ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

শুদ্ধতার মোড়কে থাকুক রমজান

মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৫
শুদ্ধতার মোড়কে থাকুক রমজান

সিয়াম সাধনায় মশগুল এখন সবাই। এমতাবস্থায় অনেকেই কেবল পানাহার ছেড়ে ভাবছেন রমজানের হক আদায় হয়ে যাচ্ছে।

রোজার আসল উদ্দেশ্য হাসিল করছি। বিষয়টি আসলেই তেমন? অথচ রোজা অবস্থায় দিনরাত পরনিন্দা, অপরের দোষচর্চা, অহেতুক গল্পগুজবে মত্ত থেকে রোজার দিনগুলো পার করছে কেউ কেউ। কেউ বা আবার লোক দেখানো রোজা, নামাজ, তেলাওয়াতে গড়াচ্ছে সময়।

বস্তুত রোজার আসল উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে দিনে পানাহার থেকে বিরত থাকা; খারাপ-অশ্লীল কথা মুখে উচ্চারণ না করা এবং সর্বপ্রকার অন্যায় ও গর্হিত কাজ থেকে বেঁচে থাকা। কারণ সত্যিকারের রোজা তা-ই, যাতে এ ধরনের গর্হিত কর্মকাণ্ড শোভা পায় না। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন- ‘রোজাদার ব্যক্তির জন্য রোজামুখে কোনো খারাপ কথা উচ্চারণ না করা উচিৎ। যদি কেউ তার সঙ্গে ঝগড়া কিংবা গালমন্দ করে, তাহলে রোজাদার বলবে- আমি রোজা রেখেছি। তোমার কোনো খারাপ কথার উত্তর দেবো না। ’ রাব্বে কারিম ইরশাদ করেন- ‘রোজা রাখার দ্বারা অন্তর পবিত্র ও কলুষমুক্ত হয়। ’

তাছাড়া সত্যিকারের রোজার ফলেই লাভ করা যায় অনাবিল সুখনগরী জান্নাত। রাসূল (সা.) বলেন— ‘রোজা হলো দোজখ থেকে আত্মরক্ষার উপায়। ’
রোজা রেখে অফিস কিংবা বাসাবাড়িতে বেশির ভাগকেই দেখা যায় গিবত তথা অপরের দোষচর্চা করতে। অথচ রাব্বে কারিম ইরশাদ করেন- ‘তোমরা একে অপরের গিবত ক’রো না। ’ (সূরা হুজুরাত : ১২)। সাহাবিগণ রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন- ‘গিবত কি?’ রাসূল (সা.) বললেন- ‘তোমাদের ভাইয়ের ব্যাপারে এমন কোনো কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে। ’ সাহাবায়ে কেরাম বললেন- ‘যদি সে দোষটি তার মাঝে সত্যিই থাকে?’ প্রিয়নবী (সা.) বললেন- ‘সে দোষ তার মাঝে থাকলে, তবেই তোমরা গিবত করলে; আর যদি না থাকে, তবে তো অপবাদ লাগালে। ’

গিবত কেবল মুখেই হয় না; হাত-পা, চোখ, ইত্যাদি দ্বারাও হয়। যেমন- একজন লোক খোঁড়া। কেউ যদি তার অনুকরণ করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে দেখায়, তাহলে সে তার গিবত করলো। রাব্বুল আলামিন গিবতের নিকৃষ্টতা তুলে ধরেছেন এভাবে- ‘তোমাদের মাঝে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করে? বস্তুত তোমরা তো তা ঘৃণা করো। ’ (সূরা হুজুরাত : ১২)। এ আয়াত দ্বারা বোঝা গেল, গিবত করা ঠিক সে ধরনের ঘৃণার কাজ, যেমন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া।

তবে কোনো কোনো ক্ষেত্র এমনও আছে, যখন একজনকে অপরের দোষ প্রকাশ করতে হয়; তখন তা গোনাহ নয়। ক্ষেত্রগুলো সাধারণত এমন- ১. ধর্মীয় ও চারিত্রিক দোষে বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে, ২. ফতোয়া গ্রহণের প্রয়োজনে, ৩. একজনের অনিষ্ট থেকে অন্যকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে, ৪. কোনো ব্যক্তি এমন নামে পরিচিত হয়ে গেছে- যা মূলতঃ অমর্যাদাকর; কিন্তু এখন সে তাতে মনোক্ষুণ্ন না হলে, ৫. কোনো পদস্থ ব্যক্তি সম্পর্কে তার অফিসারের সামনে অভিযোগ করলে, ৬. প্রকাশ্যে যে অপরাধ করে, তার অনিষ্টতা বর্ণনা করতে হলে।

