ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট: নবযুগের নবসূচনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট: নবযুগের নবসূচনা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু উদ্বোধন করেন দেশের প্রথম উপগ্রহ ভূকেন্দ্র

Satellite communications connect television screens in Japan with television cameras in England, and the distance of half a world loses its meaning.
-    Robert Kennedy

দেশের স্বাধীনতার পর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রস্তাব দেন বাংলাদেশ যেন ভারতের আর্থ স্টেশন বা উপগ্রহ ভূকেন্দ্র ব্যবহার করে বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখে। তবে বঙ্গবন্ধু বিনয়ের সাথে এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে নিজ দেশেই আর্থ স্টেশন তৈরির কাজ শুরু করেন।

১৯৭৫ সালে রাঙ্গামাটিতে উদ্বোধন করেন দেশের প্রথম আর্থ স্টেশন বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূকেন্দ্র।

সেই সময় থেকেই দেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট বা উপগ্রহের চিন্তাভাবনা চলতে থাকে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে এই প্রকল্পকে নতুন করে চালু করেন। ২৯৬৭.৯৬ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে শুরু করা হয় বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইটের কাজ। যার মাঝে ১৩১৫.৫১ কোটি টাকা সরকার এবং ১৬৫২.৪৪ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ থেকে সংগ্রহ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিটিআরসি ২০১৫ সালে স্যাটেলাইট তৈরির কাজের টেন্ডার ছাড়েন এবং চারটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি – ফ্রেঞ্চ কোম্পানি থালেস অ্যালেনিয়া স্পেস, চীনের গ্রেট ওয়াল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন, যুক্তরাষ্ট্রের ওরবিট এটিএ এবং কানাডার এমডিএ। অর্থনৈতিক এবং টেকনিক্যাল দিক বিবেচনা করে বিটিআরসি থালেস অ্যালেনিয়ার সাথে ২৪৮ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সাক্ষর করেন।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কাজ ২০১৭ সালের মাঝে শেষ করবে থালেস অ্যালেনিয়া। জাতির পিতার নামে দেশের প্রথম স্যাটেলাইটের নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু -১। চুক্তি স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশের মহান বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু -১ উৎক্ষেপণ করা হবে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, এই প্রজেক্ট শেষ হলে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসাবে মহাশূন্যে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে।
বঙ্গবন্ধু -১ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট
স্যাটেলাইটের ফলে বাংলাদেশের কি উপকার হবে? বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা কি সত্যিই লাভজনক? এই সকল প্রশ্নের উত্তর জানার আগে স্যাটেলাইট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেয়া যাক।

বর্তমান যুগে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা বেশ লাভজনক বলে প্রমাণিত হচ্ছে। স্পেসএক্স নামক এক প্রাইভেট কোম্পানি মহাশূন্যে কৃত্রিম উপগ্রহের সংখ্যা বৃদ্ধি করে প্রায় তিনগুণ করার টার্গেট নিয়েছে। বর্তমানে কাজ করছে এমন মানবসৃষ্ট কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের সংখ্যা প্রায় ১৪১৯। যার মাঝে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের স্যাটেলাইটের সংখ্যাই ৫৬০।
মহাশূন্যে থেকে এই সকল স্যাটেলাইট মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে সাহায্য করে। কিছু স্যাটেলাইট ব্যবহার করে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ভয়েস, ভিডিও এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদান করা হয়, আর অন্যান্য স্যাটেলাইট ব্যবহার করে পৃথিবী এবং মহাশূন্যের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। যেমন, কিছু স্যাটেলাইট ব্যবহার করে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্য ব্যবহার করে ঝড়ের গতিবেগ এবং পথ নির্ণয় করে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।

