ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বাহাত্তরের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্প্রবর্তন সময়ের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
বাহাত্তরের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্প্রবর্তন সময়ের দাবি

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রণীত ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদটি পুনর্প্রবর্তন সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।  
 
বিচার বিভাগ পৃথকের ৯ম বর্ষপূর্তিতে সুপ্রিম কোর্টে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাণীতে সোমবার (৩১ অক্টোবর) এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।


 
বাণীতে তিনি বলেন, সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর উক্ত বিভাগের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে। অপরদিকে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বিচার বিভাগের ধীরগতির অন্যতম কারণ। ১১৬ অনুচ্ছেদের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি এবং শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে এককভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্বৈত শাসনের ফলে বহু জেলায় শূন্যপদে সময়মতো বিচারক নিয়োগ প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটে। এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়।  
 
উল্লেখিত প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রণীত ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদটি পুনর্প্রবর্তন হওয়া সময়ের দাবি।
 
যাতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দ্বায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি ও ছুটি মঞ্জুরিসহ) শৃঙ্খলাবিধান সুপ্রিমকোর্টের ওপর ন্যাস্ত থাকবে। বিধানটি পুনর্প্রবর্তন করলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আরো সমুন্নত ও সংহত হবে এবং বিচার বিভাগের সার্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হবে।  
 
স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার এবং বাঙালি জাতির স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি একটি অনন্য সংবিধান। আমাদের মূল সংবিধানে বিচার বিভাগ পৃথকের বিষয়টি স্পষ্ট থাকলেও প্রকৃতপক্ষে পৃথকের জন্য আগে আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং সামরিক সরকারের অবৈধ হস্তক্ষেপে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিভিন্ন সময় লঙ্ঘিত হয়েছে।

আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তীব্র অবকাঠামোগত ও নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দ্রুত ও গুণগত বিচার নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার ফলে বিচার বিভাগের ওপর জনগণের আস্থা ক্রমশ বাড়তে থাকে।

কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় দীর্ঘ ৯ বছর পরও এখন পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসির জন্য পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামোগত স্থাপনা নির্মাণ হয়নি। ৪২টি জেলায় ম্যাজিস্ট্রেসি বিল্ডিং নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৪টি জেলায় বিল্ডিং আংশিক হস্তান্তর করা হয়েছে। ৮টি জেলায় ম্যাজিস্ট্রেসি বিল্ডিং নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও তা এখনও ব্যবহার উপযোগী হয়নি। ২১টি জেলায় বিল্ডিং নির্মাণের কাজ ধীরগতিতে চলছে। ৯টি জেলায় বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরুই হয়নি। অধিকন্তু ২৫টি জেলা জজ আদালতের ঊর্ধ্বমুখি সম্প্রসারণ কাজেও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।  

ফলশ্রুতিতে ১৭০ জন বিচারককে এজলাস ভাগাভাগি করে বিচার কাজ পরিচালনা করতে হচ্ছে। এতে বিচারিক কর্মঘণ্টার পূর্ণ ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না। যা মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিরুপ প্রভাব ফেলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১,২০১৬/আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।