর মুহূর্তেই মনে হয়, নান্দনিকা জিনিসটা কী, এর চেহারাই বা কেমন?  ফলে এ নিয়ে ভাবতে শুরু করে এক বিরাট জটের ভেতর আটকা পড়তে হয়।

কিন্তু যখন বাংলানিউজ লাইফস্টাইল-এর বিভাগীয় সম্পাদক শারমীনা ইসলাম জানালেন, আমাকে নন্দন-এ যেতে হবে ১৬ তারিখে, বিজয় দিবসে, তখন খুশিই হয়ে উঠলাম। নন্দনবোধ কেমন, নান্দনিকতার চেহারা কেমনতর, তা যে নিজ চোখে দেখা হয়ে যাবে। মাথার ভেতর যে জটটা আছে, তাও অনেকাংশে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

যাহোক সকাল ১১টায় নন্দনে পৌঁছার কথা থাকলেও, নানা বিভ্রাটের কারণে পৌঁছাতে পৌঁছাতে লেগে গেলো সাড়ে বারোটা। আমি তো একা নই—দুই ভাগনি, মুনা, নওরীন, সঙ্গে নোভা, ছবি আকার জন্য ওরাও আমার সঙ্গে রওনা করলো, আর আমার স্ত্রী। কিন্তু পথবিভ্রাট, পথ আর ফুরোয় না। এর মধ্যে নন্দন-এর মার্কেটিং হেড জুবায়েদ আল হাফিজ  ভাইয়ের ফোন, কোথায় আপনি, বাচ্চাদের ছবি আকা তো শেষ...

একটু লজ্জাবোধ নিয়েই পৌছাই নন্দন গেইটে। জুবায়েদ  ভাই আমাদের নিয়ে যান, নান্দনিকতা ছড়ানো সবুজ উদ্যোনে। আসলে আগেও একবার যাওয়া হয়েছিল, সেবার পুরো সময় কাটিয়ে দিই ওয়াটার ওয়োল্ডেই। এবার কিন্তু পুরোটা ঘুরে ঘুরে দেখতে শুরু করলাম। নন্দনকে মনে হলো পুরো নন্দনকানন। ছোট ছোট বাচ্চাদের উচ্ছ্বাস সত্যিই এটাকে একটি আনন্দঘেরা কাননে পরিণত করলো।

বিজয় দিবস উপলক্ষে রকমারি আর পাঞ্জেরীকে সঙ্গে নিয়ে নন্দন শিশুদের বিশেষ এক অঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বাচ্চারা তার ভেতরের যে রং, ওরা দেশকে যে কল্পনায় দেখে তাই তুলিতে আঁকবে। এমন একটা প্রতিযোগিতার মিডিয়া পার্টনার বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করে পেরে সত্যিই আমার গর্ব হলো।

দেরিতে পৌঁছালেও জুবায়েদ  ভাইয়ের সুবাদে অনেকগুলো ছবি দেখার সুযোগ হলো, তার থেকে বাছাই করতে হবে ২০টা। কিন্তু সে বড় কঠিক কাজ। ছোটদের ভেতর যে রঙিন জগত থাকে, তাদের ভাবনা যে বর্ণিল, তার থেকে সেরা ২০— সে অসম্ভব কাজ। তারপরও আমরা কয়েকজন মিলে চেষ্টা করলাম। কিন্তু হলো বলে মনে হয় না। তাদের বহুবর্ণিলতার ভেতর আমাদের বয়স্ক মগজ ধরা খেয়ে গেলো। মনে হলো আসলে সবাই সেরা। সবারই আলাদা আলাদা কল্পনার জগত জাগিয়ে দিয়েছে।

তারপরও তার থেকে ২০টা নির্বাচিত ২০ টা ছবি বাংলানিউজ প্রকাশ করবে। আর এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে, একটা প্রায় পুরো দিন নন্দনে কাটাতে পেরে সত্যিকার সুখই পেলাম।

এদিন সকাল ১১টায় শুরু হয় চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা। চিত্রাংকন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের জন্য ছিল নন্দন পার্কে প্রবেশ এবং রাইডগুলো ছিল একদম ফ্রি। এছাড়াও বাড়তি আনন্দন দানের জন্য ছিল ফ্রি নিজের ক্যারিকেচার করানোর সুযোগ, ছিল ফ্রি বায়স্কোপ।

আরও ছিল রকমারির স্টল, পিবিএস এর বুক স্টল, ম্যাজিক শপ, গিফট শপ। নন্দন পার্কের নিজস্ব আয়োজনে ছিল নানাধরনের শীতের পিঠা।

বিকেল ৩টায় শুরু হয় ২য় পর্ব। ২য় পর্বের শুরুতেই ছিল পাপেট শো। পরপর সার্কাস আর ম্যাজিক শো দেখানো হয়।

সবচেয়ে বড় চমক ছিল অংশগ্রহণকারী ২২৪ জন শিশুদের বিজয় দিবসে ছবির জন্য প্রত্যেককে দেওয়া হয় সার্টিফিকেট আর পিবিএস এর সৌজন্যে বই এবং রকমারীর সৌজন্যে গিফট ভাউচার।

বিশেষ এই দিনে নন্দনে গিয়ে শিশুদের সঙ্গে মিলে আমরাও যেন হারিয়ে গিয়েছি, সেই হারানো শৈশবে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।