ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাইকোর্টে এমপি রাসেল, বাইরে আ’লীগের হাজারো নেতাকর্মী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৬
হাইকোর্টে এমপি রাসেল, বাইরে আ’লীগের হাজারো নেতাকর্মী

ঢাকা: গাজীপুরের জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার ঘটনায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিল মামলার রায় ঘোষণা শুরু হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই।

রায় শুনতে হাইকোর্টে এসে এজলাসকক্ষে ঢুকেছেন নিহত আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।

আর আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী। আহসান উল্লাহ মাস্টার ও জাহিদ আহসান রাসেলের এলাকা থেকে এসেছেন তারা।  

বুধবার (১৫ জুন) বেলা একটার দিকে এ রায় ঘোষণা করবেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

এর আগে গত ০৮ জুন চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১৫ জুন রায়ের এ দিন ধার্য করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহরীন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মনজু নাজনিন।

আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ কয়েকজন আইনজীবী।
 
বিচার প্রক্রিয়া
২০০৪ সালের ০৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার পরদিন আহসান উল্লাহ মাস্টারের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এ মামলায় ওই বছরের ১০ জুলাই ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ২৮ অক্টোবর ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে ৩৪ জন এবং আসামিপক্ষে দু’জন সাক্ষ্য দেন।

এরপর বিচার শেষে ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল বিচারিক আদালত নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ২ জনকে খালাস দেন।

আইনজীবীদের দেওয়া তথ্যমতে, দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ২ জন মারা গেছেন,  ১৭ জন কারাগারে, বাকি ৯ জন পলাতক রয়েছেন।

পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হয়।

গত ২১ জানুয়ারি থেকে এ আপিল মামলার শুনানি শুরু হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু (পলাতক), মোহাম্মদ আলী, মাহবুবুর রহমান মাহবুব, আমির হোসেন, সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু (পলাতক), জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, শহীদুল ইসলাম শিপু, হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ, আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু (পলাতক), ফয়সাল (পলাতক), সোহাগ ওরফে সরু, লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, আল আমিন (মারা গেছেন), রতন মিয়া ওরফে বড় মিয়া, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক),  জাহাঙ্গীর (পলাতক), রতন ওরফে ছোট রতন (মারা গেছেন), আবু সালাম ওরফে সালাম, মশিউর রহমান ওরফে মনু (পলাতক), খোকন (পলাতক) ও দুলাল মিয়া ।  

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছয় আসামি হলেন- রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর, নুরুল আমিন, মনির ও অহিদুল ইসলাম টিপু (পলাতক)।

খালাস পান কবির হোসেন ও আবু হায়দার ওরফে মিরপুরইয়া বাবু।

একনজরে আহসান উল্লাহ মাস্টার
১৯৫০ সালের ৯ নভেম্বর গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন আহসান উল্লাহ মাস্টার। ১৯৬৫ সালে এসএসসি পাস করে তৎকালীন কায়েদে আযম কলেজে (বর্তমান শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজ) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। ১৯৭০ সালে ডিগ্রি পাস করার পর তিনি টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া হাইস্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
 
এর আগে ছয় দফা ও ১১ দফাসহ বাঙালির মুক্তির আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তিনি।
 
১৯৮৩ ও ১৯৮৮ সালে দু’বার পুবাইল ইউপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আহসান উল্লাহ মাস্টার। পরে ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।
 
জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

আহসান উল্লাহ মাস্টার গাজীপুর-২ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালের ৭ মে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নিহত হন আহসানউল্লাহ মাস্টার।

** হাইকোর্টে আপিল মামলার রায় দুপুরে

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।