ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আইডিয়ালের মুশতাকের মামলা ফের তদন্ত করবে পিবিআই 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৪
আইডিয়ালের মুশতাকের মামলা ফের তদন্ত করবে পিবিআই 

ঢাকা: রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর মামলা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুই আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ফাইনাল রিপোর্টের বিরুদ্ধে বাদীর দেওয়া নারাজি আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক শওকত আলী এ আদেশ দেন।

 

গত বছর তাদের দুজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা। এরপর ওই বছর ১৪ নভেম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-৮ এ বদলির আদেশ দেন।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয়নি এবং কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের সহযোগিতার অভিযোগও প্রমাণ হয়নি। মামলা দায়েরে তথ্যগত ভুল রয়েছে। তাই আসামিদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।  

২০২৩ সালের ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে কলেজছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া সহযোগী হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকেও আসামি করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।

মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভিকটিম) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভিকটিমকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে নিতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে তিনি ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কয়েকদিন পর অভিযুক্ত মুশতাক ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন মুশতাক। ভিকটিম এ রকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। অধ্যক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভিকটিমকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে অভিযুক্তকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।

এ বিষয়ে বাদী প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি অধ্যক্ষ বরং অভিযুক্ত মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করেন তিনি। বাদী উপায় না পেয়ে ওই বছর ১২ জুন ভিকটিমকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে অভিযুক্ত মুশতাক তার লোকজন দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বাদী জানতে পারেন তিনি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছেন এবং যৌন নিপীড়ন করছেন।

মামলা দায়েরের পর ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। এরপর একই বছর ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালত থেকে নিয়মিত জামিন লাভ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৪
কেআই/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।