ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

মোবাইলফোনের দাসে পরিণত নতুন প্রজন্ম

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৪ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৭
মোবাইলফোনের দাসে পরিণত নতুন প্রজন্ম মোবাইলফোনের দাসে পরিণত নতুন প্রজন্ম

সারা বিশ্বেই আজ কম-বেশি একই চিত্র। তরুণ প্রজন্মের হাতে হাতে চলে গেছে মোবাইল ফোন। টিনেজারদের মধ্যে এই হ্যান্ডহেল্ড ব্যবহারের ক্রেজ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

আর তা এতটাই মারাত্মক যে গবেষকরা তার নতুন নাম দিয়েছেন ‘মোবাইল ফোনের দাসত্ব’।  

বৃটেনে এ নিয়ে গবেষণা চালানোর পর বিশেষজ্ঞরা বিশেষ সতর্কতা জারি করেছেন।

ইউরোপের মধ্যে এই দেশটিতে টিনেজারদের নতুন নতুন গ্যাজেট ব্যবহারের প্রবনতা সবচেয়ে বেশি। ট্যাবলেট, স্মার্টফোন আর কম্পিউটারের ব্যবহার তাদের ক্রমেই শারীরিক ও মানসিকভাবে স্থুল করে তুলছে বলে রিপোর্টে জানিযেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।  

বৃটেনে মেয়েদের নিয়ে উদ্বেগটা সবচেয়ে বেশি। ৪২টি ইউরোপীয় দেশের মধ্যে স্কটল্যান্ডে ১১ থেকে ১৫ বছরের মেয়েদের গ্যাজেট ব্যবহারের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। ওয়েলশের মেয়েরা এক্ষেত্রে চতূর্থ আর ইংল্যান্ডের মেয়েরা সপ্তম অবস্থানে রয়েছে।  

ছেলেদের অবস্থাও একই রকম, তবে মেয়েদের চেয়ে সামান্য ভালো।

ইউরোপিয়ান কংগ্রেস অব অবিসিটি বুধবার পর্তুগালে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে গ্যাজেটগুলো ব্যবহারের কারণে টিনেজারদের মধ্যে হৃদরোগ, দুই ধরনের ডায়াবেটিস ও মেদে আক্রান্তের হার বেড়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডে প্রতি ৫ কিশোর-তরুণের মধ্যে মাত্র একজন সরকারের বিধি মেনে দিনে এক ঘণ্টা শরীর চর্চায় যাচ্ছে। আর মেয়েদের মধ্যে এ চিত্র আরও করুণ। তাদের মধ্যে স্কটল্যান্ডে ১৪ শতাংশ, ইংল্যান্ডে মাত্র ১২ শতাংশ এই শরীর চর্চায় যাচ্ছে।  

প্রযুক্তির ওই গ্যাজেটগুলোই তাদের মূল্যবান সময় ও স্বাস্থ্য নষ্ট করছে। গবেষকরা এজন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকেই দায়ী করেছেন।

ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল ওবিসিটি ফোরামের চেয়ারম্যান টম ফ্রাই এই সঙ্কটকে বয়ঃসন্ধিকালের দাসত্ব বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ওরা এসব গ্যাজেটের দাসে পরিণত হয়েছে।

ডব্লিউএইচও’র রিপোর্টে বলা হয়েছে, এতে টিনেজারদের মধ্যে এক ধরনের আলস্য তৈরি হচ্ছে। তাদের দৈনন্দিন জীবন হয়ে উঠছে স্রেফ কর্মহীন। ৪২টি দেশের ২ লাখ ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে গবেষণাটি চালিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

১১ বছর বয়স থেকেই এই আসক্তিতে ভুগতে থাকে ছেলে মেয়েরা। গবেষণায় দেখা গেছে ১১ বছর বয়সীরা দিনে অন্তত দুই ঘণ্টা কম্পিউটার, কিংবা অন্য কোনও গ্যাজেট নিয়ে থাকে।  

গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ড. জো ইঙ্কলে বলেছেন, সামাজিক মাধ্যমের উত্থান তরুণ প্রজন্মের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। যা ওদের জীবন ও স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত। এখন আমাদের এই স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে ওদের রক্ষা করতে হবে, আর সেটাই সময়ের বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
 
হু’র ড, ‍সুসানা জ্যাকব মনে করেন শৈশব আর তারুণ্যের এই ভয়াবহ সঙ্কট নিরসনে সরকারকেই কিছু একটা করতে হবে।
 
ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার রিসার্চ ফান্ডের সারাহ জেমসের মতে বসে থাকার কারণে শিশুদের শরীর মুটিয়ে যায়, তার ধারাবাহিকতায় তাদের মাঝে অন্তত ১১ ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।  

বাংলাদেশ সময় ১৬৪১ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৭
এমএমকে     
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।