ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

করোনা সঙ্কটে নাগরিকদের পাশে ‘৩৩৩’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
করোনা সঙ্কটে নাগরিকদের পাশে ‘৩৩৩’

ঢাকা: করোনা ভাইরাসের এ সঙ্কটের সময়ে দেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হেল্পলাইনে পরিণত হয়েছে কল সেন্টার ‘৩৩৩’।

যেকোনো সময়ে ‘৩৩৩’ নম্বরে ফোন দিয়ে মানুষ করোনা ভাইরাস সম্পর্কে তথ্য, চিকিৎসকের পরামর্শ, খাদ্যসহ বিভিন্ন সহায়তা পাচ্ছে। সরকারের এ ইতিবাচক উদ্যোগটি সাধারণ জনগণের মধ্যে বহুল প্রশংসিত ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

সরকারের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের আওতায় ‘৩৩৩ কল সেন্টার’ জাতীয় তথ্য ও সেবা দেওয়ার কাজ করছে, যার সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড।

জেনেক্স ইনফোসিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের এ দুর্যোগে অধিকাংশ অফিস-আদালত যখন বন্ধ, তখন বিরতিহীন সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ৩৩৩-এ নিয়োজিত জেনেক্স কর্মীরা।

সরকারি সেবা প্রাপ্তির পদ্ধতি, সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে তথ্য ও নাগরিকসেবা প্রাপ্তির বিষয়ে অভিযোগ জানানো দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে এ কল সেন্টার। তবে এখন পরিবেশ দূষণ, সরকারি গাছকাটা, ভোক্তা অধিকার, ভেজাল নিয়ন্ত্রণ, মাদক, চোরাচালান, ইভটিজিং,বাল্যবিয়ে প্রতিরোধসহ নানা সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্যও কাজ করছে কল সেন্টারটি।

মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এ সম্পর্কে তথ্যসেবা দেওয়া চালু করে ৩৩৩ কল সেন্টার। পরে চিকিৎসাবিষয়ক ফোন আসতে শুরু করায় এটুআই এর সহযোগিতায় প্রযুক্তি নির্ভর কারিগরি সমন্বয় করা হয়। ফলশ্রুতিতে এখন ৩৩৩ নম্বরে কল করলেই যেকোনো গ্রাহককে সরাসরি চিকিৎসকদের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় খাদ্য সহযোগিতার আবেদন এবং ত্রাণ সহায়তা কর্মসূচি সংক্রান্ত তথ্য ও সেবা ৩৩৩ কল সেন্টারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দেশের আটটি বিভাগ থেকে জরুরি খাদ্য সহায়তাবিষয়ক অনুরোধ প্রতিদিনই প্রশাসন ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাছে পাঠানো হচ্ছে।

জেনেক্স ৩৩৩ টিমের কর্মী শাহীন বলেন, ‘৩৩৩ এ কাজ করার সুবাদে প্রতিদিনই অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করার সুযোগ হচ্ছে। ’

এক মানবিক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি জানান, চট্টগ্রাম থেকে এক নারী ফোন দেন ৩৩৩ এ। তার স্বামী দিনমজুর। তিনি চার সন্তানের জননী। চলাচলে বিধিনিষেধের কারণে কাজ নেই স্বামীর। সন্তানদের মুখে খাবার নেই। হঠাৎ প্রতিবেশির কাছ থেকে জানতে পারেন ৩৩৩-এ ফোন করলে সহায়তা পাওয়া যায়। ওই নম্বরে ফোন করেন তিনি। রাত ১১টা নাগাদ তার বাড়িতে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেন জেলা প্রশাসন।

জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্রিন্স মজুমদার বলেন, ‘দেশের এ সঙ্কটময় মুহূর্তে হেল্পলাইন ৩৩৩ মানুষের ভরসার জায়গায় পরিণত হওয়ায় আমরা গর্বিত ও অনুপ্রাণিত। আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এবং তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই। সেইসঙ্গে আমি ৩৩৩-এ নিয়োজিত সব কর্মীদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই এই সঙ্কটকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণকে নিরলস সেবা দিয়ে যাওয়ার জন্য। ’

২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর দেশের ৬টি জেলা নিয়ে পাঁচটি তথ্য পরিষেবা দিয়ে ৩৩৩ এর কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৭ সালে তা ৬৪ জেলায় সম্প্রসারিত হয়। ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কল সেন্টার উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২০
এমআইএইচ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।