পৃথিবীর বাইরে থেকে পৃথিবীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার লক্ষ্যেই মানুষ মহাশূন্যে স্যাটেলাইট পাঠায়। আপনি নিজ বাসায় বসে উত্তর মেরুর মত দুর্গম স্থানের মানুষের সাথেও যোগাযোগ করতে পারবেন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। এজন্য আপনাকে একটি স্যাটেলাইটে সিগন্যাল পাঠাতে হবে। স্যাটেলাইট সেই সিগন্যাল আয়নার মত আপনার সিগন্যালের গতিপথ পাল্টে দেবে এবং নিমেষেই আপনার উল্লেখ করা গন্তব্যে সিগন্যাল পাঠিয়ে দিবে। আপনি যদি ক্ষেতের ফসল বা সমুদ্রের তাপমাত্রার মত ব্যাপার পর্যবেক্ষণ করে তথ্য সংগ্রহ করতে চান তাহলে স্যাটেলাইটের সাহায্য নিতে পারেন। যেহেতু স্যাটেলাইট অনেক বেশি উঁচুতে অবস্থান করে তাই যে কোনো প্লেনের চেয়ে দ্রুততার সাথে এবং আরো নিখুঁতভাবে স্যাটেলাইটের পক্ষে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব। এই স্যাটেলাইটের ফলে সত্যিই পৃথিবীতে দূরত্ব বলতে কিছু থাকছে না।

স্যাটেলাইটকে বিভিন্ন ধরনের কাজে লাগানো সম্ভব। স্যাটেলাইটের কাজের উপর ভিত্তি করে একে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়- যোগাযোগ বা কমিউনিকেশন, বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা ইমেজিং অ্যান্ড সাইন্টিফিক সার্ভে এবং ন্যাভিগেশন।

কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটকে বলা হয় “স্পেস মিরর”। এ ধরনের স্যাটেলাইট আসলেই মহাশূন্যে বিশাল এক আয়নার মত কাজ করে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে রেডিও, টিভি, ইন্টারনেট ডাটা এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের তথ্য এই স্যাটেলাইটে পাঠানো হয় এবং কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট সেই ডাটা পৃথিবীর অন্য প্রান্তে পাঠাতে পারে।

কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের কাজ তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়। যেমন ধরুন, কেউ যদি টিভি ব্রডকাস্ট করতে চায় তাহলে সে আপলিঙ্ক (Uplink) এর মাধ্যমে স্যাটেলাইটে তার টিভি চ্যানেলের তথ্য পাঠাবে। এই তথ্য পাঠানো হবে পৃথিবীর একটি গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে। দ্বিতীয় ধাপে স্যাটেলাইট সেই তথ্য গ্রহণ করার পর সেটি প্রসেস করবে “ট্রান্সপন্ডার্স” এর মাধ্যমে। ট্রান্সপন্ডার্সের মাধ্যমে রিসিভ করা তথ্য বা সিগন্যালকে অ্যামপ্লিফাই করে তার ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করা হয়। একই স্যাটেলাইটে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের আপলিঙ্ক প্রসেস করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ট্রান্সপন্ডার্স ব্যবহার করা হয়। অবশেষে এই প্রসেস করা সিগন্যাল ডাউনলিঙ্ক (Downlink)এর মাধ্যমে পৃথিবীর অন্য গ্রাউন্ড স্টেশনে পাঠানো হয়।
কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের কাজে ব্যবহৃত হয় আপলিঙ্ক এবং ডাউনলিঙ্ক
বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে এবং ছবি সংগ্রহের জন্যও ব্যবহার করা হয় অনেক স্যাটেলাইট। আমরা বিভিন্ন সংবাদ বা প্রামাণ্যচিত্রে অনেক সময় ঝড়, সুনামি বা বন উজাড় করার বিভিন্ন ছবি দেখি। এ ধরনের ছবিগুলো স্যাটেলাইট থেকে সংগ্রহ করা হয়। সাইন্টিফিক স্যাটেলাইটও ইমেজিং স্যাটেলাইটের মত কাজ করে, তবে মূল পার্থক্য হলো সাইন্টিফিক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সাধারণ ছবি তোলার বদলে নির্দিষ্ট ধরনের ডাটা সংগ্রহের দিকে মনোনিবেশ করা হয়।

