ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

চার্জশিটে মূল আসামিকে বাদ দেওয়ায় ফেঁসে গেলেন তদন্ত কর্মকর্তা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪
চার্জশিটে মূল আসামিকে বাদ দেওয়ায় ফেঁসে গেলেন তদন্ত কর্মকর্তা

মেহেরপুর: মেহেরপুর সীমান্তে বিজিবির অভিযানে চাঞ্চল্যকর ফেনসিডিল উদ্ধার মামলার মূল আসামির নাম বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট দেওয়ায় ফেঁসে গেলেন তদন্ত কর্মকর্তা গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন কুমার বিশ্বাস।  
তিনি বর্তমানে মাগুড়া থানায় কর্মরত।

পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নয় এমন কর্মকর্তা দিয়ে মামলাটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক। একই সঙ্গে এসআই স্বপন কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ সুপারকে আদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে মেহেরপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুর রহমান সরদার এই আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী সওড়াতলা গ্রামে ফেনসিডিলের একটি বড় চালান পাচার হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির সহড়াতলা ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার জাকির হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালান। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারিরা ছয় বস্তা ফেনসিডিল ফেলে পালিয়ে যান। কিন্তু টর্স লাইটের আলোতে সুবেদার জাকির হোসেন এলাকার দুজন শীর্ষ ফেনসিডিল কারবারিকে চিহ্নিত করেন। মাদক কারবারিরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে ৫৯৫ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। ফেনসিডিল উদ্ধারের ঘটনায় ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) এর ৩ (খ) ধারায় গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বিজিবি।

এই মামলার এজাহারে শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ রুবেলের নাম উল্লেখ করা হয়। পরে তৎকালীন গাংনী থানার এসআই স্বপন কুমার বিশ্বাস মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান। তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বপন কুমার বিশ্বাস সম্পূর্ণ পরিকল্পিত উপায়ে কতিপয় সাক্ষীদের কার্যবিধির ১৬১ ধারায় জবানবন্দি তৈরি করে বেআইনিভাবে প্রধান আসামি শরিফুল ইসলামকে বাদ দেন। অপর আসামি রুবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

আদালতের ধারণা তদন্তকারী কর্মকর্তা একটা বড় ধরনের মাদক মামলার প্রধান আসামির কাছ থেকে অনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে অথবা অন্য কোনোভাবে প্রভাবিত হয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে মামলার ৩১২ নম্বর অভিযোগ পত্রে অভিযোগ দায় থেকে ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর মামলার মূল আসামি শরিফুল ইসলামকে অব্যাহতের সুপারিশ করেন।

বিজ্ঞ আদালত মামলাটি একজন পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিম্নে নহে এমন কোনো কর্মকর্তার মাধ্যমে পূর্ণ তদন্তের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই মামলার আদেশসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের ফটোকপি মেহেরপুর পুলিশ সুপার বরাবর পাঠানোর আদেশ দেন।

আদেশে মেহেরপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমান সরদার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ মাদকের মামলাটি বিধি মোতাবেক পুনঃতদন্ত হওয়া আবশ্যক মর্মে নিবেদন করেন। এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই স্বপন কুমার বিশ্বাস (বিপি-৭৭৯৪০২৫৪৫৬) কর্তৃক মামলার প্রধান আসামিকে বেআইনিভাবে নট সেন্ট আপ করার দায়ে বিধি মোতাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।