রমজানে পরনিন্দা বা অপরের দোষচর্চা তো দূরে থাক, শক্তি-সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অনেকে ফজিলতের এই ফরজ রোজাই রাখে না। অথচ রোজাদার আল্লাহতায়ালার কাছে খুব পছন্দনীয় ব্যক্তি। তার মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশকআম্বর থেকেও সুগন্ধির। রোজা ও রোজাদারের এত ফজিলত থাকাসত্ত্বেও তারা হোটেল, রেস্টুরেন্ট কিংবা বাসাবাড়ির গোপন কক্ষে দিব্যি পেটপুরে পানাহার করে পার করে মাহে রমজানের দিনগুলো। আবার ইফতারের ঠিক পূর্বমুহূর্তে এদের অনেককেই দেখা যায় ইফতারের জন্য মসজিদে, বাসাবাড়িতে হল্লা দিতে। তাদের বড় গলায় করা উচ্চবাচ্যে কখনো বা খোদ রোজাদার ব্যক্তিই বিরক্ত হয়ে ঠিকমতো ইফতার করতে পারেন না। মানবতার এ চরম লাঞ্ছনাকর পরিস্থিতি! রাসূল (সা.)-এর পক্ষ থেকে দুর্ভোগ রয়েছে তাদের জন্য, যারা শক্তি-সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও এমন ফজিলত ও মাহাত্ম্যপূর্ণ রোজা রাখা থেকে নিজেদেরকে বঞ্চিত রাখে।

রোজা রাখার আগ্রহ কেবল আমাদের নয়, সাহাবায়ে কেরামের মাঝেও প্রবল ছিলো। যখন তাঁদের ঘরে খাবারের সঙ্কট হতো, তখন বলতেন- ‘আজ আমি রোজাদার। ’ এমনকি নারী সাহাবিদের মাঝেও রোজা রাখার আগ্রহ ও প্রচলন খুব বেশি ছিলো। রোজা রাখার কারণে অনেকে তাঁদের স্বামীর কষ্টের কারণ হতেন। অবশেষে রাসূল (সা.)-এর পক্ষ থেকে আদেশ হলো- ‘কোনো নারী যেনো তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া (নফল) রোজা না রাখে। ’ এর দ্বারা বোঝা যায়, সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-ও সঠিকভাবে রোজার হক আদায় করতেন। তারা অপরের দোষচর্চা ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতেন।  

রমজানে আল্লাহকে স্মরণ ও ক্ষমা প্রার্থনা
আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে- ‘তোমরা মানুষকে নয়, কেবল আমাকেই ভয় করো। ’ -সূরা মায়িদা: ৩

যার থেকে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, মানুষ তাকেই ভয় করে। আমাদের এ কথার নিশ্চিত বিশ্বাস আছে, আল্লাহ তায়ালার হুকুম ছাড়া দুনিয়ার কোনো শক্তি আমাদের কোনো ক্ষতি সাধন করতে পারে না। তাই আল্লাহ ছাড়া আমরা অন্য কাউকে ভয় করবো কোন যুক্তিতে? এ আয়াতে মানুষকে দুটি বিষয়ের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে- ১. আল্লাহ ছাড়া মানুষ অন্য কাউকে কখনোই ভয় করবে না। অর্থাৎ আল্লাহর বিধিবিধান পালনে মানুষ যেনো কখনও কাউকে ভয় না করে। সে ব্যক্তিই প্রকৃত মুসলমান, যার অন্তরে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বিন্দুমাত্র ভয় কখনোই স্থান পায় না। যে নির্ভীকচিত্তে দীনের পথে সদা অটল-অবিচল থাকে। ২. মানুষ আল্লাহতায়ালাকে ভয় করবে। অর্থাৎ তাঁর বিধিবিধান পালনে কখনও বিমুখ হবে না। তিনি মানুষকে যা করতে বলেছেন, মানুষ তা-ই করবে। যা করতে নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকবে। ঘরে-বাইরে, নির্জনে-লোকালয়ে সর্বত্রই তিনি আমাদের দেখছেন, আমাদের কথা শুনছেন- অন্তরে এ বিশ্বাস নিয়ে সদা দীনের পথে অটল-অবিচল থাকবে। মোটকথা, একজন খাঁটি ও অনুগত বান্দা হিসেবে নিজের জীবনকে অতিবাহিত করবে। এজন্য অন্তরে আল্লাহতায়ালার ভয় প্রয়োজন। সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর ভয়ে সর্বদা কাতর থাকতেন। হজরত আসমা (রা.) বলেন- ‘সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর ভয়ে সর্বদা অঝোরধারায় কাঁদতেন। ’ সিয়াম সাধনার পাশাপাশি আমরা বেশি বেশি রাব্বুল আলামিনের জিকির করে তাঁকে স্মরণ করতে পারি। তাহলে যেমনি তাঁর ভয় ও পরকালের শাস্তিভীতি আমাদের হৃদয়ে বদ্ধমূল হবে, তেমনি রমজানে যাবতীয় গর্হিত ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে সহায়ক হবে।