গত কয়েক দশকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাইন্টিফিক স্যাটেলাইট মিশন চালু করা হয়েছে। যেমন, নাসারTOPEX/Poseidon and Jason স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ১৯৯০ সাল থেকে পৃথিবীর সমুদ্রের পানির উচ্চতা বা সি লেভেল পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ২০১০ সাল পর্যন্ত অ্যাকটিভ স্যাটেলাইট হিসাবে কাজ করেছে SeaWiFS যা সমুদ্রের পানির রঙ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে সমুদ্রে প্ল্যাঙ্কটন এবং পুষ্টির পরিমাণ নির্ণয় করেছে। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত  TRMM নামক ওয়েদার স্যাটেলাইট ইকুয়েডরের আশেপাশের অঞ্চলের বৃষ্টি পর্যবেক্ষণ করেছে।

ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট মূলত জিপিএস সিস্টেমের জন্য ব্যবহার করা হয়। অনেকের ফোনেই জিপিএস সিস্টেম রয়েছে যার মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো স্থান খুঁজে বের করা সম্ভব।

স্যাটেলাইটের গঠন
স্যাটেলাইট অত্যন্ত দামি এবং জটিল একটি যন্ত্র। তবে স্যাটেলাইটের মূল কাজ খুব একটা জটিল নয়। স্যাটেলাইট পরিচালনার জন্য প্রয়োজন শক্তি, যা সোলার প্যানেলের মাধ্যমে স্যাটেলাইট সংগ্রহ করতে থাকে। পৃথিবী থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করা এবং পৃথিবীতে সিগন্যাল পাঠানোর জন্য প্রয়োজন সেন্ডার ও রিসিভার। মোটর এবং ইঞ্জিন ব্যবহার করে স্যাটেলাইট তার নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে।

১৯৬৮ সালে জার্মান ইঞ্জিনিয়ার হ্যানস স্যাসের দেওয়া প্যাটেন্টের ছবি এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অংশের বর্ণনা দেওয়া হলো-
বিজ্ঞানী হ্যানস স্যাসের প্যাটেন্ট
৪- সিগন্যাল সেন্ড এবং রিসিভ করার জন্য বড় প্যারাবোলিক ডিশ অ্যান্টেনা
৫- সিগন্যাল সেন্ড এবং রিসিভ করার জন্য ছোট প্যারাবোলিক ডিশ অ্যান্টেনা
৬- নিচে অবস্থিত চার সোলার প্যানেল বিশিষ্ট লোয়ার সোলার ব্যাটারি
৭- উপরে অবস্থিত চার বা ততোধিক সোলার প্যানেল বিশিষ্ট আপার সোলার ব্যাটারি
৮- স্যাটেলাইট তার কক্ষপথে আসার পর লোয়ার সোলার প্যানেল গুটিয়ে নিতে সাহায্য করে
৯- উপরের সোলার প্যানেল গুটিয়ে নিতে সাহায্য করে
১০- মূল স্যাটেলাইটের মটর

এছাড়া ১১, ১২, ১৫ ও ১৭ নাম্বারে ছোট ইঞ্জিন রয়েছে যা স্যাটেলাইটকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে থাকতে সাহায্য করে।

মহাশূন্য বলতে সাধারণত যা বুঝি তা পৃথিবী থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে শুরু হয়। পৃথিবী থেকে স্যাটেলাইটের দূরত্বের উপর নির্ভর করে স্যাটেলাইটকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায় – লো আর্থ ওরবিট (৩০০-২০০০ কি.মি উচ্চতায়), মিডিয়াম আর্থ ওরবিট (২০,০০০ কি.মি উপরে), জিওস্টেশনারি ওরবিট (প্রায় ৩৫,৭৮৬ কি.মি উচ্চতা) এবং হাই আর্থ ওরবিট (সর্বোচ্চ ৩৩০,০০০ কি.মি উচ্চতা)।