আজকাল অনেকে মনে করে- ‘অনেক পাপ তো করলাম। রোজা রেখে লাভ কী? আবার রোজা না রাখলে মানুষ কী বলবে? এ কারণে রোজাটা রেখেই কেবল দায়মুক্ত হচ্ছি। আমার এ পাপের পাহাড় কী আদৌ মোচন হবে?’ তাদের এ ভুল ধারণার সঠিক পথ বাতলে দিতে ও নৈরাশ্যের আশার বাণী শোনাতেই রাব্বে কারিম ইরশাদ করেন- ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। ’ (সূরা যুমার : ৫৩)। অর্থাৎ যত চাওয়া, সব তাঁর কাছেই চাও। পৃথিবীতে মানুষ একজন আরেকজনের কাছে কিছু তলব করলে সে ভীষণ বিরক্ত ও বিব্রত হয়, পারতঃপক্ষে আদায় করতেও কুণ্ঠাবোধ করে। কিন্তু মহান রাব্বুল আলামিন এমন দয়ালু ও দাতা, যার মহান দরবারে কোনো কিছু তলব করলে তা প্রদানে তিনি সামান্যও কুণ্ঠাবোধ করেন না। তবে তা মানুষের প্রয়োজন অনুসারে। যদি তা তার জন্য দুনিয়াতেই কল্যাণকর হয়, তাহলে তিনি দুনিয়ায়, আর পরকালে কল্যাণকর হলে পরকালে দান করেন। তাই এ কথা ভেবে তাঁর দরবারে প্রার্থনা না করা ঠিক নয় যে- ‘এত চাই, কিন্তু তিনি তো আমার কোনো দোয়াই কবুল করছেন না। তিনি তো আমার প্রতি ফিরিয়েই তাকাচ্ছেন না। নাকি তিনি কেবল আমাকেই দেখতে পান না। ’ আজকালকার দিনে যেমনটা আমাদের অনেকেই কেবল অন্তরে নয়, মুখেও এসব বুলি দিব্যি আওড়াতে থাকেন।

মানুষ যেমন আল্লাহর শাস্তিকে ভয় করবে, তেমনি তাঁর রহমত ও অনুগ্রহের প্রতিও আশাবাদী হওয়া চাই। মুসলমানের উচিৎ, সর্বদা আল্লাহর প্রতি আশাবাদী হওয়া। পরকালে আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহ প্রদর্শনে বলা হবে- ‘একে দোজখে নিয়ে যাও। ’ দোজখের কিনারায় পৌঁছার পর লোকটি এদিক-ওদিক তাকাবে আর বলতে থাকবে- ‘আল্লাহর শপথ, আমি আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আশাবাদী ছিলাম। আমার ধারণা ছিলো, তিনি আমার সঙ্গে ভালো আচরণ করবেন। ’ তখন রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে বলা হবে—‘যাও, তাকে ফিরিয়ে নিয়ে এসো। (শুনে রাখো) আমি আমার বান্দার ধারণার খুব কাছাকাছি (অর্থাৎ বান্দা আমার প্রতি যেমন ধারণা রাখবে, আমি তার সঙ্গে তেমন আচরণ করবো)। ’ একবার মৃত্যুশয্যায় শায়িত একজন সাহাবিকে রাসূল (সা.) বললেন- ‘কি অবস্থা তোমার?’ উত্তরে সাহাবি বললেন- ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার গোনাহের ব্যাপারে ভয় করছি। তবে অন্তরে আল্লাহর মাগফিরাতেরও আশা রাখছি। ’ রাসূল (সা.) বললেন- ‘যার অন্তরে আল্লাহর ভয়-আশা উভয়টাই থাকে, আল্লাহ তায়ালা তার ভয়কে দূর করে দেন এবং তার আশাকে পূর্ণ করেন। ’

আল্লাহতায়ালার দয়া-অনুগ্রহের ওপর ভরসা করে ইচ্ছাকৃতভাবে কখনও কোনো গোনাহ না করা উচিৎ। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে কখনও কোনো গোনাহ হয়ে গেলে তাঁর কাছে তওবা করে নেয়া চাই। পাশাপাশি তাঁর রহমতের ওপরও আশা রাখা উচিৎ। তাই সাহরি খাওয়ার পূর্বে শেষরাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে সর্বপ্রথম (কমপক্ষে চার রাকাত) তাহাজ্জুদ পড়ে নেয়া ভালো। এরপর দুহাত তুলে অঝোরধারায় রোনাজারি করে তওবা করা চাই। রাব্বে কারিম ইরশাদ করেন- ‘তোমরা তোমাদের পালনকর্তার দরবারে প্রার্থনা করো। এরপর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ করো। ’ (সূরা হুদ : ৫২)।

‘তওবা’ শব্দের অর্থ ফিরে আসা। কৃত অপরাধ থেকে ফিরে এসে আল্লাহ তায়ালার কাছে সেই অপরাধ স্বীকার করা, কৃত অপরাধের জন্য লজ্জিত হওয়া এবং ভবিষ্যতে সে গোনাহে লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ়সংকল্প করার নামই তওবা। তবে তওবা যদি বান্দার হক সম্পর্কিত কোনো গোনাহের জন্য হয়, তাহলে পাওনাদারের হক ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত পূর্ণ হবে না। যেমন- কারও কোনো মাল নিজের কাছে থাকলে, তা মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়া অথবা কারও প্রতি যদি কোনো অপবাদ আরোপ করা হয়, তাহলে তার কাছে নিজ অপরাধের ক্ষমা চেয়ে নেয়া।

পরিধেয় কাপড় অপরিষ্কার কিংবা ময়লাযুক্ত হলে সাবান কিংবা পরিষ্কারক বস্তু দ্বারা যেমনি পরিষ্কার করা হয়, তেমনিভাবে গোনাহের কারণে মানুষের অন্তর কলুষিত ও ময়লাযুক্ত হলে তওবা-ইস্তিগফারের মাধ্যমে সে ময়লা ও কলুষতা দূর করা যায়। রাসূল (সা.) নবী হওয়াসত্ত্বেও প্রতিদিন সত্তরবার আল্লাহর কাছে তওবা-ইস্তিগফার করতেন। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন- ‘শয়তান একবার আল্লাহতায়ালাকে বললো, মানুষের দেহে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু থাকা পর্যন্ত আমি মানুষকে বিভ্রান্ত করতে থাকবো। আল্লাহতায়ালা বললেন, আর বান্দা যতক্ষণ তওবা-ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করতে থাকবে, ততক্ষণ আমি তাকে ক্ষমা করতে থাকবো। ’ তাই শেষরাতে সাহরির পূর্বে কমপক্ষে চার রাকাত তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহতায়ালার কাছে নিজ গোনাহের জন্য ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিৎ।
 
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন- ‘মানুষের অতি উত্তম গুণ হলো প্রার্থনা করা। ’ তাই সর্বদা পিতামাতা, পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্তুতি, অলি-বুজুর্গ এমনকি সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করা উচিৎ। তবে দোয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম হলো কোনো বৈধ, উপকারী ও কল্যাণকর বিষয়ে দোয়া করা। অবৈধ কিংবা অকল্যাণকর কোনো বিষয়ে (যেমন নিজের বা অন্যের সন্তান বা সম্পদহানীর) দোয়া না করা চাই। ‘আমার দোয়া অবশ্যই কবুল হচ্ছে। ’ অত্যন্ত বিশুদ্ধ ও নিষ্ঠাপূর্ণ মনে এ কথার নিশ্চিত বিশ্বাস রেখে দোয়া করা চাই। দোয়া হওয়া চাই নির্জনে ক্রন্দনরত ভীতবিহ্বল মনে। কেননা আল্লাহতায়ালা গাফেলদের দোয়া কবুল করেন না।

দোয়া কবুলের বিশেষ সময়
কোরআন ও হাদিসের বর্ণনানুসারে দোয়া কবুল হওয়ার বেশ কতগুলো সময় রয়েছে। তন্মধ্যে যেসব সময়ে বেশি কবুল হয়, তা হলো- ১. ফরজ নামাজের পর; ২. প্রবল বর্ষণের সময়; ৩. রাতের শেষভাগে।

রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন- ‘আল্লাহতায়ালার কাছে যখন কোনো বান্দা দুহাত তুলে কোনো কল্যাণের প্রার্থনা করে, তখন তিনি তাকে নিরাশ করে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৫     
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।