বঙ্গবন্ধু -১ স্যাটেলাইট হতে যাচ্ছে জিওস্টেশনারি ওরবিট স্যাটেলাইট। এই উচ্চতার উপগ্রহগুলো পৃথিবীর সাথে একই গতিতে চলমান। তাই পৃথিবী থেকে দেখে এই সকল স্যাটেলাইটকে স্থির বলে মনে হয়। বঙ্গবন্ধু -১ স্যাটেলাইট থেকে বাংলাদেশ বিভিন্ন রকমের সুবিধা পেতে পারবে।
আর্থিক সুবিধা-

বর্তমানে স্যাটেলাইট অপারেটর থেকে ব্যান্ডউইথ ভাড়া করে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট সংযোগের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে, যাতে বছরে প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। বিটিআরসির প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রকল্পটি সাত বছরের মধ্যে ব্রেক-ইভেন লেভেল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং নিয়ন্ত্রককে অন্যান্য দেশগুলিতে অতিরিক্ত ক্ষমতা বিক্রি করার অনুমতি দেবে। বঙ্গবন্ধু -১ এ সমস্ত দক্ষিণ এশিয়ার দেশসহ ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানসহ অন্যান্যদেরকে সেবা প্রদান করতে সক্ষম হবে যদি তার ফ্রিকোয়েন্সি যথাযথভাবে সমন্বিত হয়। ভারত, পাকিস্তানের নিজস্ব স্যাটেলাইট আছে এবং শ্রীলংকার নিজস্ব স্যাটেলাইটের পরিকল্পনা চলছে। বঙ্গবন্ধু -১ এর সার্ভিস নেপাল, ভুটান এবং মায়ানমারের মত দেশে দিয়ে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে বছরে ৫০ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করা সম্ভব হবে।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট মহাকাশের ১১৯.১ পুর্ব দ্রাঘিমায় উৎক্ষেপণ করা হবে। বাংলাদেশ সরকার এই বছরের প্রথম দিকে ২8 মিলিয়ন ডলারের রাশিয়ার স্যাটেলাইট কোম্পানির ইন্টারস্পুটনিক থেকে স্লট কিনেছে। ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী, স্যাটেলাইটটি ২০১৮ সালের জুন মাসে চালু করা হবে।

বিটিআরসির বিশেষজ্ঞদের মতে, উপগ্রহ আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থাকে উন্নত করতে এবং ভূমি ও সমুদ্রের প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধানে সাহায্য করবে। এই প্রকল্পে জড়িত একটি বিটিআরসি কর্মকর্তা বলেন, নেপাল ও ভুটানের মতো ল্যান্ডলকড দেশগুলি, যাদের কোন সাবমেরিন ক্যাবল নেই, তারা উপগ্রহগুলির মাধ্যমে টেলিকমিউনিকেশন বজায় রাখে। অর্থাৎ এই উপগ্রহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। বঙ্গবন্ধু -১ স্যাটেলাইটের আয়ুষ্কাল প্রায় ১৫ বছর।

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা –
বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের নতুন যুগের সূচনা হবে এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-রিসার্চ, ভিডিও কনফারেন্স, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করা সম্ভব হবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। বিশেষ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের মত দুর্যোগপ্রবণ দেশে প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। এমন প্রতিকূল পরিবেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।

বিটিআরসি এর সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের ডিজিটাল ডিভাইড বা পার্থক্য কমিয়ে আনতে পারবে এই স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ব্রডকাস্টিং এবং টেলিকমিউনিকেশন সুবিধা পৌঁছে দিতে পারবে। দেশে চালু হবে আধুনিক এবং লাভজনক সব সার্ভিস যেমন ডাইরেক্ট-টু-হোম সার্ভিস। এই স্যাটেলাইটের ফলে নতুন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে এবং নতুন চাকরির সুযোগও তৈরি হবে।

২০১৭ সালের মহান বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু -১ এর শুভ উদ্বোধন করা হবে। তবে স্যাটেলাইটের আনুষ্ঠানিক সেবা পেতে ২০১৮ সালের এপ্রিল-মে মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

প্প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন: ডিপার্টমেন্ট অব কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, সহযোগিতায়- মোঃ শাকিফ ফেরদৌস এবং খায়রুন নাহার


বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৭
জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।